ঢাকা, এপ্রিল ২৯, ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ০৫:১৪:৩২

এ পাতার অন্যান্য সংবাদ

একীভূত হতে চাওয়া ব্যাংকের সম্পদের দাম যেভাবে নির্ধারণ করা হবে টেলিভিশন ও অনলাইন সাংবাদিকদের সুযোগ-সুবিধা প্রদানের দাবি বিএফইউজে’র দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নিয়ে বিএনপির মাথাব্যথার কারণ নেই : ওবায়দুল কাদের বিএনপি একটি রাজনৈতিক দৈত্যের দল : পররাষ্ট্রমন্ত্রী শান্তি বজায় রাখার জন্য যা-যা করার আমরা করবো: বান্দরবানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবারের ঈদ যাত্রাও স্বস্তিদায়ক হচ্ছে: সেতুমন্ত্রী কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট শিশুদের নতুন করে বাঁচার পথ খুলে দেয় : সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিস্ফোরণ: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫ আসন্ন পবিত্র রমজানে সরকারিভাবে বড় ইফতার পার্টি না করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর পুলিশকে জনগণের বন্ধু হয়ে নিঃস্বার্থ সেবা দেয়ার নির্দেশ রাষ্ট্রপতির

আল্লাহু আকবর বলে মানুষ হত্যা জিহাদ নয় : আল্লামা শফি

| ৩১ আষাঢ় ১৪২৩ | Friday, July 15, 2016

 

আল্লাহু আকবর বলে মানুষ হত্যা জিহাদ নয় : আল্লামা শফি হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী বলেছেন, বিদেশি, অমুসলিম ও ধর্মীয় ব্যক্তিদের টার্গেট করে দেশে ইসলামের নাম ব্যবহার করে গুলশান ও শোলাকিয়াসহ বিভিন্ন স্থানে একের পর এক সন্ত্রাসী হামলা দেশে ও জাতির জন্য অশনি সংকেত। আর কোনো মদ পানকারী আল্লাহু আকবার বলে মদ পান করলে যেমন কেউ সেটাকে ইসলামী মদ বলবে না, তেমনি কোনো সন্ত্রাসী আল্লাহু আকবার বা ইসলামের নাম নিয়ে মানুষ হত্যাকে জিহাদ বলবে না।

