ধর্ম প্রচারক ড. জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে একটি মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল করেছে ভারতের সন্ত্রাস-তদন্ত এজেন্সি ন্যাশানাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি বা এনআইএ।
শুক্রবার মুম্বাইয়ের একটি বিশেষ আদালতে দাখিল করা ওই অভিযোগপত্রে সন্ত্রাস দমন আইন ও ষড়যন্ত্রসহ বেশ কিছু ধারায় নায়েককে অভিযুক্ত করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম দ্যা হিন্দু এনআইএর আনুষ্ঠানিক বিবৃতির বরাত দিয়ে বলেছে, ‘ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশন’ নামের একটি বেআইনী সংগঠনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা জাকির নায়েক তাঁর বক্তৃতার মাধ্যমে ভারতের নানা ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে যে বিদ্বেষ ছড়াতেন, তার প্রমাণ পাওয়া গেছে’।
‘ফেসবুক, ইউটিউবের মতো সামাজিক মাধ্যম ও বাজেয়াপ্ত করা ডিভিডি ও সিডি থেকে জাকির নায়েকের যে সব ভাষণ পাওয়া গেছে, তা থেকে তাঁর কার্যকলাপ সম্বন্ধে সন্দেহাতীত প্রমাণ পাওয়া গেছে। দেখা গেছে যে তিনি হিন্দু, খৃষ্টান এবং অ-ওয়াহাবি মুসলমান, বিশেষত শিয়া, সুফি এবং বরেলভি সম্প্রদায়ের মুসলিমদের ধর্মীয় অনুভূতিতে ইচ্ছাকৃতভাবে আঘাত করতেন, মন্তব্য এনআইএর।
প্রসঙ্গত: ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশন আর পীস টিভিসহ জাকির নায়েকের ভাষণ প্রচারে যুক্ত আরও দুটি সংস্থাকে এর আগে বেআইনী ঘোষণা করেছিল ভারত সরকার। জাকির নায়েকের পিস টিভি ভারতে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
ওইসব সংস্থায় বেশ কয়েকবার তল্লাশী চালিয়ে যেসব প্রমাণ ও নথি যোগাড় করেছে এনআইএ, তার ভিত্তিতে তদন্ত এজেন্সিটি জানিয়েছে যে ওই সংস্থাগুলিকে যেসব দেশী বা বিদেশীরা চাঁদা দিতেন, তাঁদের নাম-ধাম কোথাও লেখা নেই। সব চাঁদাই সংগ্রহ করা হয়েছে ‘ওয়েল উইশার’দের নামে।
“জাকির নায়েকের সঙ্গে যুক্ত ১৯টি স্থাবর সম্পত্তির হদিস পাওয়া গেছে, যার বাজার মূল্য প্রায় ১০৪ কোটি টাকা,” বলছে এনআইএ।
জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হওয়ার পর থেকে তিনি আর ভারতে ফেরত আসেননি। তবে একবার তিনি ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে ভারতীয় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন।
তাঁর সংস্থাগুলি বেআইনী ঘোষিত হওয়ায় সেগুলির কোনো মুখপাত্রের সঙ্গে এনআইএ-র তোলা অভিযোগ সম্পর্কে তাদের বক্তব্য জানা যায়নি।
জাকির নায়েকের আইনজীবি মুবিন সোলকারের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছিল। কিন্তু এনআইএর চার্জশীট নিয়ে এখনই কোনও মন্তব্য করতে চাননি তিনি।