সূত্র-আমাদের সময়.কম : ১৮/১২/২০১৫
মাজাহারুল ইসলাম: দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন উপায়ে নির্যাতন করে বাংলাদেশের হিন্দুদের দেশ ত্যাগে বাধ্য করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় হিন্দু মহাজোট। সম্প্রতি দিনাজপুর ইসকন মন্দিরে হামলা এবং রবীন্দ্রনাথ রায়সহ কয়েকজন ভক্তকে হত্যার প্রচেষ্টাকারীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার ও শাস্তি দিতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ব্যর্থ হয়েছে বলেও অভিযোগ সংগঠনটির।
শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয় হিন্দু মহাজোট আয়োজিত এক মানববন্ধনে বক্তারা এ সব অভিযোগ করেন। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক, অ্যাডভোকেট দীনবন্ধু রায়, রুপানুগ গৌর দাস, অধ্যাপক হীরেন বিশ্বাস, মানিক চন্দ্র সরকারসহ প্রমূখ।
গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক বলেন, ক্ষমতার ছত্রছায়া থেকে সমাজের প্রভাবশালীরা বাড়ি-ঘর, জমিজমা দখল করে আসছে। এছাড়া হত্যা, হত্যা প্রচেষ্টা, ধর্মান্তর, মঠ-মন্দিরে হামলা, প্রতিমা ভাংচুর ও কিশোরী অপহরণসহ ভয়ভীতি প্রদর্শন করে প্রতিদিনই বাংলাদেশের কোনো না কোনো স্থান থেকে হিন্দুদের দেশত্যাগে বাধ্য করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তার। এ সব কারণে বাংলাদেশ থেকে হিন্দুরা আজ বিলুপ্তপ্রায় বলেও জানান মহাসচিব।
তিনি বলেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর যারা নির্য়াতন করছে, তাদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করতে ব্যর্থ হয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। দোষীদের বিচার হচ্ছেনা বিধায় হিন্দুদের ওপর নির্যাতন বেড়ে চলছে। রমনা কালী মন্দিরে চলমান মহানামযজ্ঞ অনুষ্ঠানে প্রবেশে বাঁধা, ভক্তদের উপর হামলা, পুলিশী লাঠিচার্জ, মহিলাদের শ্লীলতাহানি, কুষ্টিয়া ও গোপালগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানে প্রতিমা ভাঙচুর করেছে। পটুয়াখালীতে হিন্দু পরিবার উচ্ছেদ, সুনামগঞ্জে নাবালিকা অপহরণ ও ধর্মান্তর, কান্তাজীর মন্দিরে বোমা হামলা, নেত্রকোনা জেলার বারাহাট্রা উপজেলায় অর্জুন বিশ্বাসকে হত্যা করেছে। ফরিদপুর হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সেক্রেটারি আলোক সেন ও দিনাজপুর ইসকন মন্দিরে হামলা এবং রবীন্দ্রনাথ রায়সহ কয়েকজন ভক্তকে হত্যার প্রচেষ্টাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছেন গোবিন্দ চন্দ্র।
হিন্দুদের অস্তিত্ব রক্ষায় জাতীয় সংসদে ৬০টি আসন সংরক্ষিত রাখার দাবি জানিয়ে দীনবন্ধু রায় বলেন, দেশে নির্বাচন এলেই হিন্দুদের ওপর নির্যাতন বেড়ে যায়। বর্তমান নির্বাচন পদ্ধতিতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কোনো প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত না হওয়া সত্ত্বেও ভোট দেওয়া না দেওয়াকে কেন্দ্র করে হিন্দু সম্প্রদায় দুঃশ্চিন্তার মধ্যে দিন কাটায়। আসন্ন পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন চলাকালে অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কায় হিন্দু সম্প্রদায় আতঙ্কিত বলেও উল্লেখ করেন তিনি।