নিহত দীপন ও হত্যাকাণ্ডে জড়িতের অভিযোগে গ্রেফতার মইনুল হাসান শামীম
ব্লগার ও প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গ্রেফতার মইনুল হাসান শামীম ওরফে সিফাত ওরফে নাসির ওরফে ইমরান নামে এক জঙ্গি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে।
আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (বর্তমানে আনসার আল ইসলাম) এই সদস্য রোববার ঢাকার মহানগর হাকিম আহসান হাবীবের আদালতে জবানবন্দিতে দীপন হত্যাকাণ্ডের পুরো পরিকল্পনা, আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সাংগঠনিক কার্যক্রম, প্রশিক্ষণসহ বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছে।
একই সঙ্গে হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়া সহযোগীদের নামসহ আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের অস্ত্র চালনার প্রশিক্ষক ও মূল হোতা সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত মেজর জিয়ার নামও বলেছে। গত ২৩ আগস্ট সিফাতকে টঙ্গির চেরাগ আলী এলাকা থেকে গ্রেফতারের পর ৬ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের উপ-কমিশনার মাশরুক খালেদ যুগান্তরকে বলেন, ওই আসামি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। তার কাছে প্রাপ্ত তথ্যগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি যারা এখনও গ্রেফতার হয়নি তাদের গ্রেফতারে অভিযান চালানো হচ্ছে।
আদালত সূত্র জানায়, স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে সিফাত বলেছে, সেলিম ওরফে হাদী ভাই নামে একজন আমাদের বলে শাহবাগে আজিজ সুপার মার্কেটে প্রকাশক দীপন ও লালমাটিয়ার শুদ্ধস্বর প্রকাশক টুটুলকে হত্যা করতে হবে। সেই অনুযায়ী আমরা প্রকাশক দীপন ও টুটুলকে হত্যা করার প্রস্তুতি নিতে থাকি। তখন ওই দুটি কাজের জন্য মারকায (ভাড়া করা মেস) ছিল টঙ্গির বর্ণমালা রোডে। সেখানে ছিল আকাশ, আলম, রাফি, তৈয়ব, রায়হান ওরফে রফিক ও শিহাব। আমাদের কাছ থেকে সুজন ওরফে সামাদ টঙ্গির বর্ণমালা রোডের মারকাযে চলে যায়। ঐ মারকাযে প্রশিক্ষণের দায়িত্বে ছিল সুজন ওরফে সামাদ। আমি দুই-তিন দিন ঐ মারকাযে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে জানতে পারি, সেলিম ভাই মারকাযে এসে প্রশিক্ষণ দিত, তদারকি করত এবং টার্গেটের ছবি ও অপরাধ দেখাত এবং হত্যা করার নির্দেশ দিত।
দীপন ও টুটুলদের হত্যার ২০ দিন আগে একদিন সেলিম ভাই আমাদের মারকাযে নিয়ে আসে এবং আমাদের বলে দীপন ও টুটুল হত্যার কাজ শিগগিরই করতে হবে। সে আরও বলে, দীপনকে হত্যা করার আগের ৭ দিনের মধ্যে আমি নিজে ২ দিন আজিজ সুপার মার্কেটে গিয়ে ঘটনাস্থল ও আশপাশের এলাকা রেকি করি। একদিন আকাশকে এবং অন্য দিন আসাদকে সঙ্গে নিয়ে আমি ঐ এলাকায় রেকি করি। সেলিম ভাইয়ের নির্দেশ মতো আমি নিয়মিত মারকাযের রিপোর্ট দিতাম।
প্রকাশক দীপনকে হত্যার জন্য ৫টি চাপাতি সেলিম ভাই তৈয়বের মাধ্যমে মহাখালী মারকাযে আমাদের নিকট পাঠায়। পিস্তল ও গুলি সেলিম ভাই নিজে মারকাযে এসে দিয়ে যায়।