ঢাকা, মে ৫, ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ১২:০৫:৩৬

এ পাতার অন্যান্য সংবাদ

একীভূত হতে চাওয়া ব্যাংকের সম্পদের দাম যেভাবে নির্ধারণ করা হবে টেলিভিশন ও অনলাইন সাংবাদিকদের সুযোগ-সুবিধা প্রদানের দাবি বিএফইউজে’র দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নিয়ে বিএনপির মাথাব্যথার কারণ নেই : ওবায়দুল কাদের বিএনপি একটি রাজনৈতিক দৈত্যের দল : পররাষ্ট্রমন্ত্রী শান্তি বজায় রাখার জন্য যা-যা করার আমরা করবো: বান্দরবানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবারের ঈদ যাত্রাও স্বস্তিদায়ক হচ্ছে: সেতুমন্ত্রী কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট শিশুদের নতুন করে বাঁচার পথ খুলে দেয় : সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিস্ফোরণ: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫ আসন্ন পবিত্র রমজানে সরকারিভাবে বড় ইফতার পার্টি না করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর পুলিশকে জনগণের বন্ধু হয়ে নিঃস্বার্থ সেবা দেয়ার নির্দেশ রাষ্ট্রপতির

জঙ্গিবাদ নির্মূলে পুলিশের শপথ

| ২০ আষাঢ় ১৪২৩ | Monday, July 4, 2016

যে কোনো মূল্যে বাংলাদেশ থেকে জঙ্গিবাদ নির্মূলের শপথ নিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তারা। হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তারা বলেছেন, গুলশান ঘটনা থেকে জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের শিক্ষা নিতে হবে যে, এ দেশে সন্ত্রাস করে রক্ষা পাওয়া যাবে না। ভবিষ্যতে এ ধরনের কর্মকাণ্ড হলে পরিণতি হবে ভয়াবহ।

 

গুলশানে হলি আর্টিসান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলায় নিহত দুই পুলিশ কর্মকর্তা এসি রবিউল করিম ও ওসি সালাহউদ্দিন খানের স্মরণে শোকসভা করে পুলিশ। সোমবার দুপুরে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স অডিটরিয়ামে এ শোকসভা হয়। এতে বিভীষিকাময় সেই রাতে প্রাথমিক অভিযান ও দুই পুলিশ কর্মকর্তার বীরত্বের বিবরণ উঠে আসে পুলিশ কর্মকর্তাদের মুখে। পুলিশের একজন উপপরিদর্শকের (এসআই) প্রাথমিক তৎপরতায় জঙ্গিরা পালাতে পারেনি বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তারা।

তারা বলেছেন, দুই পুলিশ কর্মকর্তার প্রাণের বিনিময় সেদিন জঙ্গিদের পালিয়ে যাওয়া রোধ করা সম্ভব হয়েছে। পৃথিবীতে এ ধরনের যত জঙ্গি হামলায় জিম্মি সংকট হয়েছে, তার থেকে গুলশানে সবচেয়ে দ্রুততম সময়ে অ্যাকশনে যাওয়া সম্ভব হয়েছে। ওই ঘটনায় নিহত ১৭ বিদেশিসহ হতাহত সবার প্রতি সমবেদনাও জানান পুলিশ কর্মকর্তারা।

শোকসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক প্রতিজ্ঞা করে বলেন, সহকর্মীদের রক্তের ঋণ শোধ করতে বাংলাদেশ থেকে জঙ্গিবাদ নির্মূল করা হবেই। গুলশানের ঘটনায় পুলিশ শোকাহত হলেও নৈতিক মনোবল হারায়নি। জঙ্গিবাদ নির্মূলে নিজের বাহিনীর সদস্যদের পেশাদারিত্ব আরও শাণিত করার আহ্বান জানান তিনি।

সেই রাতে হাসপাতালে তার সামনেই দুই সহকর্মী মারা যান জানিয়ে অঝোরে কাঁদতে থাকেন এ কে এম শহীদুল হক। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আহতদের দ্রুত সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সে প্রস্তুতির মধ্যেই রবিউল ও সালাহউদ্দিন মারা যান। আইজিপি নিজের পক্ষ থেকে নিহত দুই পুলিশ কর্মকর্তার পরিবারকে ২০ লাখ টাকা করে দেওয়ার ঘোষাণা দিয়ে বলেন, তারা যাতে সব ধরনের সরকারি সুবিধা পায় সে চেষ্টাও করা হবে।

একই অনুষ্ঠানে র‌্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ জঙ্গিবাদে বিশ্বাসীদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, তারা ফিরে এলে আমরা পুনর্বাসন করব। আর ভবিষ্যতে এ ধরনের নৃশংসতা দেখানোর চেষ্টা হলে পরিণতি আরও ভয়াবহ হবে। র‌্যাবের ডিজি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জিম্মি সংকটের কথা জানিয়ে বলেন, এমন ঘটনা মোকাবেলায় দুই থেকে তিন-চার দিন সময় লাগে। সেটা এদেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী মাত্র ১১ ঘণ্টায় করেছে। তিনি বলেন, জঙ্গিবাদ একটি বৈশ্বিক সমস্যা। পৃথিবীর কোনো দেশ এ থেকে মুক্ত নয়।

ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, পুলিশের টার্গেট ছিল, যাতে হামলাকারীরা পালাতে না পারে। এজন্য পুলিশ সদস্যরা কাউন্টার গুলি করতে থাকে। পালানোর পথগুলো ঘিরে ফেলে। এভাবে শুরুতেই এক বিদেশি, একজন সাবেক সেনা কর্মকর্তাসহ আটজনকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করে আনা সম্ভব হয়।

পুলিশের গুলশান বিভাগের ডিসি মুশতাক আহমেদ বলেন, টহল টিমের সদস্য এসআই ফারুকের প্রাথমিক দক্ষতায় জঙ্গিরা পালাতে পারেনি। তিনি টহল টিমের কয়েকজন কনস্টেবল নিয়ে প্রথমে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। এরপর বেতারবার্তা পেয়ে পুলিশের আরও সদস্য ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে জঙ্গিদের পালানোর পথগুলো বন্ধ করে দেন।

শোকসভায় রবিউলের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তার ব্যাচমেট মিশুক চাকমা মিতু গুলশান-২ নম্বরের ৭৯ নম্বর সড়কটি নিহত দুই পুলিশ কর্মকর্তার নামে নামকরণ করার দাবি জানান।

ওসি সালাহউদ্দিনের বিষয়ে স্মৃতিচারণ করেন তার বন্ধু উত্তরা-পশ্চিম থানার ওসি আলী হোসেন। তিনি বলেন, নিহত দুই পুলিশের রক্ত ছুঁয়ে আমরা শপথ নিয়েছি, দেশ থেকে জঙ্গিবাদ নির্মূল করবই। তিনি সহকর্মীদের এমন আত্মদানে নিজেরা আরও বলীয়ান হয়েছেন বলেও জানান।

শোকসভায় অতিরিক্ত আইজিপি মুখলেসুর রহমান, এসবি প্রধান জাবেদ পাটোয়ারী ও ডিবির যুগ্ম কমিশনার আব্দুল বাতেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।