তিনি বলেন, শক্তিশালী কোন পক্ষের ইন্ধন ছাড়া বিচ্ছিন্ন গুটিকয়েক অপরাধীর পক্ষে এমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা অসম্ভব। এই দেশ থেকে ইসলামকে উচ্ছেদ করে আধিপত্য ও শোষণের রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করতেই এই হামলা। সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য করে কাউকে বিনা কারণে হত্যা ও সমাজে ভীতি তৈরীর নাম কখনোই জিহাদ নয় বরং ইসলামের জিহাদ হচ্ছে অন্যায় আগ্রাসন ও সন্ত্রাস দমনের।
বৃহস্পতিবার দুপুরে গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিবৃতিতে আল্লামা শফি এসব কথা বলেন বলে হেফাজত আমিরের প্রেস সচিব মাওলানা মুনির আহমদ জানান।
হেফাজতের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী বলেন, বিদেশি, অমুসলিম ও ধর্মীয় ব্যক্তিত্বদের হত্যা করা, হত্যার হুমকি দেওয়া, মসজিদ, মন্দির ও গীর্জায় হামলা প্রচেষ্টা চরম উদ্বেগজনক। সঠিক ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের পেছনে ইন্ধনদাতাদের চিহ্নিত করতে হবে।
বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে ধ্বংস করার জন্য এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে বলে দাবি করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন, অগ্রগতি ও জাতীয় ঐক্যকে বাধাগ্রস্ত ও ধ্বংস করার জন্যে বিভিন্ন অপশক্তি গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তারা এদেশ থেকে ইসলামকে উচ্ছেদ করে আধিপত্য ও শোষণের রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এই কাজে তারা কলেজ-ইউনিভার্সিটির উচ্চ শিক্ষিত ছাত্রসহ সরলমনা কিছু মুসলিম যুবককে আদর্শীকভাবে ইসলামের ভুল ব্যাখ্যায় প্রভাবিত করে ব্যবহার করতে সক্ষম হচ্ছে।
আল্লামা শফি এ ব্যাপারে দেশের আলেম সমাজ, ইসলামী নেতৃবৃন্দ, মসজিদের ইমাম ও খতিবকে ইসলামের সঠিক জ্ঞান ও শিক্ষার প্রচার-প্রসারে আরো জোরালো ভূমিকা রাখার আহবান জানান।
তিনি বলেন, কোনো মদ পানকারী আল্লাহু আকবার বলে মদ পান করলে যেমন কেউ সেটাকে ইসলামী মদ বলবে না,  তেমনি কোন সন্ত্রাসী আল্লাহু আকবার বা ইসলামের নাম নিয়ে মানুষ হত্যাকে জিহাদ বলবে না।
আল্লামা শাহ আহমদ শফী বলেন,  সৎ ও সরল চিন্তার প্রতিটি মানুষই কোন না কোনভাবে ধর্মের প্রতি দুর্বল থাকে। কারণ ধর্ম মানুষকে সৎ ও আদর্শবান হতে সাহায্য করে। আর দেশের স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্মীয় শিক্ষার অনুপস্থিতির কারণে সাধারণ শিক্ষিত বিশাল ছাত্রসমাজ পরিপূর্ণ সঠিক ধর্মীয় জ্ঞান থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। বাংলাদেশের শত্রুরা এই সুযোগটা কাজে লাগাচ্ছে। তারা সাধারণ শিক্ষিত তরুণদেরকে ইসলামের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে বিভ্রান্ত ও বিপথগামী করতে এ কারণে সক্ষম হচ্ছে।
তিনি বলেন, ধর্মহীন শিক্ষানীতি এবং ধর্মনিরপেক্ষতার নামে নাস্তিক্যবাদ প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা জাতির জন্যে সন্ত্রাস ও কথিত জঙ্গিবাদের বিপর্যয় ডেকে আনছে।
ইসলামী নেতৃবৃন্দ ও মসজিদের ইমাম-খতিবদেরকে উদ্দেশ্য করে হেফাজত আমীর বলেন,  দেশকে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের হাত থেকে বাঁচানোর জন্যে আরো বেশী ভূমিকা পালন করতে হবে। মানুষের দ্বারে দ্বারে শান্তির ধর্ম ইসলামের সঠিক শিক্ষা পৌঁছে দিতে হবে। বিশেষ করে স্কুল, কলেজ ও ইউনিভর্সিটি ক্যাম্পাসসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্মীয় সভা-সেমিনার করা যেতে পারে। এসব সভা-সেমিনারে ইসলামের সার্বিক বিধি-বিধান তুলে ধরতে হবে। সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য করে কাউকে বিনা কারণে হত্যা ও সমাজে ভীতি তৈরীর নাম কখনোই জিহাদ নয় বরং ইসলামের জিহাদ হচ্ছে অন্যায় আগ্রাসন ও সন্ত্রাস-নৈরাজ্য দমনের।
মসজিদের ইমাম ও মাহফিলে পুলিশের নজরদারির সমালোচনা করে আল্লামা শফি বলেন ,দেশ থেকে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যকে নির্মূল করতে যদি প্রকৃত অর্থে আন্তরিক হউন, তবে মসজিদের ইমাম-খতিব ও মাহফিল নজরদারী করার কথা বলে ভীতি তৈরী ও ধর্মীয় কর্মকাণ্ড সংকোচিত করিয়েন না। বরং নজরদারীর পরিবর্তে আলেমদেরকে স্বাচ্ছন্দে কাজ করতে সহযোগিতা করুন। কারণ সমাজের মানুষের মধ্যে সৎ ভাবে জীবন যাপনের যে মানসিকতা ভেতর থেকে কাজ করে সেটা এই ইমাম ও খতিবরাই  করে থাকে।
তিনি বলেন,  মসজিদে খতিব নজরদারির কথা বলার মানেই হচ্ছে, সন্ত্রাস ও হত্যাকান্ডের দায় ইসলামের উপর চাপানোর চেষ্টা। বাংলাদেশের উপর এখন সারা বিশ্বের দৃষ্টি। খতিব নজরদারির সংবাদে বিশ্ববাসীর কাছে এমন বার্তা যাবে যে, বাংলাদেশের লাখ লাখ মসজিদের খতিব জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে কাজে জড়িত।