ঢাকা, মে ৯, ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ০৬:২০:৪৩

এ পাতার অন্যান্য সংবাদ

একীভূত হতে চাওয়া ব্যাংকের সম্পদের দাম যেভাবে নির্ধারণ করা হবে টেলিভিশন ও অনলাইন সাংবাদিকদের সুযোগ-সুবিধা প্রদানের দাবি বিএফইউজে’র দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নিয়ে বিএনপির মাথাব্যথার কারণ নেই : ওবায়দুল কাদের বিএনপি একটি রাজনৈতিক দৈত্যের দল : পররাষ্ট্রমন্ত্রী শান্তি বজায় রাখার জন্য যা-যা করার আমরা করবো: বান্দরবানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবারের ঈদ যাত্রাও স্বস্তিদায়ক হচ্ছে: সেতুমন্ত্রী কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট শিশুদের নতুন করে বাঁচার পথ খুলে দেয় : সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিস্ফোরণ: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫ আসন্ন পবিত্র রমজানে সরকারিভাবে বড় ইফতার পার্টি না করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর পুলিশকে জনগণের বন্ধু হয়ে নিঃস্বার্থ সেবা দেয়ার নির্দেশ রাষ্ট্রপতির

জঙ্গি প্রশিক্ষণ নিতে ২০০ বাংলাদেশি যুবক মধ্যপ্রাচ্যে!

| ২৩ আষাঢ় ১৪২৩ | Thursday, July 7, 2016

ঢাকা: অন্তত দেড়শ’ থেকে দুইশ’ ‘নিখোঁজ’ বাংলাদেশি যুবক এখন জঙ্গি সংঠনের ‘শিকার’ হয়ে মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থান করছে।

ডয়চে ভেলেকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন।

ডয়চে ভেলের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘আমরা জানি না আমাদের গ্রাম ও শহর থেকে কত সংখ্যক যুবক নিখোঁজ হয়েছে। তবে পুলিশের কাছে অন্তত অর্ধশত অভিযোগ আছে৷ এর বাইরেও অনেক পরিবার নানা ভয়ে পুলিশের কাছে যায়নি। তাদের হিসাব আমরা জানি না।’

 

সাখাওয়াত হোসেন আরো বলেন, ‘আমার ব্যক্তিগত ধারণা, এ সংখ্যাটা দেড় থেকে দু’। তাদের একটি বড় অংশই মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে রয়েছে৷ এটা আমাদের জন্য খুবই উদ্বেগজনক।’

বৈশ্বিক ঘটনাবলী ও তার পরিপ্রেক্ষিতে এ সব ঘটনার গুরুত্ব উপলব্ধির কথা উল্লেখ করে সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা বলেন, ‘এখন যে বিশ্ব পরিস্থিতি তাতে এখানে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর সংশ্লিষ্টতা অস্বীকারের কোনো উপায় নেই৷ আপনি যতই এগুলো অস্বীকার করবেন, তাতে তাদের ততই সুযোগ করে দেবেন।’

আইএস বা আল-কায়েদা আছে কি নেই এ বিতর্ক নিয়ে এ নিরাপত্তা বিশ্লেষক বলেন, ‘আমি দেখতে পাচ্ছি, এখানে আমার সন্তানের ওপর তাদের মতাদর্শ কাজ করছে৷ তাদের কেউ কিন্তু সিরিয়া বা ইরাক থেকে আসেনি।’

তিনি বলেন, গুলশানে যে হামলা হলো, সেখানে সন্ত্রাসীরা জানত, তারা কেউ জীবিত ফিরে যাবে না। ফলে তাদের সঙ্গে আলোচনা বা সমঝোতার ব্যাপার নেই। তারা সমঝোতা করতে আসেনি৷ তারা হত্যা করতে এসেছে এবং সারা দুনিয়ায় এটার প্রচার চেয়েছে।

মধ্যবিত্ত বা উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তানরা কেন এ পথে যাচ্ছে সেটাও খতিয়ে দেখা উচিত বলে মনে করেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন।

এর আগে গুলশানের হামলায় নিহত ‘জঙ্গি’ রেহান ইমতিয়াজের বাবা ইমতিয়াজ আহমেদ বাবুল যুক্তরাষ্ট্রের এক পত্রিকাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, তার মতো সমাজের উচ্চবিত্ত বহু পরিবারের সন্তানই এখন নিখোঁজ রয়েছে৷ নিজের সন্তানের খোঁজ করতে গিয়ে তিনি এ খবর জানতে পেরেছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।

এতদিন পর পরিস্থিতি উপলব্ধি করতে পেরে র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজির আহমেদ কোনো পরিবারের সন্তান নিখোঁজ হলে সঙ্গে সঙ্গেই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানোর পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেন, অভিযোগ করা হলে পুলিশ এবং র‌্যাব তাদের খুঁজে বের করবে।

একইসঙ্গে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে বা কোনো এলাকায় জঙ্গি তৎপরতার কথা জানা থাকলে সেটিও জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন র‌্যাবের মহাপরিচালক।

র‌্যাবের ইন্টিলিজেন্স উইংয়ের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবুল কালাম আজাদ বলেছেন, নিখোঁজ তরুণদের অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে৷ তাদের মধ্যে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রয়েছে৷ গুলশান হামলায় নিহত জঙ্গি রোহান ইমতিয়াজ, নিব্রাস ইসলাম ও মীর সাবিহ মোবাশ্বের ও তাসিন রওনক আন্দালিব ও তাদের বাকি সঙ্গীরা ৭/৮ মাস আগে স্বেচ্ছায় নিখোঁজ ছিল।

দুটি শীর্ষ গোয়েন্দা সংস্থা তদন্ত করে দেখেছে, গত দেড় বছরে উচ্চবিত্ত পরিবারের শতাধিক তরুণ স্বেচ্ছায় নিখোঁজ হয়। কেউ কেউ তাদের পিতা-মাতাদের এসএমএস বা টেলিফোনে বলেছে, ‘আমার আশা আর কর না৷ তোমাদের সাথে পরকালে দেখা হবে। নিখোঁজ সন্তানদের জন্য ব্যাকুল পিতা-মাতা ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে বলেছেন, বাবা তুমি ফিরে এসো৷ উত্তরে সন্তান জানিয়ে দেয়, আমি যেই রাস্তায় এসেছি এখান থেকে ফেরার কোনো সুযোগ নেই।’

সূত্র:  ডয়চে ভেলে