ঢাকা, এপ্রিল ২৭, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ২০:৩৮:৪৩

এ পাতার অন্যান্য সংবাদ

একীভূত হতে চাওয়া ব্যাংকের সম্পদের দাম যেভাবে নির্ধারণ করা হবে টেলিভিশন ও অনলাইন সাংবাদিকদের সুযোগ-সুবিধা প্রদানের দাবি বিএফইউজে’র দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নিয়ে বিএনপির মাথাব্যথার কারণ নেই : ওবায়দুল কাদের বিএনপি একটি রাজনৈতিক দৈত্যের দল : পররাষ্ট্রমন্ত্রী শান্তি বজায় রাখার জন্য যা-যা করার আমরা করবো: বান্দরবানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবারের ঈদ যাত্রাও স্বস্তিদায়ক হচ্ছে: সেতুমন্ত্রী কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট শিশুদের নতুন করে বাঁচার পথ খুলে দেয় : সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিস্ফোরণ: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫ আসন্ন পবিত্র রমজানে সরকারিভাবে বড় ইফতার পার্টি না করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর পুলিশকে জনগণের বন্ধু হয়ে নিঃস্বার্থ সেবা দেয়ার নির্দেশ রাষ্ট্রপতির

দারিদ্র্য দূরীকরণে দাতব্য কাজে মনোযোগী হওয়ার আহ্বান রাষ্ট্রপতির

| ২১ কার্তিক ১৪২৪ | Sunday, November 5, 2017

ঢাকা, ৫ নভেম্বর, ২০১৭ (বাসস) : রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সমাজের বিত্তশালী লোক ও কর্পোরেশন সংস্থাসমূহের প্রতি জাকাত, ওয়াকফ-এর মত হিতকর কাজে মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, এসব কার্যক্রম লোকদের দারিদ্র্য থেকে মুক্তিদানে সরকারের জন্য সহায়ক হবে।

রাষ্ট্রপতি গতকাল নগরীর একটি হোটেলে এক আন্তর্জাতিক কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেন, স্বল্প সুবিধা প্রাপ্ত লোকদের দারিদ্র্যের চক্র থেকে বের করে আনতে আমাদেরকে এগিয়ে আসতে হবে। দারিদ্র্য নির্মূলকরণ, সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে ওয়াকফ’র সম্পদ সরকারের কাজে সহায়ক হতে পারে।’
ইসলামিক রিসার্চ এন্ড ট্রেনিং ইনস্টিটিউট, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড (আইবিবিএল) ও সেন্টার ফর জাকাত ম্যানেজমেন্ট যৌথভাবে দু’দিনব্যাপী ‘রিভাইভাল অব ওয়াকফ ফর সোসিও ইকনোমিক ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক এই কর্মশালার আয়োজন করে। আইবিবিএল-এর চেয়ারম্যান আরাস্তা খান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
আবদুল হামিদ সুবিধাবঞ্চিত সম্প্রদায়ের সহায়তাকল্পে জাকাত ও ওয়াকফসহ বিভিন্ন ইসলামিক আর্থিক ব্যবস্থার নির্যাস বের করতে একটা পূর্ণ প্রচেষ্টা গ্রহণের জন্য বিশেষজ্ঞদের প্রতি আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রপতি কতিপয় মুসলিম দেশে ওয়াকফ সম্পদের সকল প্রাতিষ্ঠানিকীকরণে প্রসঙ্গ উল্লেখ করে সমাজের বৃহত্তর কল্যাণে ওয়াকফ সম্পদের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের লক্ষ্যে ওয়াকফকে সংস্কার ও আধুনিকীকরণের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন, ‘যদিও বাংলাদেশে ওয়াকফ সম্পদ নিজস্ব আইন ও নিয়ম দ্বারা পরিচালিত হয়, তবুও এর সংস্কার ও আধুনিকায়ন প্রয়োজন।’
ওয়াকফ ভূমিকা সম্পর্কে তিনি বলেন, এই দাতব্য প্রতিষ্ঠানটি রাজস্ব আয়ের অন্যতম বড় উৎস হিসেবে ভূমিকা পালন করে এবং শিক্ষার উন্নয়ন, স্বাস্থ্যসেবা, দারিদ্র্য দূরীকরণ ও সমাজের কল্যাণে মুসলিম ইতিহাসের স্বর্ণযুগে বিশাল অবদান রেখেছে।
রাষ্ট্রপতি ওয়াকফ সম্পত্তির উপর ভিত্তি করে বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, এতিমখানা ও মসজিদ গড়ে ওঠার উল্লেখ করে বলেন, এটি সমাজ ও সংস্কৃতির গভীরে ওয়াকফ’র অবস্থানের ইঙ্গিত বহন করে।
আবদুল হামিদ বলেন, কতিপয় ইসলামিক ব্যাংক ইতোমধ্যে সঞ্চয়ে ও স্থায়ী দানের নতুন খাত ক্যাশ ওয়াকফ চালু করেছে। তাছাড়া সেন্টার ফর জাকাত ম্যানেজমেন্ট (সিজেএম) জাকাত ও ওয়াকফ তহবিলের কার্যকর ব্যবহারের মাধ্যমে বিভিন্ন দারিদ্র্য দূরীকরণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।
তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি সমাজের প্রতি তাদের দায়িত্বশীলতার অংশ হিসেবে এ ধরনের প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে আরো ব্যাংক ও সংস্থা এগিয়ে আসবে।’
রাষ্ট্রপতি বলে, ওয়াকফ একটি বিরামহীন স্বেচ্ছাসেবী সেবামূলক ব্যবস্থা এবং এর লক্ষ্য হচ্ছে মসজিদ, এতিমখানা ও গোরস্থানের মতো সমাজে ব্যাপক সেবামূলক ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা, স্বাস্থ্যসেবা এবং জনগণের সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা।
তিনি বলেন, দরিদ্রদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ওয়াকফ’র সামর্থ্য রয়েছে এবং এর সুবিধা কেবল মুসলিমরা নয়, সকল ধর্মের পায়।
ভাষণের শুরুতে রাষ্ট্রপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান এবং স্বাধীনতা অর্জনে মহান আত্মত্যাগের জন্য তিনি লাখো শহীদের অম্লান স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণকে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যের প্রামাণ্যচিত্র হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করায় আমরা গর্ববোধ করি। বক্তব্যটি মেমরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্টারে অন্তর্ভুক্ত করার মহতী উদ্যোগের জন্য ইউনেস্কোকে ধন্যবাদ জানান।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, ইসলামিক গবেষণা এবং প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের সিনিয়র অর্থনীতিবিদ ড. খলিফা মোহাম্মদ আলী, যুক্তরাষ্ট্রের নিউ অর্লিন্স ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ড. কবির হোসেন অন্যান্যের মধ্যে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ, ব্রুনাই, ইন্দোনেশিয়া, সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, নিউজিল্যান্ড, নাইজেরিয়া, থাইল্যান্ড, যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রের গবেষক ও বিশেষজ্ঞরা কর্মশালায় অংশ নেন। আগামীকাল এ কর্মশালা শেষ হবে।
কর্মশালায় গবেষকরা ২৮টি গবেষণাপত্র উপস্থাপন করবেন।