সাংবাদিক প্রবীর শিকদারকে ডিবির লোক ধরে নিয়ে গেছেন বলে অভিযোগ করেছেন তাঁর পরিবার। আজ সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে শেরে বাংলা নগর থানা-পুলিশের সহায়তার তাঁকে ডিবি ধরে নিয়ে যায় বলে জানান প্রবীর শিকদারের স্ত্রী অনিতা শিকদার।
অনিতা শিকদার প্রথম আলোকে বলেন, আজ সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে তেজগাঁওয়ের ইন্দিরা রোডের প্রবীর শিকদারের অনলাইন পত্রিকার কার্যালয়ে শেরে বাংলা নগর থানার একদল পুলিশ আসে। তাঁরা প্রবীরকে থানায় যেতে হবে বলে জানান। কী কারণে থানায় যেতে হবে জানতে চাইলে পুলিশের দলটি প্রবীর শিকদারকে জানায়, তিনি মুসা বিন শমসেরের বিরুদ্ধে শেরে বাংলা নগর থানায় যে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে গিয়েছিলেন সে বিষয়ে পুলিশ কথা বলবে।
এ সময় ওই অনলাইন পত্রিকা কার্যালয়ে ছিলেন প্রবীর শিকদারের ছেলে সুপ্রিয় শিকদার। পুলিশ প্রবীরকে পিকআপ ভ্যানে তোলার পর ভ্যানটিকে মোটরসাইকেলে করে অনুসরণ করেন সুপ্রিয় শিকদার। সুপ্রিয় বলেন, পুলিশ খামার বাড়ি মোড়ে গিয়ে তাঁর বাবাকে পিকআপ থেকে একটি প্রাইভেট কারে তুলে দেয়। প্রাইভেট কারটি ডিবির বলে পরে পুলিশ সুপ্রিয়কে জানায়। পরে সুপ্রিয় গাড়িটির পেছন পেছন মিন্টু রোডের ডিবি কার্যালয় পর্যন্ত যান। এখনো তিনি ডিবি কার্যালয়ের ফটকে রয়েছেন এবং তাঁর বাবাকে ভেতরে রাখা হয়েছে বলে তিনি জানান।
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের জনসংযোগ বিভাগরে উপকমিশনার মুনতাসিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, প্রবীর শিকদার সম্প্রতি নিজের ফেসবুক পোস্টে নিজের নিরাপত্তাহীনতার কথা প্রকাশ করেছেন। তিনি লিখেছেন, তিনি পুলিশের কাছে গিয়ে নিরাপত্তা পাননি। তিনি জনতার আদালতে বিচার দিয়েছেন। তাঁর কিছু হলে দুই তিনজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি দায়ী থাকবেন বলেও তিনি জানান। এ সব বিষয়ে শোনার জন্য তাকে নিয়ে আসা হয়েছে।
২০০১ সালে দৈনিক জনকণ্ঠের ফরিদপুর প্রতিনিধি থাকাকালে সন্ত্রাসীদের হামলায় মারাত্মক আহত হন প্রবীর শিকদার। এ ঘটনায় চিকিৎসকেরা প্রবীর শিকদারের একটি পা কেটে ফেলেন। এরপর দেশে বিদেশে চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে তিনি দৈনিক সমকালে যোগ দেন। এরপর তিনি কালেরকন্ঠে যোগ দেন। বর্তমানে তিনি একটি অনলাইন পত্রিকা চালান। জনকণ্ঠে থাকাকালীন তিনি ‘সেই রাজাকার’ শিরোনামে একটি ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। সেই প্রতিবেদেন তিনি বিশেষ কিছু ব্যাক্তির মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার বিষয়ে লেখেন। প্রবীর শিকদার তখন থেকে অভিযোগ করে আসছিলেন ওই ধারাবাহিক প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর ওপর হামলা হয়।