ঢাকা, এপ্রিল ২০, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ১২:০৩:৫১

এ পাতার অন্যান্য সংবাদ

টেলিভিশন ও অনলাইন সাংবাদিকদের সুযোগ-সুবিধা প্রদানের দাবি বিএফইউজে’র পুনর্বাসন না করে বস্তিবাসীদের উচ্ছেদ করা হবে না: তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিস্ফোরণ: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫ প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারি হিসেবে ফের নিয়োগ পেলেন বিপ্লব বড়ুয়া সংসদ অধিবেশন উপলক্ষে সংসদ ভবন ও আশপাশের এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ আপিলে দ্বিতীয় দিনে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন ৫১ জন নির্বাচনে ২৯ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারি সেনাবাহিনী চায় ইসি : পিএসও আদালত আবমাননায় বিচারক সোহেল রানার সাজার বিরুদ্ধে আপিলের রায় ২৩ জানুয়ারি রাজধানীর ২১টি স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ-অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ৪ জন গ্রেফতার : ডিএমপি নির্বাচনে সেনা মোতায়েন হবে কিনা, জানালেন ইসি

সংখ্যালঘু পরিবারকে টুলটিকর ইউপি চেয়ারম্যানের হুমকি থানায় নিরাপদ নয়, রাতে পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ে আশ্রয়!

| ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪২২ | Saturday, June 6, 2015

Untitled-1 copy

মিটুন চৌধুরী। সুনামগঞ্জ জেলার জামালগঞ্জ উপজেলার রহিমপুর গ্রামের মৃত হরেন্দ্র রায় চৌধুরীর ছেলে। মিটুনের স্ত্রী এক ছেলে আর মেয়ে নিয়ে ৪ সদস্যের সুন্দর সংসার। তিনি বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান আদিবাসী পার্টির কেন্দ্রীয় সভাপতির দায়িত্বপালন করছেন। আদিবাসীদের সম্পদ রক্ষার লড়াইয়ে তিনি যেন এক নিবেদিত প্রান। কিন্তু সে লড়াই মিটুনের স্ত্রী সন্তানদের জীবনের ঝুঁকি বয়ে আনবে তা ছিল তাঁর অজানা। আর সে কারণেই জীবন বাঁচাতে ঘর ছেড়ে তাঁকে আশ্রয় নিতে হয়েছে সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ে। গতরাত ৯ টায় তিনি কমিশনার কার্যালয়ে স্ত্রী সন্তান নিয়ে অবস্থান করেন। গতকাল রাত ১০ টায় সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ে মিটুন জানান, ৫ নম্বর টুলটিকর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বালুচর এলাকার বাসিন্ধা আব্দুল মোছাব্বিরের একেরপর এক হুমকির কারণে তিনি তাঁর স্ত্রী সন্তান নিয়ে শাহপরান থানায় যাননি। তিনি থানায় তাঁর ও পরিবারের জীবন নিরাপদ মনে না করায় অবস্থান নিয়েছেন সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ে। মিটুন জানান, তাঁর স্ত্রী সুমনা চৌধুরী, ছেলে কৃষ্ণ রঞ্জন চৌধুরী, মেয়ে ঐশে^রিয়া চৌধুরীকে নিয়ে নগরের উত্তর বালুচর বি-ব্লকের আল ইসলাহ মুক্তাঙ্গন ভিলার ৩৪৮ নম্বর বাসায় বসবাস করছেন। ছেলে কৃষ্ণ খাজাঞ্চি বাড়ি ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এন্ড কলেজের ‘ও’ লেভেলে ও মেয়ে একই স্কুলের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী।

আদিবাসীর সম্পত্তি রক্ষা করতে গিয়েই মোছব্বির চেয়ারম্যানের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন তিনি। মিটুন বলেন, বালুচর এলাকায় আদিবাসীদের এক তৃতীয়াংশ ভূ-সম্পত্তি অবৈধভাবে দখল করে নিয়েছেন টুলটিকর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মোছব্বির। সম্প্রতি ওই ইউপি চেয়ারম্যানের নজর পরে বালুচর এলাকার চন্দন টিলায়। তিনি ওই টিলা দখল করতে মরিয়া প্রচেষ্টা চালান। আর মিটুন চৌধুরী এতে বাধা দেন। এরপর থেকেই চেয়ারম্যান মোছব্বির শুরু করেন তাঁর ও পরিবারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। দিতে থাকেন একেরপর এক প্রাণ নাশের হুমকি। গত ৪ মাস থেকে বন্ধ হয়ে যায় মিটুনের চেলে কৃষ্ণ আর মেয়ে ঐশে^রিয়ার স্কুলে যাওয়া। ০১৭১২ ৪৫৩৬১১ একটি মোবাইল ফোন নাম্বার থেকে মিটুনের মোবাইলে এসএমএস পাটিয়ে তাঁর ২ সন্তানকে অপহরণ ও গুম করার হুমকি দেয়া হয়। গত ১৩ এপ্রিল সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে মিটুনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে (একটি ক্যান্টিন) মোছব্বিরের লোকজন হামলা ও ভাঙচুর চালিয়ে ক্যান্টিনটি তালাবন্ধ করে দেন। গত ২৯ এপ্রিল সন্ধ্যায় মিটুনের আর একটি প্রতিষ্ঠানে হামলা চালানো হয়। কম্পিউটারসহ প্রয়োজনীয় আসবাবপত্রও ভাঙচুর করার পাশাপাশি চেয়ারম্যান মোছব্বিরের লোকজন তাঁকেও করেন শারীরিকভাবে লাঞ্চিত। এ ঘটনায় মিটুন শাহপরান থানায় অভিযোগ করতে গেলে থানা পুলিশ তা গ্রহণ করেনি। এরপর তিনি সিলেটের ডিআইজি, পুলিশ কমিশনারসহ সরকারের ওপর মহলে অভিযোগ দাখিল করেন।
গতকাল দুপুর দেড়টায় সর্বশেষ মিটুনকে হুমকি দেন চেয়ারম্যান মোছব্বির। এ ঘটনায় মিটুন শাহপরান থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেন।
সাধারণ ডায়রিতে মিটুন উল্লেখ করেন, গত মঙ্গলবার বেলা ১ টা ১১ মিনিটে একটি মোবাইল নম্বর থেকে তাঁকে ফোন করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও প্রাণ নাশের হুমকি দেন চেয়ারম্যান মোছব্বির। একইভাবে গতকাল বেলা ১ টা ৫০ মিনিটে ০১৭১৯ ৮৮৯২০৪ মোবাইল ফোন নম্বর থেকে হুমকি দিয়ে বলেন, ‘মিটুনকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিবেন।’
এমন পরিস্থিতিতে মিটিন তাঁর ও পরিবারের সদস্যদের জীবন বাঁচাতে মহানগর পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ে অবস্থান করেছেন। রাতে স্ত্রী সন্তান নিয়ে কমিশনার কার্যালয়েই থাকবেন বলে জানান মিটুন।
সিলেট মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (সদরদপ্তর) প্রকৌশলী রেজাউল করিম সবুজ সিলেটকে জানান, ‘রাতেই মিটুন তাঁর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে চলে গেছেন। তিনি বলেন, কারা মিটুনকে সংবাদ প্রকাশের জেরধরে হত্যার হুমকি দিচ্ছে বলে আমাদের জানিয়েছেন। পরে আমরা শাহপরান থানার ওসিকে তাঁর ও পরিবারের নিরাপত্তা দিতে বলেছি। বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখব।’