ঢাকা, এপ্রিল ১৯, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ০২:১৬:৪৪

এ পাতার অন্যান্য সংবাদ

একীভূত হতে চাওয়া ব্যাংকের সম্পদের দাম যেভাবে নির্ধারণ করা হবে টেলিভিশন ও অনলাইন সাংবাদিকদের সুযোগ-সুবিধা প্রদানের দাবি বিএফইউজে’র দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নিয়ে বিএনপির মাথাব্যথার কারণ নেই : ওবায়দুল কাদের বিএনপি একটি রাজনৈতিক দৈত্যের দল : পররাষ্ট্রমন্ত্রী শান্তি বজায় রাখার জন্য যা-যা করার আমরা করবো: বান্দরবানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবারের ঈদ যাত্রাও স্বস্তিদায়ক হচ্ছে: সেতুমন্ত্রী কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট শিশুদের নতুন করে বাঁচার পথ খুলে দেয় : সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিস্ফোরণ: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫ আসন্ন পবিত্র রমজানে সরকারিভাবে বড় ইফতার পার্টি না করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর পুলিশকে জনগণের বন্ধু হয়ে নিঃস্বার্থ সেবা দেয়ার নির্দেশ রাষ্ট্রপতির

স্বাগত ১৪২২ বঙ্গাব্দ, শুভ নববর্ষ

| ১ বৈশাখ ১৪২২ | Tuesday, April 14, 2015

 

ঢাকা: মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা/অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা…। শুদ্ধ সুন্দর এ প্রার্থনার মধ্য দিয়ে আজ নতুন বছর শুরু করবে বাঙালি।

পুরনো দিনের শোক-তাপ-বেদনা-অপ্রাপ্তি-আক্ষেপ ভুলে অপার সম্ভাবনার দিকে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। অন্ধকার ঠেলে, সকল ভয় জয় করার মানসে নতুন করে জেগে উঠবে।

বিদায় ১৪২১। স্বাগত ১৪২২ বঙ্গাব্দ। আজ শুধু উৎসব নয়, সমাজের সকল অন্যায়-অসাম্য-সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে জ্বলে ওঠার নতুন শপথ নেয়ার দিন।

গত বছরের সব অপ্রাপ্তি ভুলে গিয়ে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচনের লগ্নে একটি আত্মমর্যাদাসম্পন্ন অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক ও সুখী-সমৃদ্ধ দেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়েই মঙ্গলবার বাঙালি পালন করবে সার্বজনীন এ উৎসব। নতুন বছরে নবচেতনায় উদ্বুদ্ধ জাতি আরও সোচ্চার হবে প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে।

বাংলা নববর্ষের সঙ্গে সবচেয়ে নিবিঢ় সম্পর্ক কৃষির। এ সম্পর্কের সূত্রেই বাংলা সাল প্রবর্তন করেন সম্রাট আকবর। তাঁর আমলেই প্রবর্তন হয় বাংলা সাল। এখন তা বঙ্গাব্দ নামে পরিচিত। বৈশাখ নামটি নেয়া হয়েছিল নক্ষত্র বিশাখার নাম থেকে। কালের বিবর্তনে নববর্ষের সঙ্গে সম্পর্কিত অনেক পুরনো আচার অনুষ্ঠানের বিলুপ্তি ঘটেছে। আবার যুক্ত হয়েছে অনেক নতুন আয়োজন।

বাংলা বছরের প্রথম দিনে হালখাতার প্রচলন এখনও হারিয়ে যায়নি। আগের মতো হালখাতার আয়োজন না থাকলেও গ্রামে এখনও এর প্রচলন আছে। রাজধানীর পুরান ঢাকায়ও হালখাতার আয়োজন দৃশ্য চোখে পড়ে।

বছরের প্রথম এ দিন দেশের বিভিন্ন জেলা শহরেও বসছে বৈশাখী মেলা। গ্রামবাংলার বৈশাখী মেলা শহরাঞ্চলেও সম্প্রসারিত হয়েছে।  তবে বৈশাখী মেলায় গ্রামীণ ঐতিহ্যের সঙ্গে এখন মিশেছে আধুনিকতা।

