ঢাকা, মার্চ ২৯, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, স্থানীয় সময়: ১৪:৩৪:৫৫

সঠিক খাদ্যাভ্যাসের পরও কোষ্ঠকাঠিন্য হচ্ছে?

| ২৫ শ্রাবণ ১৪২৪ | Wednesday, August 9, 2017

কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা সমাধানে আঁশযুক্ত খাবার খাওয়া প্রয়োজন; মাংস বেশি খাওয়া এড়িয়ে গিয়ে শাকসবজি খাওয়ার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া উচিত। তবে অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায়, ঠিকমতো এসব খাবার খাওয়ার পরও কোষ্ঠকাঠিন্য হচ্ছে। আপনারও কি এ ধরনের সমস্যা হয়? তাহলে আসুন জানি, কী কারণে এ রকম সমস্যা হতে পারে।

এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৮১৭তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. বিলকিস ফাতেমা। বর্তমানে তিনি ঢাকা সেন্ট্রাল ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কলোরেক্টাল সার্জারি বিভাগের পরামর্শক হিসেবে কর্মরত।

প্রশ্ন : অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায়, নিয়মিত খাবার খাওয়ার পরও কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হয়ে থাকে। এটি কি কোনো কারণে হয়?

উত্তর : অনেক কারণে হয়। এগুলোর মধ্যে কিছু রয়েছে ফাংশনাল। কিছু রয়েছে অ্যানাটমিক্যাল। ফাংশনাল হলে তার খাবার ট্রান্সফার (পরিবহন) অনেক দেরিতে হয়। এটা একটি বড় কারণ। আরেকটি কারণ নারীদের ক্ষেত্রে হয়, পায়খানা যখন মলাশয়ে আসে, তখন আটকে যায়। এর অনেক কারণ থাকতে পারে। শুধু এমনি পাইলসের কারণে হতে পারে। এর পর ক্যানসারের জন্যও হতে পারে। টিউমারের জন্যও হতে পারে। নারীদের জরায়ুমুখ ও মলাশয়—এ দুটোর মাঝখানে একটি পর্দা থাকে। বাচ্চা জন্মের সময় সেই পর্দা অনেকেরই ছিঁড়ে যায়, তখন সেখানে একটি ব্যাগের মতো তৈরি হয়। একে রেক্টোসিল বলে। যাদের রেক্টোসিল থাকে, পায়খানা এসে ওই জায়গায় জমে থাকে, বের হয় না। সেটি এভাবে প্রকাশ পায় যে তার পায়খানা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। রোগীরা এসে অভিযোগ করে যে আমার পায়খানা বের হয় না।

আবার দেখা যাচ্ছে যে মলাশয়ের ওপরের অংশ নিচের অংশের মধ্যে ঢুকে যায়। কিছু কারণ আরো রয়েছে। দেখা যাচ্ছে যে নারীদের বয়স হয়ে গেলে যেমন ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে যায়, তখন প্যালভিসের লিগামেন্টগুলো ঢিলা হয়ে যায়। তখন যেটা হয় যে পুরো প্যালভিস, প্যারেনিয়াম, মলাশয়, জরায়ু, মূত্রাশয়, সবই আসলে একটু নিচে নেমে আসে। একে প্রেশার দিলে পায়খানাটা আটকে আসে।

প্রশ্ন : এই রোগীর চিকিৎসা কীভাবে হয়?

উত্তর : চিকিৎসার অনেক ধাপ রয়েছে। প্রথমে আমরা রোগীকে বোঝাই যে সমস্যাটা কী হয়েছে। প্রধান সমস্যা যেটা ফেটে যায়। বেশির ভাগ রোগী আমার কাছে ফিশার নিয়ে আসে। আর সাধারণ মানুষ পায়খানার রাস্তায় কিছু হলে একে পাইলস বলে চেনে। শুধু সেটি নয়। পায়খানার রাস্তার তো অনেক রকম সমস্যা হয়। তখন আমরা কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করি। হাত দিয়ে দেখি। মেশিন দিয়ে দেখি। দেখে আমরা মোটামুটি একটি ধারণা করে নিই যে কারণটা কী? তখন রোগীকেও সেইভাবে বলি। জীবনযাপনের কিছু পরিবর্তন করতে হয়। এ ক্ষেত্রে কিছু ব্যায়াম করতে হয়। নির্দিষ্ট কিছু ব্যায়াম শিখলে কিছুটা কমে যায়। কিছু মুখে ওষুধ দিই। পরে যদি এগুলো ঠিক না হয়,তখন অস্ত্রোপচারের দিকে যাই।

প্রশ্ন : অস্ত্রোপচারের পর কি কোনো পরামর্শ থাকে?

উত্তর : আসলে রেক্টোসিল বা পায়খানার রাস্তা একটি আরেকটির মধ্যে ঢুকে গেছে, এগুলো ঠিক করে দিতে পারি বা প্যারিনিয়াম নিচে নেমে গেছে, এগুলোকে ওপরে তুলে দিতে পারি। তবে যার ছোটবেলা থেকেই কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা রয়েছে বা কোষ্ঠকাঠিন্য রয়েছে এবং আরো কিছু সমস্যা রয়েছে (যেমন : পায়খানার রাস্তা খুলতে যাচ্ছে, খুলছে না), এই সমস্যাগুলো আসলে অস্ত্রোপচার করে ঠিক করা যায় না। কিছু চিকিৎসা রয়েছে, আমরা এখনো সেই শব্দের সঙ্গে পরিচিত নই, একে বায়োফিডব্যাক বলে। এগুলো করি। আর যাদের ছোটবেলা থেকে কোষ্ঠকাঠিন্য রয়েছে, সেটি আসলে ব্যবস্থাপনা করে সমাধান করতে হয়।