ঢাকা : উল্টো রথ টানার মধ্য দিয়ে আজ শেষ হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় পর্ব শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা উৎসব। গত ৬ জুলাই রখযাত্রা উৎসব শুরু হয়।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস জগন্নাথ দেব হলেন জগতের নাথ বা অধীশ্বর। জগত হচ্ছে বিশ্ব আর নাথ হচ্ছেন ইশ্বর । তাই জগন্নাথ হচ্ছে জগতের ইশ্বর। তার অনুগ্রহ পেলে মানুষের মুক্তিলাভ হয়। জীবরূপে তাকে আর জন্ম নিতে হয় না। এ বিশ্বাস থেকেই রথের ওপর জগন্নাথ দেবের প্রতিমা রেখে রথযাত্রা করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
লিটল এঞ্জেল লার্নিং হোম এর অধ্যক্ষ মমতা সেন বলেন, উল্টো রথে জগন্নাথ দেবকে গুন্ডিচা মন্দির থেকে লীলাচলে জগন্নাথদেবের মন্দিরে নিয়ে আসা হয়। এর আগে রথ যাত্রার শুরুর দিন লীলাচল থেকে জগন্নাথদেবকে গুন্ডিচা মন্দিরে নেয়া হয। কথিত আছে সত্যযুগে ইন্দ্রদন্য রাজার স্ত্রী গুনিডচাকে শ্রীকৃষ্ণ সন্তান হিসাবে প্রতিবছর নয় দিন তার কাছে থাকার থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ছিলেন। সেই প্রতিশ্রুতি রাখার জন্যই রথের শুরুর দিন গুন্ডিচা মন্দির থেকে লীলাচলে জগন্নাথদেবের মন্দিরে নিয়ে আসা হয় ।
উল্টো রথযাত্রা উপলক্ষে বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠন এবং মন্দির নানা মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সকালে বিভিন্ন মাঙ্গলিক আনুষ্ঠানিকতার মথ্য দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান মালা । এর মধ্যে ছিল হরিনাম সংকীর্তন, বিশ্ব শান্তিও মঙ্গল কামানায় অগ্নিহোত্র যজ্ঞ, মহাপ্রসাদ বিতরণ, আলোচনা সভা, পদাবলী কীর্তন, আরতি কীর্তন, ভাগবত কথা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও শ্রীমদ্ভাগবত গীতা পাঠ। ইসকন সহ রাজধানীর রাম-সীতা মন্দির এবং তাতীবাজার জগন্নাথ মন্দিরে এ উপলক্ষে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ।
রাজধানী ঢাকায় আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) উল্টো রথ যাত্রা উপলক্ষে বিকালে বিশাল শোভাযাত্রা বের করে । স্বামীবাগের ইসকন মন্দিরে অনুষ্ঠিত শোভাযাত্রা পূর্ব অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম। শ্রীপাদ চারু চন্দ্র দাস ব্রহ্মচারীর সভাপতিত্বে এত অন্যানেরমধ্যে বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ দক্ষিনের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ , ইসকন বাংলাদেশের সাবেক সভাপতি কৃষ্ণ কীর্তণ দাস ব্রহ্মচারী , ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরের সেবায়েত প্রদীপ ভট্রাচার্য , বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক অরুন সরকার রাণা ।
কামরুল ইসলাম বলেন, বর্তমান সরকার বাংলাদেশ থেকে চিরতরে সাম্প্রদায়িক শক্তি নির্মূল করবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির মূর্তপ্রতীক হিসাবে বর্ণনা করে তিনি বলেন, তাঁর কাছে কোন সাম্প্রদায়িক শক্তির স্থান হবেনা । দেশ থেকে চিরতরে জঙ্গিবাদ নির্মূল করা হবে বলে জানান তিনি।
উল্টো রথ যাত্রা শেষে আশ্রমে ভক্তবৃন্দের মধ্যে প্রসাদ বিতরন করা হয়। সন্ধ্যা থেকেই শুরু হয় নানা আনুষ্ঠানিকতা।