রমনার বটমূলে ষাট দশকে বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনার নবউন্মেষকালে ছায়ানট সেই যে কাকডাকা ভোরে নববর্ষকে আবাহনী গান গেয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করেছিল, সেটি আজ রাজধানীবাসীর সবচেয়ে বড় আকর্ষণ। পহেলা বৈশাখ রমনায় পালন করতে ঢাকাবাসী ছাড়াও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকেই লোকজন জড়ো হয়। মঙ্গলবার সব পথ মিশে যাবে রমনায় এসে।

স্থানটির পরিচিতি বটমূল হলেও প্রকৃত পক্ষে যে গাছের ছায়ায় মঞ্চ তৈরি হয় সেটি বট গাছ নয়, অশ্বত্থ গাছ । ১৯৬০-এর দশকে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর নিপীড়ন ও সাংস্কৃতিক সন্ত্রাসের প্রতিবাদে ১৯৬৭ সাল থেকে ছায়ানটের এই বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের সূচনা।

বাঙালির এই প্রাণের উৎসবকে ঘিরে রমনা পার্কসহ বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার পুরোটাই  এ উপলক্ষে সারাদেশই নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

নুপা আলম ও তুষার তুহিন :নববর্ষের প্রথম দিনে বদলে যাবে রাজধানী ঢাকার দৃশ্যপট। ভোর সোয়া ছ’টায় রমনার বটমূলে ছায়ানটের প্রভাতী অনুষ্ঠানে ভোরের সুর তুলে শুরু হবে বর্ষবরণের আনুষ্ঠানিকতা। এর সঙ্গে সঙ্গেই রমনার বটমূল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, ধানমন্ডির লেকের পাড়, সংসদ ভবনসহ শেরেবাংলা নগর, গুলশান, বনানী, উত্তরা, মিরপুর, যাত্রাবাড়ী, অর্থাৎ এক কথায় পুরো রাজধানীই বৈশাখী আমেজে মেতে উঠবে। কাকডাকা ভোর থেকেই নগরীর পথে ঢল নামবে বাঙালি সংস্কৃতি লালনকারী আনন্দপিয়াসী নগরবাসীর। সবার পরনেই থাকবে বৈশাখী রং লাল-সাদার পাশাপাশি অন্যান্য রঙের বাহারি নকশার পোশাক।

নগরীর অভিজাত রেস্টুরেন্টগুলো এবং রমনা ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের আশপাশে ভ্রাম্যমাণ রেস্টুরেন্টে থাকবে বাঙালি খাবার।

বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে ১৪ এপ্রিল (মঙ্গলবার) সরকারি ছুটির দিন। দেশের শীর্ষ অনলাইন সংবাদপত্র, মুদ্রিত জাতীয় সংবাদপত্রগুলো বাংলা নববর্ষের বিশেষ দিক তুলে ধরে ক্রোড়পত্র বের করবে। সরকারি ও বেসরকারি টিভি চ্যানেলে নববর্ষকে ঘিরে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালা প্রচার করা হবে।
বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশেষ বাণী দিয়েছেন।

0

রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে অতীতের সব গ্লানি ও বিভেদ ভুলে বাংলা নববর্ষে জাতীয় জীবনের সর্বক্ষেত্রে ঐক্য ও সংহতি আরও সুদৃঢ় করবে এবং অফুরন্ত আনন্দের বার্তা বয়ে আনবে বলে বাংলা নববর্ষে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন। নববর্ষের এই আনন্দঘন দিনে রাষ্ট্রপতি দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ‘আজ পহেলা বৈশাখ, ১৪২২ বঙ্গাব্দ। শুভ নববর্ষ।’

প্রধানমন্ত্রী বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে দেশবাসী ও  ‘আমি আশা করি, পহেলা বৈশাখে বাঙালি সংস্কৃতির এ চর্চা আমাদের জাতিসত্ত্বাকে আরও বিকশিত করবে। সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মান্ধতা, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার শক্তি যোগাবে। রাজনীতির নামে আগুনে পুড়িয়ে নিরীহ মানুষ হত্যা ও দেশের সম্পদ ধ্বংসকারী অপশক্তির বিরুদ্ধে আমাদের আরও ঐক্যবদ্ধ করবে।’

এছাড়া বিরোধী দল নেতা রওশন এরশাদ, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দেশবাসীকে বৈশাখের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

Bottom of Form