ঢাকা, মে ৭, ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ১৪:২৭:১১

এ পাতার অন্যান্য সংবাদ

টেলিভিশন ও অনলাইন সাংবাদিকদের সুযোগ-সুবিধা প্রদানের দাবি বিএফইউজে’র পুনর্বাসন না করে বস্তিবাসীদের উচ্ছেদ করা হবে না: তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিস্ফোরণ: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫ প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারি হিসেবে ফের নিয়োগ পেলেন বিপ্লব বড়ুয়া সংসদ অধিবেশন উপলক্ষে সংসদ ভবন ও আশপাশের এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ আপিলে দ্বিতীয় দিনে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন ৫১ জন নির্বাচনে ২৯ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারি সেনাবাহিনী চায় ইসি : পিএসও আদালত আবমাননায় বিচারক সোহেল রানার সাজার বিরুদ্ধে আপিলের রায় ২৩ জানুয়ারি রাজধানীর ২১টি স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ-অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ৪ জন গ্রেফতার : ডিএমপি নির্বাচনে সেনা মোতায়েন হবে কিনা, জানালেন ইসি

ঘুষের টাকা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় রিমান্ডের আসামির দুই স্ত্রীকে পুলিশের ধর্ষণ!

| ২০ ভাদ্র ১৪২৩ | Sunday, September 4, 2016

84

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে আসামিকে রিমান্ডে নির্যাতনের হুমকি দিয়ে প্রথমে ঘুষ দাবি, পরে ঘুষের টাকা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় তার দুই স্ত্রীকে ধর্ষণ করা হয়েছে। পুলিশের এক কর্মকর্তা ও তার দুই তথ্যদাতার (সোর্স) গত বুধবার রাতে তাদের ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।পরিবারের অভিযোগ, ওই আসামিকে রিমান্ডে নির্যাতন না করার বিনিময়ে দাবি করা ঘুষের টাকা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় তারা এ ঘটনা ঘটায়। এদিকে ঘটনাটি প্রকাশ হওয়ার পর গতকাল পুলিশ প্রশাসনে তোলপাড় শুরু হয়।

অভিযুক্ত দুই সোর্স গতকাল শুক্রবার গ্রেফতার হলেও রাত পর্যন্ত পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তবে অভিযোগ তদন্তে কমিটি গঠন করেছে জেলা পুলিশ।

গ্রেফতার দুই পুলিশ সোর্স হলো, নজরুল ইসলাস ওরফে তোতলা নজরুল ও শুভ। আর অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা হলেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এসআই আতাউর রহমান।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, একটি ডাকাতি মামলায় গত ২৯ আগস্ট নগরীর মিজমিজি দক্ষিণপাড়া এলাকার এক সবজি বিক্রেতাকে (৩৫) গ্রেপ্তার করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা-পুলিশ। তিনি অতীতে পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করলেও সম্প্রতি তা ছেড়ে দেন। গত বুধবার নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তির এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়। এরপর রিমান্ডের জন্য তাঁকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা হেফাজতে নেওয়া হয়।

ওই আসামির বাবা ও দুই স্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, বুধবার রাতেই সিদ্ধিরগঞ্জ থানার একজন উপপরিদর্শকের (এসআই) দুই সোর্স নজরুল ইসলাম ওরফে তোতলা নজরুল ও শুভ তাঁদের ফোন করেন। এ সময় বলা হয়, ২৫ হাজার টাকা নিয়ে এসআইয়ের সঙ্গে দেখা করলে তাঁদের স্বামীকে রিমান্ডে নির্যাতন করা হবে না। রাত সাড়ে ১০টার দিকে দুই স্ত্রী সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অদূরে নজরুল ও শুভর সঙ্গে দেখা করেন।

এ সময় তাঁদের পাশের একটি বাড়ির একটি ফ্ল্যাটে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে দেনদরবারের একপর্যায়ে দুই স্ত্রী নজরুল ও শুভকে ছয় হাজার টাকা দেন। বাকি ১৯ হাজার টাকা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় তাঁদের সঙ্গে রাত কাটানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়। এতে রাজি না হওয়ায় দুজনকে পৃথক কক্ষে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেন নজরুল ও শুভ।

রাত সাড়ে ১২টার দিকে এসআইও ওই ফ্ল্যাটে এসে আসামির দ্বিতীয় স্ত্রীকে ধর্ষণ করেন। রাত দুইটার দিকে দুই স্ত্রীকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় তাঁদের স্বামীকে সামনে হাজির করিয়ে দেখানো হয়, তাঁকে মারধর করা হয়নি। কিন্তু বৃহস্পতিবার বিকেলে আসামিকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। তখন তাঁর দুই স্ত্রী আদালতপাড়ায় কান্নায় ভেঙে পড়েন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী মজিবুর রহমান বলেন, ‘আসামির দুই স্ত্রীকেই ধর্ষণ করেছেন ওই এসআই ও তাঁর সোর্স নজরুল ও শুভ। পরিবারটিকে বৃহস্পতিবার আমরা মামলা করতে বলেছিলাম। তবে পুলিশের অব্যাহত হুমকির মুখে তারা ভয় পাচ্ছে। তবে আমরা বিষয়টি নিয়ে অবশ্যই এগোব।’

ধর্ষণের কথা অস্বীকার করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আতাউর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, পুরো ঘটনা সাজানো। তাঁর সঙ্গে কারও কোনো কথা কিংবা লেনদেনের আলাপ হয়নি। নজরুল ও শুভর বিষয়ে তিনি বলেন, তাঁরা তাঁর কাজ যেমন করেন, অন্য পুলিশের পক্ষেও কাজ করেন।

থানার এএসআই মিজানুর রহমান বলেন, অভিযুক্ত সোর্স নজরুল ও শুভকে গতকাল শুক্রবার রাতে আটক করা হয়েছে। তাঁরা বর্তমানে থানা হেফাজতে রয়েছেন।

এদিকে ঘটনা তদন্তে গতকাল শুক্রবার রাতে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে জেলা পুলিশ। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মো. ফারুক হোসেনকে কমিটির প্রধান করা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা হলেন সহকারী পুলিশ সুপার (‘ক’ অঞ্চল) আবদুল্লাহ মাসুদ ও জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক (ডিআইওয়ান) মামুনুর রশিদ মণ্ডল।

তদন্ত কমিটির সদস্য সহকারী পুলিশ সুপার (ক অঞ্চল) আব্দুল্লাহ আল মাসুদ বলেন, আমরা ঘটনাটির তদন্ত শুরু করেছি। এ বিষয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে পরে কথা বলব।