ঢাকা, এপ্রিল ১৯, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ১৭:৪৫:৪৪

হত্যার পর র‌্যাব সদস্যরাও কেঁদেছেন

| ১৯ ভাদ্র ১৪২১ | Wednesday, September 3, 2014

হত্যাকাণ্ডে অংশ নিয়ে মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছিলেন নিম্নপদস‘ র‌্যাব সদস্যরা। ঊর্ধ্বতন র‌্যাব কর্মকর্তাদের নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের ঘটনা বিস্তারিত জানিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তারা। বিষয়টি আঁচ করতে পেরে ঘটনা ফাঁস না করার জন্য নিম্নপদস্তদের শাসিয়েছিলেন র‌্যাব-১১-এর অধিনায়ক তারেক সাঈদ।

এমন নির্মম ঘটনার জের সইতে না পেরে কিলিং মিশনে অংশ নেওয়া র‌্যাবের অনেক সদস্যই নিভৃতে চোখের জল ফেলেছেন। নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুনের ঘটনায় গ্রেফতারকৃত ল্যান্স নায়েক বেলাল হোসেন হত্যার দায় স্বীকার করে গতকাল আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দিতে তিনি এসব তথ্য জানান বলে জানিয়েছে র‌্যাবেরই একটি সূত্র। আদালত সূত্র জানায়, বিকেল ৪টায় নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এইচএম শফিকুল ইসলামের আদালতে তার জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। এর আগে গত শনিবার র‌্যাব-১১-এর হাবিলদার এমদাদুল হক, ল্যান্স নায়েক হীরা মিয়া, সিপাহি আবু তৈয়ব ও রোববার আরিফ হোসেন আদালতে দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। গত বুধবার র‌্যাব-১১র এই পাঁচ সদস্যকে নারায়ণগঞ্জ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান আদালতে বেলাল হোসেনের জবানবন্দি দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। জবানবন্দির বরাত দিয়ে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, আগের চারজনের দেওয়া জবানবন্দির সঙ্গে বেলালের জবানবন্দির অনেক মিল রয়েছে। বেলাল তার জবানবন্দিতে সাত খুনের পর ঘটিত নানা বিষয়ের বর্ণনা দিয়ে বলেছেন, খুনের পর কিলিং মিশনে অংশ নেওয়া সদস্যরা নীরবে নিভৃতে কেঁদেছেন। সাতজনকে অপহরণের পর খুনের বিষয়টি নিয়ে কিলিং মিশনে অংশ নেওয়া র‌্যাব সদস্যরা অমানসিক যন্ত্রণায় ভুগেছেন। এত বড় অন্যায় মেনে নিতে পারেননি তারা। বরখাস্ত হওয়া তিন র‌্যাব কর্মকর্তার বাইরে অন্য র‌্যাব সদস্যরা নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া করেছিলেন। তারা সিদ্ধান্ত নেন, ওপর মহলকে জানিয়ে দেবেন সব ঘটনা। কিন্তু৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদীতে একে একে সাতজনের লাশ ভেসে ওঠার পর র‌্যাব-১১ তখনকার সিও তারেক সাঈদ জরুরি বৈঠক ডেকে কঠোর হুশিয়ারি দেন, মুখ খুলে নিজেদের বিপদ যেন নিজেরাই ডেকে না আনে। এরপর আর কেউ ঘটনা ফাঁস করতে সাহস করেননি। এ ঘটনায় এ পর্যন্ত মোট আট র‌্যাব সদস্য স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।