বাংলাদেশে চলমান জঙ্গী হামলা ও ধর্মীয় পৌরহিত হত্যার ধারাবাহিকতায় কক্সবাজার হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে ডাকযোগে হুমকি সম্বলিত চিঠি পাঠিয়েছে ইসলামীক স্টেট(আই.এস) তথাকথিত জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস সংগঠনের নামে। ১৪ জুলাই বিকালে কক্সবাজার জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের জেলা কার্যালয়ের দরজায় দুটি চিঠি পাওয়া যায় বলে সংশ্লিষ্টরা জানায়।
ওই চিঠি দুইটির মধ্যে একটিতে প্রেরকের নামের স্থলে “এড; আবুল কালাম আজাদ, চকরিয়া আইনজীবী সমিতি, চকরিয়া কক্সবাজার” ও অপরটিতে “সুমন রাইকান, আইনজীবী সমিতি, কক্সবাজার” লিখা রয়েছে। এঘটনায় কক্সবাজার সদর মডেল থানায় দায়ের করা হয়েছে সাধারণ ডায়রী (জিডি)।
আই.এস কর্তৃক ডাকযোগে প্রেরিত ওই চিঠি দুইটি লেখা রয়েছে, পর্যাক্রমে দশটি মন্দিরে হামলা চালানো হবে। কক্সবাজারে হামলার মধ্যে “সর্বপ্রথম ব্রাহ্ম মন্দিরে হামলা চালাবে, এরপর শহরের প্রধান প্রধান মন্দির যথা- কালী বাড়ী, স্বরস্বতী বাড়ী, লোকনাথ সেবাশ্রম, অনুকূল চন্দ্রের আশ্রম, ইসকন মন্দির, কৃষ্ণানন্দধাম, রামকৃষ্ণ সেবাশ্রম”। চিঠিতে আরও উল্লেখ রয়েছে, “যতদিন পর্যন্ত হিন্দুরা ইসলাম ধর্ম গ্রহন করবে না, ততদিন পর্যন্ত এই জিহাদ চালিয়ে যাবে”।
“কক্সবাজারের সমস্ত মন্দিরের পৌরহিত, বিভিন্ন পূজা কমিটির সভাপতি/সাধারণ সম্পাদকদের কে খুঁজে খুঁজে বের করে খুন করবে”। “পারলে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়। অন্যথায় গলাকেটে হত্যা করবে”। যতবড় প্রশাসন আসুক না কে হত্যা অবশ্যই করবে।
আরও উল্লেখ করেন যে, মহেশখালীর আদিনাথ মন্দিরে বহুবার চেষ্টা করেছি কিন্তু পারি নাই। এইবার আর রেহাই নাই।
এই ব্যাপারে কক্সবাজার জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি এডভোকেট রনজিত দাশ ও সাধারণ সম্পাদক বাবুল শর্মা বলেন, ১৪ জুলাই হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসব শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের উল্টো রথযাত্রার অনুষ্ঠান ছিল। বিকাল সাড়ে ৫টায় উক্ত অনুষ্ঠান শেষে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের কক্সবাজার জেলা কার্যালয় লালদীঘির পাড়স্থ ব্রাহ্ম মন্দিরে আসলে অফিসে দরজার নীচে দেখা যায় ডাক যোগে প্রেরিত দুইটি চিঠির খাম। ওই খাম দুটির মধ্যে প্রেরকের নাম লেখা হয়েছে “এড; আবুল কালাম আজাদ, চকরিয়া আইনজীবী সমিতি, চকরিয়া কক্সবাজার” ও অপরটিতে “সুমন রাইকান, আইনজীবী সমিতি, কক্সবাজার” । ওই খাম দুটি খুলে দেখি , ইসলামী স্টেট (আই.এস) জঙ্গী সংগঠন কর্তৃক প্রেরিত চিঠি।
নেতৃবৃন্দদ্বয় আরও বলেন, আমরা হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি হিসাবে চরম আতংকে ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। চিঠির প্রেরকরা যে কোন মুহুর্তে আমাদের তথা হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর কিংবা বিভিন্ন মঠ-মন্দির ও বাড়ী ঘরে অতর্কিত হামলা চলাতে পারে। তাই ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা ১৪ জুলাই রাত ৯ টায় কক্সবাজার সদর মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরী লিপিবদ্ধ করেছি।
এদিকে ওই চিঠি পাওয়ার খবর হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে পুরো কক্সবাজারের হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে আতংক বিরাজ করছে। তবে চিটিগুলো আদৌ আইএস’র কিনা এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার অপারেশন অফিসারেএসআই আবদুর রহিম থানায় সাধারণ ডায়েরী লিপিবদ্ধ করার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।