thebdtimes24.com

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার টেকেরঘাটের শহীদ সিরাজ লেকে নিখোঁজের দুদিন পর আজ সোমবার সকালে পর্যটক ওয়াহিদ পলিনের লাশ ভেসে ওঠে। পরে তাহিরপুর থানার পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যায়।

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার টেকেরঘাটের শহীদ সিরাজ লেকে নিখোঁজের দুদিন পর আজ সোমবার সকালে পর্যটক ওয়াহিদ পলিনের (২৮) লাশ ভেসে ওঠে। পরে তাহিরপুর থানার পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যায়।

নিহত ওয়াহিদ পলিন কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার লাজুড় গ্রামের বাসিন্দা মো. মোস্তফা কামালের একমাত্র ছেলে। তাঁরা বর্তমানে ঢাকার মিরপুরে বসবাস করছেন। ওয়াহিদ পলিন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা জানান, গত শুক্রবার ঢাকা থেকে পাঁচ বন্ধু সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার টাঙ্গুয়ার হাওরে বেড়াতে আসেন। রাতে হাওরে থেকে শনিবার দুপুরে তাঁরা ভারত সীমান্তবর্তী টেকেরঘাটের শহীদ সিরাজ লেকে (অনেক পর্যটকের কাছে নিলাদ্রী লেক নামে পরিচিত) গোসল করতে নামেন। একপর্যায়ে ওয়াহিদ পলিন পানিতে ডুবে যান। তখন বেশ কয়েকজন পর্যটক তাঁকে উদ্ধারের চেষ্টা করলেও লেক অনেক গভীর থাকায় পারেননি।

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার টেকেরঘাটের শহীদ সিরাজ লেকে ডুবে নিহত পর্যটক ওয়াহিদ পলিন (পেছনে লাইফ জ্যাকেট পরা)। ছবি : সংগৃহীত

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ফেসবুকভিত্তিক ভ্রমণ দল বিন্দাসের এডমিন রেদওয়ান খান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘ওয়াহিদ পলিনরা ভারত সীমান্তের পাশ দিয়ে নীলাদ্রি লেকে গোসল করতে নামে। সীমান্তের খুব কাছাকাছি হওয়ায় ওই পাশ দিয়ে স্থানীয় লোকজনও নামে না। আমাদের চার গ্রুপ মিলে ওই দিন দেড় শতাধিক ট্রাভেলার সেখানে যায়। গ্রুপের সাঁতার না পারা সবাইকেই আমরা লাইফ জ্যাকেট পরতে বাধ্য করেছিলাম। কিন্তু ওই পাঁচ বন্ধু আলাদা এসেছিলেন, যাঁদের কেউই সাঁতার জানতেন না এবং লাইফ জ্যাকেটও পরেননি।’

রেদওয়ান খান আরো বলেন, ‘ওয়াহিদ পলিন ডুবে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গ্রুপের তিন-চারজন নিয়ে আমিই প্রথম ঝাঁপ দেই। কিন্তু পাথর কোয়ারি হওয়ায় ডুবে যাওয়ার স্থানটি অনেক গভীর ছিল। পানির চাপও ছিল প্রচুর। কয়েকটা ডুব দিয়ে নিজেই অসুস্থ হয়ে পড়ি। কিছুই করার ছিল না আর।’

প্রত্যক্ষদর্শী এলাকাবাসী জানান, নিখোঁজের পর থেকে স্থানীয় প্রশাসন ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদল লেকে অভিযান চালায়। কয়েকদিন ধরে বৃষ্টিপাত বেশি হওয়ায় উদ্ধার অভিযান ব্যাহত হয়। এরপর আজ সকাল ৮টার দিকে লাশটি ভেসে উঠলে পুলিশ পলিনের লাশ উদ্ধার করে নিয়ে যায়।

টাঙ্গুয়ার হাওরে কর্তব্যরত জেলা প্রশাসনের নির্বাহী হাকিম মো. শাকিল আহমদ জানান, বৃষ্টিপাত বেশি হওয়ায় উদ্ধার অভিযানে সমস্যা হচ্ছিল। পরে আজ সকালে লাশ ভেসে উঠলে পুলিশ গিয়ে উদ্ধার করে। নিহতের পরিবারের লোকজনও ঘটনাস্থলে ছিলেন।

এ ব্যাপারে তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নন্দন কুমার ধর জানান, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। লেকের পানিতে ডুবে মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশ একটি অপমৃত্যুর মামলা করেছে।