ঢাকা, মার্চ ২৯, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, স্থানীয় সময়: ১৩:৪২:২০

এ পাতার অন্যান্য সংবাদ

কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট শিশুদের নতুন করে বাঁচার পথ খুলে দেয় : সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিস্ফোরণ: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫ আসন্ন পবিত্র রমজানে সরকারিভাবে বড় ইফতার পার্টি না করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর পুলিশকে জনগণের বন্ধু হয়ে নিঃস্বার্থ সেবা দেয়ার নির্দেশ রাষ্ট্রপতির পণ্যমূল্য সহনীয় রাখতে সরকারের পাশাপাশি জনগণেরও নজরদারি চাই : সংসদে প্রধানমন্ত্রী রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে থাকবে : প্রধানমন্ত্রী দিনের তাপমাত্রা বাড়তে পারে বিরোধীদলীয় নেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের ও উপনেতা আনিসুল ইসলাম রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বিশ্বব্যাপী প্রচেষ্টার ওপর গুরুত্বারোপ প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় আসার নিশ্চয়তা না পেয়ে বিএনপি নির্বাচন বর্জন করেছে : প্রধানমন্ত্রী

ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণ মুক্তিযুদ্ধের সবচেয়ে বড় অর্জন : সরকারি দল

| ১৩ আষাঢ় ১৪২৯ | Monday, June 27, 2022

ঢাকা: জাতীয় সংসদে ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরের বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারি দলের সদস্যরা সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু বাস্তবায়নকে মুক্তিযুদ্ধের সবচেয়ে বড় অর্জন বলে উল্লেখ করেছেন।
গত ৯ জুন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সংসদে ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার এ বাজেট প্রস্তাব পেশ করেন। এর আগে গত ১৩ জুন সংসদে চলতি অর্থ বছরের সম্পূরক বাজেট পাস করা হয়।
বাজেটের ওপর আলোচনায় আজ অংশ নেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী  শ, ম রেজাউল করিম,  গৃহায়ন গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, পরিবেশ,  বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপমন্ত্রী হাবিবুন্নাহর, সরকারি দলের সদস্য মাহবুব উল আলম হানিফ, শাজাহান খান, গাজী মো. শাহনেওয়াজ, বেগম শাহদারা মান্নান, উম্মে ফতেমা সালমা বেগম, বেগম শিরীন আহমেদ, জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ, ফখরুল ইমাম, বেগম সালমা ইসলাম,  বিএনপির হারনুর রশীদ এবং গণফোরামের সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ।
আলোচনায় অংশ নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণ জাতির বিশাল অর্জন। তবে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত ১৩ বছরে যে শত শত অর্জন আমরা করেছি, তা যেন আমরা ভুলে না যাই। প্রধানমন্ত্রী পার্বত্য শান্তি চুক্তি করে ঐ এলাকার দীর্ঘ দিনের অশান্ত পরিবেশে শান্তি নিশ্চিত করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে সমুদ্রসীমা বিজয়, ভারতের সাথে স্থল সীমান্ত চুক্তি করে ছিটমহল বিনিময় করে দীর্ঘ সমস্যার সমাধান এসেছে।  এছাড়া বিদ্যুৎ খাতে যে অভূতপূর্ব সাফল্য এসেছে তা ইতিহাসে এর আগে আর আসেনি। শতভাগ বিদ্যুতায়নের মাধ্যমে দেশে দুর্গম নদী, সাগর আর পাহাড় বেষ্টিত এলকায়ও বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মানের মাধ্যমে শেখ হাসিনার হাত ধরেই বাংলাদেশ পরমানু যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, শুধু কি তাই, যোগাযোগ খাতে পদ্মা সেতু তো রয়েছেই। এর বাইরে কর্ণফুলী ট্যানেল, মেট্রোরেলসহ অসংখ্য অর্জন রয়েছে। সর্বোপরি শেখ হাসিনা দেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারায় নিয়ে এসেছেন। বিশেষ করে এ দেশে বঙ্গবন্ধু হত্যা আর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে করোনা পরবর্তী বিভিন্ন খাতে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বাজেটে প্রত্যক্ষ কর পরিধি বাড়ানো হয়েছে। আর পরোক্ষ কর তেমন বাড়ানো হয়নি। সাধারণ মানুষের ওপর নতুন করে করের বোঝা চাপানো হয়নি। তিনি বাজেটে সার্বজনিন পেনশন ব্যবস্থা চালুর প্রস্তাবকে স্বাগত জানান।
