ঢাকা, মে ৭, ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ১৩:০৭:৫৫

এ পাতার অন্যান্য সংবাদ

একীভূত হতে চাওয়া ব্যাংকের সম্পদের দাম যেভাবে নির্ধারণ করা হবে টেলিভিশন ও অনলাইন সাংবাদিকদের সুযোগ-সুবিধা প্রদানের দাবি বিএফইউজে’র দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নিয়ে বিএনপির মাথাব্যথার কারণ নেই : ওবায়দুল কাদের বিএনপি একটি রাজনৈতিক দৈত্যের দল : পররাষ্ট্রমন্ত্রী শান্তি বজায় রাখার জন্য যা-যা করার আমরা করবো: বান্দরবানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবারের ঈদ যাত্রাও স্বস্তিদায়ক হচ্ছে: সেতুমন্ত্রী কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট শিশুদের নতুন করে বাঁচার পথ খুলে দেয় : সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিস্ফোরণ: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫ আসন্ন পবিত্র রমজানে সরকারিভাবে বড় ইফতার পার্টি না করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর পুলিশকে জনগণের বন্ধু হয়ে নিঃস্বার্থ সেবা দেয়ার নির্দেশ রাষ্ট্রপতির

দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে ২০২০ সালের মধ্যে একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের আওতায় আনার পরিকল্পনা

| ১৭ আষাঢ় ১৪২৪ | Saturday, July 1, 2017

ঢাকা : গত কয়েক বছর আগের স্মৃতি এখন বুলবুলি বেগমের কাছে শুধুই এক দীর্ঘ দুঃস্বপ্ন। হঠাৎ স্বামীর মৃত্যুর পর কিভাবে সংসার চালাবেন তাই নিয়ে যখন দিশেহারা অবস্থা তখনই সরকারের ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্পের মাধ্যমে তার জীবনে স্বস্তি ফিরে আসে। দুই মেয়ে এক ছেলেকে নিয়ে তিনি টিকে থাকার পথ খুঁজে পান।
আব্দুর রাজ্জাকের স্ত্রী বুলবুলি বেগমের সম্বল শুধু স্বামীর রেখে যাওয়া সামান্য জমি। এ থেকে যে ফসল হয় তাতে মাত্র তিন মাসের খোরাক হয়। বছরের বাকি সময়টা কেমন করে চলবে তার। তাই সামান্য জমির ভরসায় না থেকে দিনমজুর হিসেবে কাজ শুরু করেন। এরই মধ্যে ২০১১ সালে বগুড়ার দুপচাচিয়ার খোলাশ গ্রামে ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। বুলবুলি বেগম যুক্ত হন এই প্রকল্পে। এখন তার পেছন ফিরে তাকানোর অবকাশ নেই। একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প বদলে দিয়েছে তার ভাগ্য।
বুলবুলি বেগম খোলাশ গ্রাম উন্নয়ন সমিতির সদস্য হয়ে এই প্রকল্প থেকে ১০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে পুতুলের ব্যবসা শুরু করেন। নিজ বাড়িতে পুতুল কারাখানা থেকে এখন বুলবুলি বেগমের মাসিক আয় ৭০০০ থেকে ৮০০০ টাকা। এর মধ্যে তিনি তার দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন এবং ছেলেকে সাথে নিয়ে নিজের পুতুল ব্যবসাও চালিয়ে যাচ্ছেন।
শুধু বুলবুলি বেগম নন, এই প্রকল্পের মাধ্যমে তার মতো অনেক দরিদ্রই আজ নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছেন। সমাজে সম্মানজনকভাবে বেঁচে থাকার পথ খুঁজে পেয়েছেন।
একটি বাড়ী,একটি খামার প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আকবর হোসেন জানান, সরকার দেশের সকল দরিদ্র জনগোষ্ঠিকে স্বাভাবিক ও মানসম্মত জীবন যাপনের সুযোগ করে দিতে ২০২০ সালের মধ্যে দেশব্যাপী এক লাখ গ্রাম উন্নয়ন সমিতি গঠন করবে।
প্রকল্প পরিচালক বলেন, প্রত্যেক এলাকায় দরিদ্র জনগোষ্ঠী চিহ্নিত করে তাদের গ্রাম উন্নয়ন সমিতিতে অন্তর্ভূক্ত করা হয়। যার মধ্যে ৪০ জন মহিলা ও ২০ জন পুরুষ সদস্য থাকে। তাদের নিজস্ব তহবিল সৃষ্টির লক্ষ্যে সদস্যগণ সমিতিতে মাসিক ২০০ টাকা সঞ্চয় করেন। সরকার প্রকল্পের মাধ্যমে সদস্য সঞ্চয়ের বিপরীতে সমপরিমাণ উৎসাহ বোনাস প্রদান করে।
তিনি বলেন, সারাদেশে এক লাখ সমিতির মাধ্যমে ৬০ লাখ পরিবারের ৩ কোটি মানুষকে প্রকল্প সুবিধা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। তিনি আরো বলেন, একটি বাড়ী,একটি খামার প্রকল্পের মূল দর্শন হল- ক্ষুদ্র ঋণের পরিবর্তে ক্ষুদ্র সঞ্চয়ের মাধ্যমে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য স্থায়ী তহবিল গঠন করে পুঁজির অভাব দূর করা এবং পাশাপাশি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা।
দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে আয়বর্ধক কর্মকান্ডে সম্পৃক্তকরণের মাধ্যমে দারিদ্র বিমোচনের লক্ষ্য নিয়ে ২০০৯ সালে ‘একটি বাড়ী, একটি খামার’ প্রকল্প যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে এই প্রকল্পের আওতায় উপকারভোগির সংখ্যা দেড় কোটির ওপরে।
তিনি বলেন, বর্তমানে দেশের ৪ হাজার ৫ শ’ ৫০টি ইউনিয়নের সব ওয়ার্ডে সমিতি আছে। সমিতির সংখ্যা প্রায় ৫৬ হাজার। এর সাথে ৩০ লাখ দরিদ্র পরিবার সরাসরি যুক্ত। ফলে প্রতি পরিবারে গড়পড়তায় ৫ জন সদস্য থাকলে দেড় কোটি মানুষ এই প্রকল্প থেকে উপকৃত হচ্ছেন।
সমিতি গঠনের মাধ্যমে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর তহবিল গঠনের প্রক্রিয়ায় সরকারের দেয়া বোনাসসহ সদস্যদের বর্তমান স্থায়ী তহবিলের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩২’ শ কোটি টাকা।
আকবর হোসেন বলেন, সদস্যরা ঋণ নিয়ে সব্জি আবাদ, মাছের খামার, হাঁস-মুরগী বা পশু পালন কিংবা ক্ষুদ্র ব্যবসার মাধ্যমে নিজেরা স্বাবলম্বী হচ্ছেন। প্রকল্পের আওতায় সদস্যদের ঋণ প্রদানের পাশাপাশি কর্মসৃজনমূলক প্রশিক্ষণও দেয়া হয়।