ঢাকা, এপ্রিল ২৬, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ০৫:২৫:৫৩

সরকার রোহিঙ্গাদের মাঝে জন্মনিয়ন্ত্রণের সকল উপকরণ বিতরণ করবে

| ৫ আশ্বিন ১৪২৪ | Wednesday, September 20, 2017

ঢাকা : সরকার কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে ব্যাপক প্রচারণা চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ লক্ষ্যে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মাঝে জন্মনিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত সব ধরনের উপকরণ বিতরণ করবে।
দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে কক্সবাজারে অনুপ্রবেশকারী মিয়ানমারের নাগরিক সংখ্যালঘু রোহিঙ্গারা যাতে বাংলাদেশে জন্মগতভাবে সংখ্যায় বাড়তে না পারে এ জন্য সরকার জন্মনিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত সব ধরনের উপকরণ বিতরণ করবে। একই সাথে এ ব্যাপারে প্রচারণা চালাবে। সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রোহিঙ্গারা যাতে তাদের পরিবারের লোকসংখ্যা কমিয়ে রাখতে পারে সে লক্ষ্যে জন্মনিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হচ্ছে। সে অনুযায়ী জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়িসহ বিতরণসহ জন্মনিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত অন্যান্য ব্যবস্থাও সরকারিভাবে দেয়া হবে।
এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বাসসকে জানান, আমরা কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য ইতোমধ্যে ৬টি মেডিকেল টিম পাঠিয়েছি। এর মধ্যে তিনটি টিম টেকনাফে এবং অন্য তিনটি টিম উখিয়ায় কাজ করছে। এসব মেডিকেল টিম সাধারণ চিকিৎসার পাশাপাশি যৌনরোগ ও জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি সম্পর্কে রোহিঙ্গাদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টিতে প্রচারণা চালাচ্ছে।
সরকারি কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞরা জানান, রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের অতীত ইতিহাস হচ্ছে তাদের জন্মহার অনেক বেশী। রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে জন্মনিয়ন্ত্রণে সরকারের এ পদক্ষেপ তাদের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আবুল কালাম আজাদ বাসসকে বলেন, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের নেতৃত্বে একটি চিকিৎসক দল ইতোমধ্যেই এ সপ্তাহের শুরুতে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করেন। এ টিম শরণার্থী শিবির পরিদর্শনের পর জন্মনিয়ন্ত্রের কৌশল নির্ধারণ করেছে। তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে কনডম, জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি ও ইনজেকশন সরবরাহ করা হবে।
রোহিঙ্গা পরিবারের সদস্যরা জন্মনিয়ন্ত্রণের পদ্ধতির ব্যাপারে সচেতন নয় উল্লেখ করে ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, এ জন্য অধিকাংশ রোহিঙ্গা পরিবারে ৫ থেকে ৭ জন সন্তান রয়েছে। এর আগে কুতুবখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের চিকিৎসকরা একজনের শরীরে এইচআইভি জীবাণু বহনের সন্ধ্যান পেলে তার আলাদাভাবে যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
একটি মেডিকেল টিম রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলো পরিদর্শন করে। এ টিমটি যৌন রোগ বিশেষ করে এইচআইভি/এইডস জীবানু কারো শরীরে রয়েছে কি-না তা নির্ধারণে কাজ করছে বলেও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আবুল কালাম আজাদ জানান। তিনি বলেন, চিকিৎসকরা ১ লাখ ২০ হাজার টিকা ভ্যাকসিন, ৪০ হাজার পোলিও ভ্যাসসিন, ৩৮ হাজার ভিটামিন ট্যাবলেট রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মাঝে বিতরণ করছে। সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের চিকিৎসক ডা. এ এস আলমগীর বাসসকে জানান, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অনেকেই অপুষ্টি ও বিশুদ্ধ পানির অভাবে ডায়রিয়াসহ নানা সংক্রামক রোগে ভুগছে।