দুর্নীতি ও অসদাচরণের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় নিম্ন আদালতের চারজন বিচারককে চাকরি থেকে বরখাস্তের অনুমোদন দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এরা হলেন, কুমিল্লার সাবেক নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা জজ) এস.এম আমিনুল ইসলাম, ঠাকুরগাঁওয়ের সাবেক জেলা জজ মো. রুহুল আমিন খোন্দকার, জামালপুরের সাবেক অতিরিক্ত জেলা জজ মো. সিরাজুল ইসলাম ও খুলনার সাবেক অতিরিক্ত জেলা জজ মঈনুল হক। বর্তমানে এরা সকলেই আইন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত রয়েছেন। বুধবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সুপ্রিম কোর্টের ফুলকোর্ট সভায় এই অনুমোদন দেওয়া হয়। দু’জন বিচারপতি ছাড়া হাইকোর্ট বিভাগের সকল বিচারপতি সভায় উপস্থিত ছিলেন। চার বিচারককে বরখাস্তের অনুমোদনের নথি গতকাল বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে আইন মন্ত্রণালয়ে পৌঁছেছে বলে জানা গেছে। এখন আইন মন্ত্রণালয় বরখাস্তের সরকারি আদেশ জারি করবে।
এদিকে ফুল কোর্ট সভায় নিম্ন আদালতের তিন জন বিচারককে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। এরা হলেন, মাগুরার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ ইসমাইল, মাদারীপুরের সাবেক চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বর্তমানে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের আইন কর্মকর্তা (অতিরিক্ত জেলা জজ) প্রশান্ত কুমার বিশ্বাস ও মাগুরার জেলা ও দায়রা জজ মো. রুস্তম আলী। এ ছাড়া দুর্নীতি ও অসদাচরণের অভিযোগ থেকে দুই বিচারককে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এরা হলেন কক্সবাজারের সাবেক চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বর্তমানে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা জজ সৈয়দ হুমায়ুন আজাদ ও ময়মনসিংহের জেলা জজ আদালতের অধীন ঈশ্বরগঞ্জ চৌকি আদালতের সাবেক সিনিয়র সহকারী জজ মোহাম্মদ কামাল খান।
বিচারকদের নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতি এবং অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়টি দেখভাল করে জিএ কমিটি। ওই কমিটির প্রধান হলেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। বরখাস্ত হওয়া ওই চার বিচারকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অসদাচরণের অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়েরের জন্য আইন মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছিলো সুপ্রিম কোর্ট। নির্দেশ মোতাবেক সংশ্লিষ্ট চার বিচারকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে তদন্ত করে সেই প্রতিবেদন জিএ কমিটির কাছে পাঠানো হয়। জিএ কমিটি ঐ বিচারকদের বরখাস্তের বিষয়টি ফুল কোর্ট সভায় অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করে। তদন্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে ফুল কোর্ট সভায় চার বিচারককে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
সূত্র জানিয়েছে, বিচারক হিসেবে কর্মরত থাকাকালে ঐ চার বিচারক বিভিন্ন সময়ে অজামিনযোগ্য মামলায় জামিন, আদালতে কর্মচারী নিয়োগসহ বিভিন্ন বিষয়ে দুর্নীতি ও অসদাচরণের আশ্রয় নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।