বাংলাদেশের পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু করতে উদ্যোগ নেবে যুক্তরাষ্ট্র। সোমবার বিকালে রাজধানীর বারিধারায় দেশটির চেন্সারি কমপ্লেক্স ভবনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের পরাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন। সেই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র চায় বিএনপি পরবর্তী নির্বাচনে অংশ নিক। মঙ্গলবার দলের সংশ্লিষ্ট নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
নেতারা জানান, জন কেরি সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গেও পরবর্তী নির্বাচন নিয়ে কথা বলেছেন বলে খালেদা জিয়াকে জানিয়েছেন। সে ক্ষেত্রে সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে দক্ষ, শক্তিশালী ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন প্রয়োজন বলে উভয় পক্ষই একমত হন। এ ক্ষেত্রেও যুক্তরাষ্ট্র ভূমিকা রাখবে বলে জানিয়েছেন জন কেরি। বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়। বিএনপির পক্ষ থেকে ডেমোক্রেটিক প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনকে শুভ কামনা জানানো হয়।
সূত্র জানায়, বিএনপির জন্য ২০ মিনিট নির্ধারিত থাকলেও ৩৫ মিনিটি স্থায়ী হয় এ বৈঠক। মাঠের বিরোধী দল হিসেবে বিএনপিকে বাড়তি গুরুত্ব দেয়া এবং বর্তমান বিরোধী দলকে সেভাবে সময় না দেয়ায় বেশ উৎফুল্ল দলটির হাইকমান্ড।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, আলোচনার একপর্যায়ে জন কেরি খালেদা জিয়ার কাছে জানতে চান, বিএনপি নির্বাচনকালীন কী ধরনের সরকার আশা করে। জবাবে খালেদা জিয়া বলেছেন- আমরা চাই, উইন উইন সিচুয়েশন। নির্বাচনের সময় যে সরকার ও নির্বাচন কমিশন থাকবে, তারা যেন সবার সঙ্গে সমান আচরণ করে। এ সময় জন কেরি বলেন, আমরাও তাই চাই। এ জন্য যুক্তরাষ্ট্র চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র প্রেসার গ্রুপ হিসেবে কাজ করবে। বৈঠকে অংশ নেয়া এক নেতা বলেন, আগাম নির্বাচনের যে সম্ভাবনা ছিল, জন কেরির সঙ্গে আলোচনায় মনে হয়েছে- তা আর নেই।
সোমবার বৈঠকের পর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, বৈঠকে জন কেরির সঙ্গে আগামী নির্বাচন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশে গণতন্ত্র, মানুষের অধিকার, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করার জন্য তারা (যুক্তরাষ্ট্র) বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কাজ করতে চায়। তারা (যুক্তরাষ্ট্র) আশাবাদী। আমরাও (বিএনপি) আশাবাদী যে, মার্কিন সহযোগিতার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে অর্থনৈতিক উন্নয়ন হবে, গণতন্ত্রও প্রতিষ্ঠিত হবে।
সূত্র জানায়, বৈঠকে খালেদা জিয়া তার বিরুদ্ধে করা বিভিন্ন মামলা নিয়েও কথা বলেন। জন কেরিকে খালেদা জিয়া বলেছেন, যেভাবে সরকার তার বিরুদ্ধে করা মামলাগুলো চালাচ্ছে, আশংকা করা হচ্ছে- এ সব মামলায় আগামী কয়েক মাসের মধ্যে সাজা দিয়ে পরবর্তী নির্বাচনে তাকে অযোগ্য ঘোষণা করা হবে। জবাবে জন কেরি বলেছেন, এটা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। তারপরও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কোনো মামলায় যাতে সাজা দেয়া না হয়, সে ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র নজর রাখছে।