ঢাকা, এপ্রিল ২০, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ০৬:১৬:০৯

এ পাতার অন্যান্য সংবাদ

বিএনপি একটি রাজনৈতিক দৈত্যের দল : পররাষ্ট্রমন্ত্রী শান্তি বজায় রাখার জন্য যা-যা করার আমরা করবো: বান্দরবানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসন্ন পবিত্র রমজানে সরকারিভাবে বড় ইফতার পার্টি না করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর পুলিশকে জনগণের বন্ধু হয়ে নিঃস্বার্থ সেবা দেয়ার নির্দেশ রাষ্ট্রপতির রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বিশ্বব্যাপী প্রচেষ্টার ওপর গুরুত্বারোপ প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় আসার নিশ্চয়তা না পেয়ে বিএনপি নির্বাচন বর্জন করেছে : প্রধানমন্ত্রী মৌলবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মানুষের সাংস্কৃতিক সম্পৃক্ততার আহ্বান তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর সংসদে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে স্বতন্ত্র সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী প্রকল্প বাস্তবায়নে অসাধারণ সাফল্য দেখিয়েছে পিপিপি বিদেশি পর্যবেক্ষকদের আগমন স্বচ্ছ নির্বাচনে সহায়ক : তথ্যমন্ত্রী

শিশুদের মনে দেশপ্রেম জাগ্রত করতে দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে কাজ করতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

| ২ চৈত্র ১৪২২ | Wednesday, March 16, 2016

ঢাকা : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শিশুদের মনে দেশপ্রেম জাগ্রত এবং তাদের আত্মবিশ্বাসী করে গড়ে তুলতে দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা প্রিয় বাংলাদেশকে শিশুদের জন্য নিরাপদ আবাসভূমিতে পরিণত করতে অঙ্গীকারবদ্ধ। শিশুদের মনে দেশপ্রেম জাগ্রত করে তাদের ব্যক্তিত্ব গঠন, সৃজনশীলতার বিকাশ এবং আত্মবিশ্বাসী করে গড়ে তুলতে দল-মত নির্বিশেষে সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে। তাদেরকে প্রিয় মাতৃভূমি ও জাতির পিতার সংগ্রামী জীবনের প্রকৃত ইতিহাস জানাতে হবে।’
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৭তম জন্মদিবস ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে আজ বুধবার দেয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী এই কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, শিশুদের প্রতি বঙ্গবন্ধুর মমতা ছিল অপরিসীম। তাই তাঁর জন্মদিনকে শিশুদের জন্য উৎসর্গ করে আমরা ‘জাতীয় শিশু দিবস’ ঘোষণা করেছি। এই দিনে আমি জাতির পিতার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত এবং আগামীদিনের কর্ণধার শিশু কিশোরদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করছি।
শিশুদের কল্যাণে বর্তমানকে উৎসর্গ করার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, দেশের সকল নাগরিক বঙ্গবন্ধুর ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও নিরক্ষরতামুক্ত স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে একতাবদ্ধ হই।
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় ফাঁসির আদেশপ্রাপ্ত অবশিষ্ট পলাতক আসামিদের দেশে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকর করার প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রচলিত আদালতে জাতির পিতার হত্যাকারীদের বিচার ও রায় কার্যকর করার মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতি আজ কিছুটা হলেও দায়মুক্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, একাত্তরের মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় কার্যকর করা হচ্ছে। বুদ্ধিজীবী হত্যাকারীদের বিচারের রায়ও কার্যকর করা হবে। স্বাধীনতাবিরোধী সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী এবং গণতন্ত্রবিরোধী শক্তির সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে জাতির পিতার অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করতে আমরা বদ্ধপরিকর।
শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু এক কিংবদন্তীর নাম। বাল্যকাল থেকেই তিনি ছিলেন নির্ভীক, অমিত সাহসী এবং মানবদরদি। তিনি ছিলেন বাংলার আবালবৃদ্ধবনিতার অধিকার আদায়ের শেষ আশ্রয়স্থল। প্রখর স্মৃতিশক্তির অধিকারী ও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন এই বিশ্বনেতার সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের মূল লক্ষ্য ছিল বাঙালি জাতিকে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করা। বঙ্গবন্ধু বাংলা ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে নেতৃত্ব দেন।
তিনি বলেন, ১৯৪৮ সালে তাঁর প্রস্তাবে ছাত্রলীগ, তমদ্দুন মজলিশ ও অন্যান্য ছাত্র সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত হয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ। ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতির দাবিতে সাধারণ ধর্মঘট পালনকালে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করা হয়। ১৯৪৮ থেকে ১৯৫২ পর্যন্ত তিনি বারবার কারারুদ্ধ হন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা কখনও জেলে থেকে কখনও বা জেলের বাইরে থেকে ভাষা আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারির বিয়োগান্তক ঘটনার সময় বঙ্গবন্ধু অন্তরীণ অবস্থা থেকে দিক-নির্দেশনা প্রদান করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ’৫৪-র যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ’৫৮-র আইয়ুব খানের সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন, ’৬২-র শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলন, ’৬৬-র ছয়দফা, ’৬৮-র আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ’৭০-এর নির্বাচন এবং একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ জাতির পিতার অবিসংবাদিত নেতৃত্বে পরিচালিত হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধুর অবিসংবাদিত নেতৃত্ব, সম্মোহনী ব্যক্তিত্ব ও ঐতিহাসিক ভাষণ সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিল। যার ফলে আমরা পেয়েছি স্বাধীন, সার্বভৌম বাংলাদেশ। বিকাশ ঘটেছে বাঙালি জাতিসত্তার। জাতির পিতা শুধু বাঙালি জাতিরই নয়, তিনি ছিলেন বিশ্বের সকল নিপীড়িত-শোষিত-বঞ্চিত মানুষের অধিকার আদায় ও মুক্তির অগ্রনায়ক।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু যখন স্বাধীন বাংলাদেশের পুনর্গঠন কাজে আত্মনিয়োগ করেন, তখনই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতার পরাজিত শক্তি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে তাঁকে সপরিবারে হত্যা করে। এর মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা ও উন্নয়নকে স্তব্ধ করে দেয়া হয়। অবৈধ সামরিক সরকারগুলো বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সংবিধানকে ক্ষত-বিক্ষত করে। স্বাধীনতাবিরোধী, যুদ্ধাপরাধী ও প্রতিক্রিয়াশীল শক্তিকে পুনর্বাসিত করে। জনগণ ভাত ও ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়। স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করা হয়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৭তম জন্মদিবস উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী তাঁর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা এবং জাতীয় শিশু দিবসে দেশের সকল শিশুসহ দেশবাসীর প্রতি আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান।