ভারতের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও অ্যাক্টিভিস্ট গৌরী লঙ্কেশকে (৫৫) গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পশ্চিম বেঙ্গালুরুর রাজেশ্বরী নগরে তাঁর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিয়ে কাজ করে এমন একটি দলের সঙ্গে যুক্ত থাকা গৌরী লঙ্কেশ বামপন্থী ও হিন্দুত্ববাদবিরোধী হিসেবেও বেশ পরিচিত ছিলেন। ২০১৬ সালের নভেম্বরে বিজেপির সংসদ সদস্য প্রহ্লাদ জোশির করা মামলায় তাঁর (গৌরী) ছয় মাসের জেল হয়। পরে গৌরী জামিনে বেরিয়ে আসেন।
ঘটনা সম্পর্কে পুলিশ বলছে, গৌরীর পশ্চিম বেঙ্গালুরুর বাড়ির বারান্দায় তাঁর লাশ পড়ে থাকতে দেখা যায়। তিনি যখন বাড়ি পৌঁছে ঘরে ঢুকছিলেন, তখন খুব কাছ থেকে তাঁকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
বেঙ্গালুরুর পুলিশ কমিশনার টি সুনীল কুমারের বরাত দিয়ে আইএএনএস বলছে, ‘মোট সাতটি গুলি পাওয়া গেছে। যার মধ্যে চারটি লক্ষ্যভেদ করতে ব্যর্থ হয় আর দুটি বুলেট গৌরীর বুকের আশপাশে লাগে এবং বাকি একটি তাঁর কপালে লাগে।’
ঘটনাস্থল থেকে চারটি কার্তুজ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরে গৌরীর মরদেহ ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ময়নাতদন্তের জন্য।
কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধারামাইয়া বলেন, গৌরী লঙ্কেশ হত্যার অভিযোগে পুলিশের একটি তদন্ত দল গঠন করা হয়েছে। অপরাধীরা যাতে ধরা পড়ে, সে জন্য পুলিশ কমিশনার ও পুলিশের মহাপরিচালকের সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা আশা করছি, অপরাধীরা অবশ্যই ধরা পড়বে।’
গৌরীকে হত্যার বিষয়টি মেনে নিতে না পেরে অনেকেই টুইটারে তাঁদের আহাজারি প্রকাশ করেছেন। কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন লেখেন, ‘সাহসী সাংবাদিক-অ্যাক্টিভিস্ট গৌরী লঙ্কেশকে বেঙ্গালুরুতে গুলি করে হত্যার বিষয়টি শোনার পর আমি গভীরভাবে মর্মাহত। আশা করছি, খুব তাড়াতাড়ি অপরাধীরা ধরা পড়বে।’
‘গৌরী লঙ্কেশ পত্রিকে’ নামে একটি ট্যাবলয়েট সাপ্তাহিকের সম্পাদক ছিলেন গৌরী লঙ্কেশ।
এর দুই বছর আগে ২০১৫ সালে হাম্পি ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর এম এম কালবুর্গিকে (৭৭) কর্ণাটকে তাঁর বাড়ির দরজার সামনে গুলি করে হত্যা করা হয়। পুলিশ আজও এ মামলায় কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।