ঢাকা, মার্চ ২৮, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, স্থানীয় সময়: ১৫:০০:৫৫

এ পাতার অন্যান্য সংবাদ

কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট শিশুদের নতুন করে বাঁচার পথ খুলে দেয় : সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিস্ফোরণ: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫ আসন্ন পবিত্র রমজানে সরকারিভাবে বড় ইফতার পার্টি না করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর পুলিশকে জনগণের বন্ধু হয়ে নিঃস্বার্থ সেবা দেয়ার নির্দেশ রাষ্ট্রপতির পণ্যমূল্য সহনীয় রাখতে সরকারের পাশাপাশি জনগণেরও নজরদারি চাই : সংসদে প্রধানমন্ত্রী রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে থাকবে : প্রধানমন্ত্রী দিনের তাপমাত্রা বাড়তে পারে বিরোধীদলীয় নেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের ও উপনেতা আনিসুল ইসলাম রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বিশ্বব্যাপী প্রচেষ্টার ওপর গুরুত্বারোপ প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় আসার নিশ্চয়তা না পেয়ে বিএনপি নির্বাচন বর্জন করেছে : প্রধানমন্ত্রী

সমবায় দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীগ্রামের অর্থনীতিকে সংহত করতে হবে

| ১৮ কার্তিক ১৪২১ | Sunday, November 2, 2014

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ধনী-গরিব বৈষম্য দূর করতে হলে গ্রামের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে হবে। গ্রামে অর্থের সঞ্চালন বাড়াতে হবে, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। গ্রামে উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করার ব্যবস্থা করতে হবে। এসব শুধু করতে পারে সমবায়। গতকাল শনিবার সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ৪৩তম জাতীয় সমবায় দিবসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সমবায়বিষয়ক কার্যক্রমে সফলতা অর্জনের জন্য শ্রেষ্ঠ সমবায়ী প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কার প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী। ১০টি ক্যাটাগরিতে ২০১২ সালের জাতীয় সমবায় পুরস্কার দেওয়া হয়। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব এম এ কাদের সরকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী মো. মসিউর রহমান রাঙ্গা ও সমবায় অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মফিজুল ইসলাম বক্তব্য দেন। প্রধানমন্ত্রী ১৯৭২ সালের ৩০ জুন বাংলাদেশ জাতীয় সমবায় ইউনিয়ন আয়োজিত সমবায় সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বক্তব্য উদ্ধৃত করেন। তিনি বলেন, দেশের ৬৪টি জেলার ৬৬টি উপজেলায় ‘সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন কর্মসূচি’ প্রকল্পের আওতায় চার হাজার ২৭৫টি গ্রামে গ্রাম সমবায় সমিতি গঠন করা হয়েছে। প্রতিটি উপজেলাকে এই কর্মসূচির আওতায় আনা হবে। নারীর ক্ষমতায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নারীর ক্ষমতায়নের কথা বললেই হবে না, তাদের আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করতে হবে।’ পারিবারিকভাবেও সমবায়ের মাধ্যমে পণ্য উৎপাদনের পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ‘এতে করে সম্পদ নিয়ে বিভেদ কমে যাবে। ঝগড়াঝাটি কমে যাবে।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নদীভাঙনে অনেক মানুষ গৃহহারা হয়ে যায়। তারাও মানুষ। একদিকে দেখা যায় বিশাল বিশাল অট্টালিকা। বিদেশ থেকে আনা ফার্নিচার আর ঝাড়বাতি, বিলাসবহুল জীবনযাপন; অন্যদিকে অনেক মানুষ একটু মাথা গোঁজার ঠাঁই পায় না। তাদের রাস্তার পাড়ে বসে থাকতে হয়, রেললাইনের পাশে বস্তিতে থাকতে হয়। তাদের মানবেতর জীবনযাপন করতে হবে কেন? এ বৈষম্য কেন থাকবে?’ অনুষ্ঠানে পুরস্কার গ্রহণ করেছে কৃষিভিত্তিক গ্রাম উন্নয়নে চাঁপাইনবাবগঞ্জের দ্বারিয়াপুর পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লিমিটেড, সঞ্চয় ঋণদানে ঢাকার সম্প্রীতি কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লিমিটেডের সদস্য এমদাদ হোসেন মালিক, দুগ্ধ সমবায়ে পাবনার হাটুরিয়া জগন্নাথপুর প্রাথমিক দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় সমিতি লিমিটেড, মহিলা সমবায়ে কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ মহিলা সমবায় সমিতি লিমিটেড, বহুমুখী সমবায়ে খুলনার দৌলতপুর বাজার বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেড। এ ছাড়া মৎস্যজীবী সমবায়ে পুরস্কার পেয়েছে সুনামগঞ্জের সোমা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেড, মুক্তিযোদ্ধা সমবায়ে যশোরের শার্শা থানা মুক্তিযোদ্ধা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেড, ভূমিহীন সমবায়ে ময়মনসিংহের পাটগুদাম দুলদুল ক্যাম্প ভূমিহীন সমবায় সমিতি লিমিটেড, পেশাভিত্তিক সমবায়ে পিরোজপুরের সাফা বন্দর ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ভোগ্যপণ্য সরবরাহ সমবায় সমিতি লিমিটেড এবং পরিবহন শ্রমিক কর্মচারী সমবায়ে কুড়িগ্রামের কুড়িগ্রাম জেলা মটর শ্রমিক সমবায় সমিতি লিমিটেড পুরস্কার নিয়েছে। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, দেশে এখন এক লাখ ৯৪ হাজার সমবায় সমিতির এক কোটি দুই লাখ সদস্য রয়েছে। প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার প্রায় ২০ শতাংশ মানুষ সমবায় সমিতির সদস্য। তাদের কার্যকর মূলধনের পরিমাণ প্রায় ১১ হাজার ৮৪৪ কোটি টাকা। স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, সমবায়ের উন্নতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলেই হয়েছে। তিনি বলেন, পণ্য উৎপাদন ও পণ্য বহুমুখীকরণে সমবায়ীদের আরো কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে। মধুর মতো কাঁচামালকে শুধু বোতলজাত না করে তা দিয়ে বিভিন্ন জিনিস তৈরি করতে হবে। এ কাজ করতে পারে সমবায়ী প্রতিষ্ঠানগুলো। অনেকে বলে সমবায়ী প্রতিষ্ঠানের কোনো সাফল্য নেই। এটা ঠিক না, কারণ বিশ্বে অনেক বড় বড় প্রতিষ্ঠান সমবায়ের মাধ্যমে সফলতা অর্জন করেছে। সমবায় প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, ‘আমরা এ দেশকে নতুন করে সাজাতে চাই। সমবায়ী প্রতিষ্ঠানকে আরো কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে কৃষিভিত্তিক পণ্য বাজারজাত করার ক্ষেত্রে। ফরমালিনমুক্ত কৃষিপণ্য বাজারজাত করতে সমবায়ীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এ ক্ষেত্রে সরকার আরো সহযোগিতা দেবে।’ এর আগে সকাল ৮টায় রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউ থেকে সমবায়ীদের বিশাল শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রার নেতৃত্ব দেন সমবায় প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান রাঙ্গা। পরে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সমবায়ীদের উৎপাদিত পণ্যসামগ্রী পরিদর্শন করেন তিনি। সে সময় মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামসহ স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।