ঢাকা মহানগর পুলিশের অপরাধ বিভাগের সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা ছাড়া সাদা পোশাকে (সিভিল টিম) বের হওয়া যাবে না বলে সতর্ক করেছেন কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া। এছাড়া আরও বেশ কয়েকটি নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে ডিএমপির ঊর্ধ্বতন ৮ কর্মকর্তাকে একটি করে অপরাধ বিভাগ মনিটরিংয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তারা সংশ্লিষ্ট থানায় ওই নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়নে কাজ করবেন।
কমিশনারের নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে- অপরাধ নিয়ন্ত্রণে ডিএমপির অপরাধ বিভাগের সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা ছাড়া থানা থেকে সিভিল টিম বের করা যাবে না। প্রয়োজনে উপকমিশনারের (ডিসি) নির্দেশনা নিয়ে সাদা পোশাকে অভিযান করা যাবে। নির্দেশনায় বলা হয়, পুলিশের কিছু সদস্য অভ্যাসগতভাবে জনসাধারণের সঙ্গে হয়রানিমূলক আচরণ করেন। এ ধরনের সব হয়রানি ও জুলুম বন্ধ করতে হবে। পেন্ডিং মামলায় কাউকে শ্যোন অ্যারেস্ট করতে হলে সংশ্লিষ্ট জোনের সহকারী কমিশনারের (এসি) অনুমতি নিতে হবে। মাদক বা অস্ত্র দিয়ে উদ্দেশ্যমূলকভাবে নিরপরাধ লোকের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া বন্ধ করতে হবে। মোবাইল টিমের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করতে হবে। কোনো আসামি আটকের পর থানায় না নিয়ে গাড়িতে রেখে তদবির কিংবা টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেয়ার দেনদরবার বন্ধ করতে হবে। একই কর্মকর্তাকে প্রতিদিন একই ধরনের ডিউটি দেয়া যাবে না। মামলার তদন্ত অহেতুক মুলতবি না রেখে দ্রুত নিষ্পত্তি করতে হবে। ১৭ অক্টোবর ডিএমপির ঊর্ধ্বতন ৮ কর্মকর্তাকে ৮টি অপরাধ বিভাগ মনিটরিংয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। ওই সময় তাদের নির্দেশনাগুলো জানানো হয়। এরমধ্যে রমনা বিভাগে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (প্রশাসন) মো. শাহাব উদ্দীন কোরেশী, মতিঝিল বিভাগে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (লজিস্টিকস, ফিন্যান্স অ্যান্ড প্রকিউরমেন্ট) জামিল আহমদ, ওয়ারী বিভাগে যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (লজিস্টিকস) ওয়াইএম বেলালুর রহমান, উত্তরা বিভাগে যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (অপারেশনস) মীর রেজাউল আলম, লালবাগ বিভাগে যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) কৃষ্ণপদ রায়, তেজগাঁও বিভাগে যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (সদর দফতর) মো. আনোয়ার হোসেন, মিরপুর বিভাগে যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (পিওএম) ইমতিয়াজ আহমেদ ও গুলশান বিভাগে যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (প্রটেকশন অ্যান্ড ডিপ্লোম্যাটিক সিকিউরিটি) মো. আতাউল কিবরিয়াকে সংশ্লিষ্ট থানা মনিটরিংয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়।
ডিএমপি কমিশনার জঙ্গি দমনে নিরলসভাবে কাজ করার নির্দেশনা দিয়ে জানান, জঙ্গি দমনে গৃহীত কার্যক্রম বাস্তবায়নে কোনোরূপ শৈথিল্য প্রদর্শন করা যাবে না। নিয়মিত ব্লক রেইড, তল্লাশি ও চেকপোস্টের কাজ অব্যাহত রাখতে হবে। উঠান বৈঠক ও জনসংযোগের মাধ্যমে জনগণকে সচেতন করতে হবে। নিখোঁজ যুবকদের তালিকা করে অনুসন্ধান ও তদারকি, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, ব্যক্তি এবং বিদেশীদের নিরাপত্তায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। এছাড়া বিট পুলিশিং কার্যক্রম জোরদার, থানার আলামত ব্যবস্থাপনা ও থানার পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে থানার যন্ত্রপাতি ব্যবহারে সতর্ক থাকতেও বলা হয়েছে।এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (প্রশাসন) মো. শাহাব উদ্দীন কোরেশী শনিবার যুগান্তরকে বলেন, ডিএমপি কমিশনার আমাদের যে নির্দেশনা দিয়েছেন সেই আলোকে আমরা সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রত্যেকটি থানায় অফিসার ইনচার্জসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। তাদের ডিএমপি কমিশনারের দেয়া প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জানিয়ে দিয়েছে। তা বাস্তবায়িত হচ্ছে কিনা, সেটিও মনিটরিংয়ে রাখছি।