কোম্পানীগঞ্জ (সিলেট) থেকে ফিরে আবুল হোসেন ঃকোম্পানীগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি আরো অবনতি ঘটেছে।কয়েক দিনের টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহড়ি ঢলে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের প্রায় ৭০/৮০ টি গ্রাম পানিতে নিমজ্জিত। লক্ষাধিক মানুষ গৃহবন্দি হয়ে পড়েছে। উপজেলা সদরে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। উপজেলা সদরের টিএনটি রাস্তা ২ ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে। উপজেলা সদরে বন্যার পানি ছুইছুই করছে । পানি যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে সেভাবে অব্যাহত থাকলে উপজেলা সদরের অফিস আদালত ও বাসা বাড়ীতে পানি দ্রুত প্রবেশ করবে। ধলাই, সুনাই ও পিয়াইন নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। উপজেলা সদরের সাথে ৪টি ইউনিয়নের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে পড়েছে। কোম্পানীগঞ্জ ছাতক রাস্তার বুড়িঢহর এলাকার আংশিক রাস্তা তলিয়ে গেছে। পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকলে বন্যা পরিস্থিতি আরো মারাত্বক আকার ধারণ করার আশঙ্খা রয়েছে। অব্যাহত বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারনে দেশের বৃহৎ পাথর কোয়ারী ভোলাগঞ্জ, উৎমা ও শারপিন টিলার পাথর উত্তোলন বন্ধ রয়েছে। ফলে হাজার হাজার বারকী শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছে। ব্যবাসায়ীদের পাথর কেনা-বেচা ও পাঁচ শতাধিক স্টোন ক্রাসার মিল বন্ধ রয়েছে। উপজেলা ব্যাপী বিশুদ্ধ পানি ও গো-খাদ্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। উপজেলা সদর উচ্চ বিদ্যালয় ও প্রাথমিক বিদ্যালয় সহ উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বন্যার্তরা আশ্রয় নিতে শুরু করেছে। খোজ নিয়ে জানা গেছে, ইতোমধ্যে সহস্রাধিক বন্যার্ত নারী-পুরুষ ঘর বাড়ি ছেড়ে বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে। নৌকার অভাবে লোকজন আশ্রয় কেন্দ্রে আসতে পারছেনা বলে অভিযোগ রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রোকন উদ্দিন জানান, বন্যা পরিস্থিতি এখনো নিয়ন্ত্রনে রয়েছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটবে। তিনি জানান উপজেলার ৯টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরকারিভাবে আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। শতাধিক পরিবার এতে আশ্রয় নিয়েছে। উপজেলা পরিষদ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যা মোকাবেলার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। ক্ষয় ক্ষতির পরিমান নির্ধারনের জন্য উপজেলা কৃষি অফিসার, পিআইও এবং প্রতিটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি সম্পর্কে জেলা প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিসার গোলাম মোস্তফা জানান, বন্যায় এ পর্যন্ত উপজেলার ৩০০ হেক্টর আউশ, ২২০ হেক্টর রূপা আমন, ৪৫০ হেক্টর বীজতলা, ৫০ হেক্টর সবজি চাঁষ পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে । বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়া ফসল সম্পূর্নরুপে নষ্ট হয়ে যাওয়ার আংশঙ্কা রয়েছে। বন্যার পানি নেমে গেলে ক্ষয়-ক্ষতির পরিমান নির্র্ধারন করা হবে।