ঢাকা : বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার নাইকো দুর্নীতি মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে করা রিট খারিজ করে হাইকোর্টের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
এর ফলে বিচারিক আদালতে এই মামলার কার্যক্রম চলতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
আজ প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বিভাগ বেঞ্চ এই আদেশ দেয়। আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী, সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও ব্যারিস্টার রাগীব রউফ চৌধুরী। অপরদিকে দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় বহাল রেখেছে। ফলে এ মামলার কার্যক্রম বিচারিক আদালতে চলতে আর কোনো বাধা নেই।
খালেদা জিয়ার আইনজীবী বদরুদ্দোজা বাদল বলেন, আপিল বিভাগের এই আদেশের বিরুদ্ধে রিভিউ করা হবে। মামলাটি কোন পর্যায়ে আছে জানতে চাইলে ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, বিচারিক আদালতে মামলার এখনও অভিযোগ গঠন হয়নি।
এর আগে গত ২১ নভেম্বর প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চে খালেদার আবেদনের ওপর শুনানি শেষ হয়। ওইদিনই আদালত আদেশের জন্য আজ ২৪ নভেম্বর দিন ধার্য্য করেছিলো।
হাইকোর্টে ২০১৫ সালের ১৮ জুন নাইকো মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে খালেদার করা রিট খারিজ হয়। হাইকোর্টের রায়ে সচল হওয়ার পর নাইকো দুর্নীতি মামলার বিচারিক কার্যক্রম ফের শুরু হয়েছে ঢাকার বিশেষ জজ-৯ আমিনুল ইসলামের আদালতে। গত বছর ৩০ নভেম্বর হাইকোর্টের আদেশে আত্মসমর্পণ করে জামিনও নিয়েছেন খালেদা জিয়া।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ৭ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেন খালেদা জিয়া। চলতি বছর ৯ অক্টোবর খালেদার করা আবেদনের ওপর শুনানির জন্য চেম্বার বিচারপতি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন।
মামলার বিবরণীতে জানা যায়, কানাডার কোম্পানি নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতিসাধন ও দুর্নীতির অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে দুদকের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তেজগাঁও থানায় মামলাটি করেন।
২০০৮ সালের ৫ মে এ মামলায় খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। যেখানে প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার রাষ্ট্রীয় ক্ষতির অভিযোগ আনা হয়। পরে নাইকো মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ ও নিম্ন আদালতে মামলার কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন খালেদা জিয়া। ২০০৮ সালের ১৫ জুলাই বিচারিক আদালতে মামলার কার্যক্রম স্থগিতের পাশাপাশি রুল দেন হাইকোর্ট। ওই সময় থেকে মামলাটির কার্যক্রম স্থগিত ছিল।
২০১৫ সালের শুরুতে মামলাটির কার্যক্রম আবার চালু করার উদ্যোগ নেয় দুদক। একই বছর ১৯ এপ্রিল রুল শুনানি শুরু হয়, ২৮ মে শেষ হয়। পরে আদালত ১৮ জুন খালেদার করা আবেদন খারিজ করে দেন।