সংসদ ভবন: প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারি দলের সদস্যরা বলেন, জাতীয় উন্নয়ন নিশ্চিত করতে আরো বড় অংকের বাজেট দেয়ার প্রয়োজন ছিল।
তারা বলেন, এই বাজেট উচ্চাভিলাষী তবে উচ্চাভিলাষ না থাকলে উন্নয়ন সম্ভব নয়। এ বাজেট বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাবে।
তারা বলেন, এ বাজেট বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশ সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হওয়ার পথে আরো এক ধাপ এগিয়ে যাবে।
আজ সকাল ১০টা ৪৮ মিনিটে ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়ার সভাপতিত্বে অধিবেশনের শুরুতে মন্ত্রীদের জন্য প্রশ্ন-জিজ্ঞাসা-উত্তর টেবিলে উপস্থাপন শেষে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনা শুরু হয়।
গত ২ জুন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ২০১৬-১৭ অর্থবছরের জন্য ৩ লাখ ৪০ হাজার ৬০৫ কোটি টাকার বাজেট পেশ করেন।
২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেট আলোচনার ৮ম দিনে আজ সরকারি দলের আবদুর রউফ, মো. আফছারুল আমীন, সাধন চন্দ্র মজুমদার, আবদুল মজিদ খান, ডা. এনামুর রহমান, তালুকদার মো. ইউনুস, মো. আবুল কালাম, রমেশ চন্দ্র সেন, সেলিনা জাহান লিটা, বেগম কামরুল লায়লা জলি, সেলিনা বেগম, জাতীয় পার্টির নুরুল ইসলাম তালুকদার, শাহানারা বেগম, জাসদের নাজমুল হক প্রধান ও স্বতন্ত্র সদস্য রুস্তম আলী ফরাজী অংশ নেন।
বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারি দলের সদস্যরা বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট গরীব মারার নয়, এই বাজেট গরীব রক্ষার বাজেট।
তারা বলেন, অনেকে এই বাজেটকে উচ্চাভিলাষী বলে অবহিত করেন। কিন্তু বিগত ৭ বছরের বাজেট পর্যালোচনা করলে দেখা যায় এই বাজেট মোটেও উচ্চাভিলাষী নয়।
বিগত কয়েক বছরে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার ব্যাপক উন্নতি সাধিত হয়েছে উল্লেখ করে তারা বলেন, দেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক অবস্থারও অনেক উন্নয়ন ঘটেছে। দারিদ্র্যের হার কমে এখন ১২ দশমিক ১ শতাংশ, জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমেছে, মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে, মাথাপিছু আয় বেড়েছে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ অনেক বেড়েছে, মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৪ শতাংশ থেকে কমে বর্তমানে ৬ শতাংশে উপনীত হয়েছে, খাদ্য উৎপাদন বেড়ে দেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে।
তারা বলেন, ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগ কিছুটা কমলেও সরকারি বিনিয়োগ অনেক বেড়েছে। দেশের ৪৮ লাখ ৪০ হাজার শিক্ষার্থী উপবৃত্তি পাচ্ছে।
সরকারি দলের সদস্যরা প্রস্তাবিত বাজেটে তাঁত শিল্পে আরোপিত কর প্রত্যাহারের দাবি জানান।
আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির সদস্যরা বলেন, অর্থমন্ত্রী বলেছেন প্রস্তাবিত বাজেট একটি উচ্চাভিলাষী বাজেট। এই উচ্চাভিলাষকে বিরোধীদল সমর্থন করে। কারণ উচ্চাকাক্সক্ষা না থাকলে কোন জাতি উন্নতি করতে পারে না।
কৃষি খাতে ভর্তুকি হ্রাসের সমালোচনা করে তারা বলেন, কৃষি খাতে ভর্তুকি কমানো সঠিক হয়নি। কারণ একটি দেশকে খাদ্যে সমৃদ্ধশালী করতে হলে অবশ্যই কৃষিতে ভর্তুকি বাড়তে হবে। তারা বলেন, বাজেটে দারিদ্র্য বিমোচনের কোন দিক নির্দেশনা নেই।
তারা নন-এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে অবিলম্বে এমপিওভুক্ত করার দাবি জানান। শিক্ষায় আরো বাজেট বাড়িয়ে অবসর ভাতা প্রাপ্তির হয়রানি থেকে শিক্ষকদের রক্ষা করারও দাবি জানান।
তারা নিম্নমানের সিগারেটের ওপর আরো অধিক হারে কর আরোপ, মেডিটেশনের উপর কর প্রত্যাহারের দাবি জানান।
আর্থিক প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতি হয়েছে এবং অনেক টাকা দেশের বাইরে পাচার হয়েছে উল্লেখ করে তারা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর শৃংখলা ফিরিয়ে আনার দাবি জানান।
বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে স্বতন্ত্র সদস্যরা বাজেটে ভর্তুকি বাড়ানো এবং কৃষি যন্ত্রপাতি আমদানিতে কর প্রত্যাহারের প্রস্তাব করেন।
তারা বলেন, গার্মেন্টস শিল্পের উৎস কর থেকে অর্জিত অর্থ যাতে শ্রমিকের কল্যাণে ব্যয় হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। তারা স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি জানান।