ঢাকা, এপ্রিল ১৯, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ০৪:২৪:৩৮

এ পাতার অন্যান্য সংবাদ

টেলিভিশন ও অনলাইন সাংবাদিকদের সুযোগ-সুবিধা প্রদানের দাবি বিএফইউজে’র পুনর্বাসন না করে বস্তিবাসীদের উচ্ছেদ করা হবে না: তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিস্ফোরণ: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫ প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারি হিসেবে ফের নিয়োগ পেলেন বিপ্লব বড়ুয়া সংসদ অধিবেশন উপলক্ষে সংসদ ভবন ও আশপাশের এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ আপিলে দ্বিতীয় দিনে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন ৫১ জন নির্বাচনে ২৯ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারি সেনাবাহিনী চায় ইসি : পিএসও আদালত আবমাননায় বিচারক সোহেল রানার সাজার বিরুদ্ধে আপিলের রায় ২৩ জানুয়ারি রাজধানীর ২১টি স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ-অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ৪ জন গ্রেফতার : ডিএমপি নির্বাচনে সেনা মোতায়েন হবে কিনা, জানালেন ইসি

‘হিন্দু ব্যবসায়ীকে অতিথি করায়’ স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা বন্ধ

| ১৪ মাঘ ১৪২৫ | Sunday, January 27, 2019

 

Image result for ক্রীড়া প্রতিযোগিতা

ফরিদপুরের সদর উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের বঙ্গেশ্বরদী সম্মিলনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়।

হিন্দু ধর্মাবলম্বী এক ব্যবসায়ীকে বিশেষ অতিথি করায় ফরিদপুরের সদর উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের বঙ্গেশ্বরদী সম্মিলনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা বন্ধের কথা বলেছেন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শামসুন নাহার মহিদ। আজ রোববার বিদ্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মো. খায়ের মিয়া এমন অভিযোগ করেন।

এর আগে আজ রোববার একই ইউনিয়নের ধোপাডাঙ্গা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা স্থগিত করে দেন একই চেয়ারম্যান। আমন্ত্রণপত্রে তাঁর পরিবারের সদস্যদের নাম নিচের দিকে দেওয়ায় বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা বন্ধের নির্দেশ দেন তিনি।

এবার ধোপাডাঙ্গা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও বাণিজ্যিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (সিআইপি) ড. যশোদা জীবন দেবনাথকে বঙ্গেশ্বরদী সম্মিলনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি করা হয়। ড. দেবনাথ টেকনো মিডিয়া লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বেঙ্গল ব্যাংকের পরিচালক। পাঠানো আমন্ত্রণপত্রে বিশেষ অতিথির নাম দেখে চটে যান ইউপি চেয়ারম্যান।

হিন্দু ধর্মাবলম্বী লোকের নাম কেন চিঠিতে দেওয়া হলো এ কারণে ইউপি চেয়ারম্যান বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার সব কার্যক্রম বন্ধ করতে বলেছেন বলে অভিযোগ করেছেন বঙ্গেশ্বরদী সম্মিলনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মো. খায়ের মিয়া।

এমন পরিস্থিতিতে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা বলে আগামীকাল সোমবারের ক্রীড়া প্রতিযোগিতার অনুষ্ঠান স্থগিতের ঘোষণা দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে সভাপতি বলেন, ‘এবারের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা উপলক্ষে তাঁকে (ইউপি চেয়ারম্যান শামসুন নাহার মহিদ) আমন্ত্রণ জানাতে গেলে তিনি আমন্ত্রণপত্র দেখেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং বিশেষ অতিতি ড. যশোদা জীবন দেবনাথের নাম দেখে তাঁকে মালাউনের বাচ্চা বলে গালি দিয়ে বলেন, তাঁকে কেন অতিথি করা হলো?’

‘শামসুন্নাহার মহিদ জানিয়ে দেন, তিনি নিজে অতিথি তালিকা দেবেন এবং সে অনুযায়ী চিঠি করে পরবর্তীতে অনুষ্ঠান করতে হবে, তা না হলে তিনি অনুষ্ঠান করতে দেবেন না।’

সাম্প্রদায়িক বক্তব্যের বিষয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে মো. খায়ের মিয়া বলেন, ড. যশোদা জীবন দেবনাথকে আনতে পারলে স্কুলের উন্নয়নের জন্য তিনি ভূমিকা নিতে পারতেন আর এ কারণেই তাঁর নাম দেওয়া হয়েছিল।

বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক ও বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মো. খায়ের মিয়া আরো বলেন, স্থানীয় অভিভাবকদের ব্যাপক অনুরোধে ২০১৬ সালে নির্বাচনের মাধ্যমে সভাপতি হিসেবে প্রথম দায়িত্ব নেই এবং স্কুলে সিসি-ক্যামেরা স্থাপন, মেধাবী শিক্ষার্থীদের সম্পূর্ণ বিনামূল্যে লেখাপড়ার সুযোগ, সব শিক্ষার্থীকে বিনামূল্যে পোশাকের কাপড় বিতরণ, অবকাঠামো উন্নয়নসহ নিজ উদ্যোগে দুজন অতিরিক্ত শিক্ষক নিয়োগ করাসহ ব্যাপকভাবে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড করি।  তারই ধারাবাহিকতায় ২০১৮ সালে আবারও আমার প্যানেল নির্বাচনে জয়লাভ করলে আমি দ্বিতীয় বারের মতো সভাপতি নির্বাচিত হই। কিন্তু অত্র চাঁদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শামসুন্নাহার মহিদ বিভিন্নভাবে নির্বাচনটি বানচাল করার জন্য ষড়যন্ত্র করলেও আমাদের মুরুব্বি ফরিদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য, সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশারফ হোসেনের হস্তক্ষেপে তিনি ষড়যন্ত্রে সুবিধা করতে পারেননি। সে সময় তিনি আমার প্যানেলের বিপরীতে তাঁর পছন্দের প্যানেল দিয়েছিলেন। এরপরও আমরা স্কুলের সমস্ত অনুষ্ঠানে তাঁকে আমরা সম্মানিত করে নিমন্ত্রণ করে থাকি।’

বঙ্গেশ্বরদী সম্মিলনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, শুধু নামের কারণে যদি একটি স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা বন্ধ করে দেওয়া হয় তাহলে এর চেয়ে দুঃখের কিছু নেই।

এ ব্যাপারে চাঁদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামসুন নাহার মহিদের বক্তব্য জানতে চাইলে মুঠোফোনে কল দিলে তিনি ফোনে কথা চাননি। তিনি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, যা বলার সামনা-সামনি এসে বলেন।

সিআইপি ড. যশোদা জীবন দেবনাথের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমাকে অতিথি করা নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান শামসুন নাহার মহিদ যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে আমি খুবই মর্মাহত ও দুঃখ পেয়েছি। বঙ্গেশ্বরদী সম্মিলনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অনুষ্ঠানে যেতে পারলে স্কুলের উন্নয়নে অবদান রাখতে পারতাম। কিন্তু চেয়ারম্যান তা থেকে বঞ্চিত করলেন।