ঢাকা, এপ্রিল ২৬, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ০২:৫৭:২৮

এ পাতার অন্যান্য সংবাদ

একীভূত হতে চাওয়া ব্যাংকের সম্পদের দাম যেভাবে নির্ধারণ করা হবে টেলিভিশন ও অনলাইন সাংবাদিকদের সুযোগ-সুবিধা প্রদানের দাবি বিএফইউজে’র দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নিয়ে বিএনপির মাথাব্যথার কারণ নেই : ওবায়দুল কাদের বিএনপি একটি রাজনৈতিক দৈত্যের দল : পররাষ্ট্রমন্ত্রী শান্তি বজায় রাখার জন্য যা-যা করার আমরা করবো: বান্দরবানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবারের ঈদ যাত্রাও স্বস্তিদায়ক হচ্ছে: সেতুমন্ত্রী কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট শিশুদের নতুন করে বাঁচার পথ খুলে দেয় : সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিস্ফোরণ: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫ আসন্ন পবিত্র রমজানে সরকারিভাবে বড় ইফতার পার্টি না করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর পুলিশকে জনগণের বন্ধু হয়ে নিঃস্বার্থ সেবা দেয়ার নির্দেশ রাষ্ট্রপতির

সমন্বয়ের মাধ্যমে রোহিঙ্গা সমস্যা মোকাবেলা করতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ

| ২৯ ভাদ্র ১৪২৪ | Wednesday, September 13, 2017

কক্সবাজার : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে আসা মিয়ানমারের শরণার্থীদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ ও অন্যান্য বিষয়ে একে অপরের সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করতে বেসামরিক প্রশাসন, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড এবং সরকারের অন্যান্য সংস্থাকে নির্দেশ দিয়েছেন।
তিনি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সঙ্গে পরামর্শসহ সমন্বয়ের বিষয়টি দেখাশোনা করার জন্য মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে পুরো ত্রাণ তৎপরতা ও শরণার্থী ব্যবস্থাপনা পরিকল্পিতভাবে সামাল দেয়া যায়।
গতকাল কক্সবাজার সার্কিট হাউজে জনপ্রতিনিধি, বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তা এবং স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী এই নির্দেশ দেন।
শেখ হাসিনা দেশে নিষিদ্ধ পণ্য অথবা অস্ত্র ও বিস্ফোরক পাচার রোধে শরণার্থী এবং ত্রাণ কর্মীদের মালামাল ও লাগেজের ব্যাপারে সতর্ক থাকার জন্য কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।
প্রধানমন্ত্রী প্রতিটি শরণার্থীকে পরিচয়পত্র দেয়ার জন্য কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন, যাতে তাদেরকে মিয়ানমারের নাগরিক হিসেবে সহজে চিহ্নিত করা যায়।
প্রধানমন্ত্রী মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর নির্যাতনের সূত্র ধরে কক্সবাজারে কেউ যাতে সাম্প্রদায়িক গোলযোগ সৃষ্টি করতে না পারে সে ব্যাপারেও সতর্ক থাকতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন। তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, মিয়ানমারের সশস্ত্র দুর্বৃত্তরা বাংলাদেশেও গোলযোগ সৃষ্টি করতে পারে।
সন্ত্রাসের প্রতি তাঁর সরকারের জিরো টলারেন্সের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ কখনও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডকে সমর্থন করে না। তিনি বলেন, এটি আমাদের মূলনীতি। বাংলাদেশ কখনও তার ভূমিকে প্রতিবেশী অথবা অন্য কোন দেশের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে ব্যবহার করতে দেবে না।
প্রধানমন্ত্রী যেসব শিশু রোগে ভুগছে এবং সংঘাতে বাবা-মা হারিয়েছে তাদের প্রতি বিশেষ নজর দেয়ার জন্য কর্মকর্তা ও চিকিৎসকদের প্রতি নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, এসব শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং তাদের পাচার রোধ করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি সংগঠন ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ত্রাণ তৎপরতা তত্ত্বাবধানের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে এসব কর্মকান্ডে স্থানীয় নির্বাচিত প্রতিনিধি এবং রাজনীতিক নেতৃবৃন্দকে সম্পৃক্ত করতে প্রশাসনকে নির্দেশ দেন।
পর্যটন শহর কক্সবাজারের উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্পের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এসব প্রকল্পে বিদেশী বিনিয়োগ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তাই বিদেশী বিনিয়োগকারীদের নিরাপত্তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সরকারকে সেই নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী এ অঞ্চলে যেকোন ধরনের নাশকতামূলক কর্মকান্ড রোধে টহল ও পর্যবেক্ষণ জোরদার করতে সেনাবাহিনী, বিজিবি, র‌্যাব, পুলিশ ও কোস্ট গার্ডকে নির্দেশ দেন।
প্রধানমন্ত্রী শরণার্থী ইস্যুতে ডাব্লিউএফপি, আইসিআরসি, ইউএনএইচসিআর এবং আইওএম-এর মতো স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থারগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে মিয়ানমারকে তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে রাজি করাতে কাজ করার জন্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, শত শত বছর ধরে মিয়ানমারে বসবাসরত জনগণকে সে দেশের সরকার তাড়িয়ে দেবে এটা কিছুতেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। তিনি শরণার্থীদের মধ্যে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনায় কমিটি গঠনের জন্য কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দকে নির্দেশ দেন।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন শেখ রেহানা, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া মন্ত্রী পরিষদ সচিব, মুখ্য সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক প্রধান সমম্বয়ক, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক, আইজিপি এম শহীদুল হক এবং আইন প্রয়োগকারী ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর আঞ্চলিক কমান্ডারগণ সভায় উপস্থিত ছিলেন।
সভায় কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক আলী হোসেন শরণার্থী সংক্রান্ত সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন।