ঢাকা, মে ৬, ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ২২:৪১:২৭

এ পাতার অন্যান্য সংবাদ

একীভূত হতে চাওয়া ব্যাংকের সম্পদের দাম যেভাবে নির্ধারণ করা হবে টেলিভিশন ও অনলাইন সাংবাদিকদের সুযোগ-সুবিধা প্রদানের দাবি বিএফইউজে’র দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নিয়ে বিএনপির মাথাব্যথার কারণ নেই : ওবায়দুল কাদের বিএনপি একটি রাজনৈতিক দৈত্যের দল : পররাষ্ট্রমন্ত্রী শান্তি বজায় রাখার জন্য যা-যা করার আমরা করবো: বান্দরবানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবারের ঈদ যাত্রাও স্বস্তিদায়ক হচ্ছে: সেতুমন্ত্রী কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট শিশুদের নতুন করে বাঁচার পথ খুলে দেয় : সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিস্ফোরণ: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫ আসন্ন পবিত্র রমজানে সরকারিভাবে বড় ইফতার পার্টি না করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর পুলিশকে জনগণের বন্ধু হয়ে নিঃস্বার্থ সেবা দেয়ার নির্দেশ রাষ্ট্রপতির

ছয় মাসেও উচ্ছেদ হয়নি তারাপুর চা বাগানের স্থাপনা, বাস্তবায়ন হয়নি রায়

| ৫ শ্রাবণ ১৪২৩ | Wednesday, July 20, 2016

 

ছয় মাসের মধ্যে তারাপুর চা বাগানের সব স্থাপনা উচ্ছেদ করে সেবায়েতের কাছে হস্তান্তরের নির্দেশ দিয়েছিলো আদালত। ছয় পেরিয়ে গেছে। কিন্তু এখনো উচ্ছেদ হয়নি কোনো স্থাপনা। বহাত তবিয়তে রয়েছে বাগান ধ্বংস করে গড়ে ওঠা জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজসহ সকল স্থাপনা। দখল বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি সেবায়েত পঙ্কজ দাশগুপ্তকে।

১৯ জানুয়ারি থেকে ১৮ জুলাই, গড়িমসি ও টালবাহানার মধ্যে কেটেছে এই ছয় মাস। এই সময়ের মধ্যে সিলেটে দেবোত্তর তারাপুর চা বাগান দখলমুক্ত করার রায় দিয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ। দেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে হাজার কোটি টাকার এই দেবোত্তর সম্পত্তি ব্যবস্থাপনায় ১৭ দফা নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আদালতের বেঁধে দেওয়া সময়সীমার মধ্যে দখলদার শিল্পপতি রাগীব আলীর সম্পত্তি হস্তান্তরে টালবাহানা করেছেন। পাশাপাশি আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দখলকৃত জায়গা উদ্ধারের ব্যাপারে দ্রুত তৎপর না হওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দখলকৃত চা বাগানের আংশিক জায়গা সেবায়েত পংকজ কুমার গুপ্তকে বুঝিয়ে দেওয়া হলেও তাকে এ সংক্রান্ত কোনো কাগজপত্র দেওয়া হয়নি। অবশ্য দখলকারীদের বিরুদ্ধে জালিয়াতির দুটি মামলা সচল হওয়ার পর তদন্তে তাদের অভযিুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। এক দশকেরও বেশি আগে দায়েরকৃত দুটি মামলার অভিযোগপত্রে রাগীব আলী ও তার ছেলে আবদুল হাইকে অভিযুক্ত করা হয়। তবে জালিয়াতি করে হাতিয়ে নেওয়া চা বাগানটি এখনও পরোক্ষে রাগীব আলীর দখলেই রয়েছে বলে জানা গেছে। দখলকৃত জায়গায় নির্মিত অবৈধ আবাসন, বাণিজ্যিক স্থাপনা ও প্রতিষ্ঠান সরিয়ে না নিয়ে বরং এসব স্থাপনার সংস্কার ও উন্নয়ন করছেন তিনি।

উচ্চ আদালতের রায় অনুযায়ী তারাপুর চা বাগান শ্রীশ্রী রাধাকৃষ্ণ দেবতার সম্পত্তি এবং এই সম্পত্তির সেবায়েত পুংকজ কুমার গুপ্ত। আদালতের রায়ের নির্দেশনায় চা বাগান দখলমুক্ত করে রাধাকৃষ্ণ দেবতার বিগ্রহ পুনঃস্থাপনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে নগরীর যুগলটিলা মন্দিরে রক্ষিত দেবতার বিগ্রহ চা বাগানের মন্দিরে পুনঃস্থাপনের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
উল্টো আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন যুগলটিলা মন্দিরে রক্ষিত রাধাকৃষ্ণ দেবতার বিগ্রহের তারাই সেবায়েত বলে আদালতে আবেদন করেছে। দখলকৃত বাগান হস্তান্তর প্রক্রিয়াকে ঠেকিয়ে রাখতে রাগীব আলী নেপথ্যে কলকাঠি নাড়ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

এ ব্যাপারে সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, গত ২ মার্চ প্রধান বিচারপতি সিলেট সফরকালে এই মামলার রায় বাস্তবায়নের বিষয়টি জানতে চান। এ অবস্থায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নিয়ে তারাপুর চা বাগান উদ্ধারের প্রক্রিয়া শুরু হয়।

প্রাথমিকভাবে সেবায়েত পংকজ কুমার গুপ্তকে শনাক্ত করার পর মার্চ মাসেই অবৈধ দখলদারকে নোটিশ করা হয়। এতে ফাঁকা জায়গা হস্তান্তর ও ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়ার জন্য এক মাসের এবং অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নিতে ছয় মাসের সময় দেওয়া হয়। সে সময় এখনও শেষ হয়নি বলে দাবি করেন জেলা প্রশাসক।

দুই-একদিনের মধ্যে চা বাগানের যেসব জায়গা রাগীব আলী অবৈধভাবে তৃতীয় পক্ষের কাছে হস্তান্তর করেছেন, তা ছেড়ে দেওয়ার জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক জয়নাল আবেদীন। তিনি আরও জানান, উচ্চ আদালতের রায়ের আলোকে গত ১৫ মে বাগান সংশ্লিষ্ট স্থাপনা ও খালি জায়গা সেবায়েত পংকজ কুমার গুপ্তকে সরেজমিনে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাকি জায়গাগুলো নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দেওয়া সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেন জয়নাল আবেদীন।

এ ব্যাপারে সেবায়েত পংকজ কুমার গুপ্ত বলেন, উচ্চ আদালতের রায় প্রকাশের দিন থেকেই ছয় মাস সময়সীমা শুরু হয়ে গেছে। এ অবস্থায় ১৮ জুলাই নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার পর রায় বাস্তবায়ন না হওয়া অবশ্যই আদালত অবমাননার মধ্যে পড়ে।