আলোচনায় অংশ নিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ, ম রেজাউল করিম বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবমুখী, সময়োপযোগী, কর্মসংস্থান ও উন্নয়নমুখী। এ বাজেট এ সরকারের অন্যসব বাজেটের ধারাবাহিকতায় বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ উন্নত সমৃদ্ধ দেশের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যাবে।
তিনি পদ্মা সেতু উদ্বোধনের মাধ্যমে ইতিহাস সৃষ্টির জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, উন্নয়নের এ ইতিহাস সৃষ্টিতে শত ষড়যন্ত্র আর প্রতিকূলতা মোকাবেলা করতে হয়েছে। ৭৫’ সালে সপরিবারে  বঙ্গবন্ধু হত্যার পর এদেশের উন্নয়ন অগ্রগতি থেমে গিয়েছিল। দেশ দরিদ্র থেকে দরিদ্রতর দেশে পরিণত হয়েছিল। আর শেখ হাসিনা ৯৬’ সালে দেশ পরিচালনায় এসে দেশকে উন্নয়নের দিকে ধাবিত করেন। পরবর্তীতে ২০০৮ সাল থেকে এ পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে দেশ পরিচালনা করে দেশকে আজ উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত করেছেন। গত ১৩ বছরের আমলে শেখ হাসিনা বিশ্বের বুকে বাংলাদেশকে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
সরকারি দলের সদস্য মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়ন বন্ধসহ শত ষড়যন্ত্র ও প্রতিকূলতার মধ্যেও নিজস্ব অর্থায়নে বাঙালির স্বপ্নের পদ্মা সেতু নির্মাণ করে শেখ হাসিনা দেশকে তার নেতৃত্বের যোগ্যতা এবং দৃঢ়তাকে এক অনন্য উচ্চতায় প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
আজ বাজেট আলোচনা শুরুর আগে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭৩তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনায় সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভাষণ দেন।  এছাড়া এ উপলক্ষ্যে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের প্রবীণ সংসদ সদস্য আমির হোসেন আমু ও তোফায়েল আহমেদ। এর পরই সংসদে বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনা শুরু হয়।
প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারি দলের সদস্যরা বলেন, গতকাল ২৫ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাঙালির স্বনির্ভরতা আর মর্যাদার প্রতীক পদ্মা বহুমূখী সেতু উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার পর জাতির আরেকটি বিশাল অর্জনের দ্বার উন্মোচন করেছেন। পদ্মা সেতু চালুর ফলে দেশে অর্থনৈতিক অগ্রগতি আরো তরান্বিত হবে।
তারা বলেন, বাঙালির গর্ব পদ্মা সেতু নিয়ে আগেও বিএনপি জামায়াত ষড়যন্ত্র করেছে। এ সেতু যেন না হয় সে জন্য কাল্পনিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়ন বন্ধ করে দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দৃঢ়তার সাথে ঘোষণা করেন নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণ করা হবে। সে ঘোষণা অনুযায়ি আজ এ সেতু এখন বাস্তব। এখনো তারা ষড়যন্ত্র করছে। এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।
তারা আরো বলেন, পদ্মা সেতু নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রমাণ করেছেন, বাঙালি মেধায়-মননে আর বিচক্ষণতায় বিশ্বের যে কোন উন্নত জাতির সমকক্ষ। এ সেতু জাতির আত্মমর্যাদার প্রতীক।
সরকারি দলের সদস্যরা বলেন, শেখ হাসিনা দেশ পরিচালনায় সর্বক্ষেত্রে শতভাগ সাফল্য অর্জন করে বিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে  বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। বিশেষ করে ১৩ বছরে এ সরকারের দেয়া সব বাজেট গড়ে ৯১ ভাগের বেশী বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়েছে। এ বাজেটও সফলভাবে বাস্তবায়িত হবে।
তারা বলেন, বৈশ্বিক মহামারির সংক্রমণের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময়োচিত পদক্ষের ফলে সফলভাবে করোনা মোকাবেলা করা সম্ভব হয়েছে।