ঢাকা, এপ্রিল ২৫, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ২০:৪১:০২

শংকর সাহার বিরুদ্ধে ডিসি’র কণ্ঠ নকল করার অভিযোগ

| ২২ আষাঢ় ১৪২২ | Monday, July 6, 2015

গেল মার্চের ১২ তারিখ, তখন সময় সকাল প্রায় ১১ টা। বাসভবনের বাইরে  অজ্ঞাত স্থান  থেকে শংকর চন্দ্র সাহা পারমিতাকে ফোনে বলেন, ‘ডিসি স্যার তোমার সঙ্গে কথা বলবেন, পারমিতা অপ্রস্তুত, ভয়ে সন্ত্রস্ত!

এ সময় বাসার সবাই ড্রয়িংরুমে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে ও বসে পিনপতন নিরবতায় কৌতুহলি দৃষ্টিতে চুপচাপ। পারমিতা মোবাইলের স্পিকার ওপেন করে কথার উত্তর দিচ্ছেন। কথোপকথন শুরু…
‘ডিসি’ঃ মা পারমিতা,  তোমার ভয়ের কিছু নেই। তবে, আমি যা যা বলব- তুমি তাই করবে। তাহলে তোমার কিচ্ছু হবে না। অন্যথা তোমার জেল হয়ে যাবে। তুমি আমার সামনে অথবা জনসমক্ষে বলবে, তোমার জেঠোমনি তোমাকে জোর করে বাধ্য করেছে কুকুরের গায়ে জাতীয় পতাকা জড়ায়ে ছবি তুলতে। তুমি এভাবে ছবি তুলতে চাওনি। তোমার জেঠোমনি সেই ছবিটি ফেসবুকে পোস্ট করে তোমার বাবার প্রতি প্রতিশোধ নিয়েছেন।আরো বলবে, তোমাকে  ফাঁসানোই ছিল মূল উদ্দেশ্য।’ এ কথা শোনার পর পারমিতা আরো বিচলিত। চোখ দিয়ে পানি ঝড়ছে। উত্তরে বিনয়ের সঙ্গে পারমিতাঃ স্যার, আপনি যা বললেন, তা কি না বললেই নয়? জেঠোমনি তো তা করেন নি। যা করেছি আমিই নিজের ইচ্ছায়।  জেঠোমনি সম্পূর্ন নির্দোষ।’

অনেক ভয় দেখিয়েও পারমিতাকে দিয়ে মিথ্যা বলাতে না পেরে কথিত ‘ডিসি’ হাল ছেড়ে দেন। প্রকৃতপক্ষে ডিসি আনিছুর রহমান পারমিতাকে ফোন করেন নি। অন্য কেউ ডিসির মতো করে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে ভয় দেখান। এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়রী হয়েছে, যার নং-১৯২,তাং-০৬.০৭.২০১৫ ইং। নারায়নগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাধারণ ডায়রী‘টি এস আই মিজানকে তদন্ত ভার দেন।

এব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোঃ আনিছুর রহমান মিঞা লাইভ নারায়ণগঞ্জকে জানান, পারমিতা নামের কারো সাথে কখন’ই মুঠোফোনে যোগাযোগ হয়নি। এই প্রথম আপনাদের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারলাম।

‘আপন বড় ভাইকে ফাঁসাতে শংকর চন্দ্র সাহা যে নজির দেখালেন তা বিরল’- এমনটাই জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই পরিবারের একজন সদস্য। সম্প্রতি সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরে নারায়ণগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী এ যৌথ পরিবারটি ভেঙ্গে যায়। বড় ভাইকে কোনঠাসা করে সম্পত্তি গ্রাস করতে এই  কৌশলের আশ্রয় নিয়েছিলেন শংকর চন্দ্র সাহা। এমনটাই অভিযোগ পারিবারিক সূত্রের।  উল্লেখ্য, তিন দিন আগে ৯ মার্চ বিশ্বকাপ ক্রিকেটে টাইগাররা ইংল্যান্ডকে হারানো পর দেশ যখন আনন্দে ভাসছে, এসময় পারমিতাও উৎফুল্ল চিত্তে বাসায় আবেগে পালিত কুকুরের গায়ে জাতীয় পতাকা জড়িয়ে ছবি তোলেন। ছবিটি তখনি সঙ্গী-সাথীরা কেউ ফেসবুকে  পোস্ট করে দেন।এর তাৎক্ষণিক মিশ্র প্রতিক্রিয়া শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই ওই পোস্টটি ওয়াল থেকে সরিয়ে  ফেলা হয়। তারপরও সামাজিক গণমাধ্যমে ও  স্থানীয় পত্রিকায় নিন্দার ঝড় অব্যহত থাকে। সামাজিক গণমাধ্যমে অপ্রত্যাশিত ওই আলোকচিত্রটি প্রকাশের সকল দায় দায়িত্ব পারমিতার জেঠোমহাশয় (শংকর সাহার বড় ভাই)  মাথায় নিয়ে গণমাধ্যমে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন। তারপরই অবশ্য এ নিয়ে সকল উত্তাপ ও প্রতিবাদের অবসান ঘটে। উল্লেখ্য, যৌথ পরিবারে ছোট ভাইয়ের পুত্র - কন্যার সব আবদারই রক্ষা করতেন এই জেঠোমনি।এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৪ সালের অক্টোবর মাসে ঢাকার উত্তরা থেকে ১৬ হাজার টাকায় জার্মানী প্লিটজ প্রজাতির কুকুরটি পারমিতাকে এনে দেন। এই কুকুরটির নাম পারু। উল্লেখ্য, শংকর চন্দ্র সাহার মেয়ে পারমিতার সঙ্গে কথিত ডিসির ফোনালাপটির ওডিও রেকর্ড সংগ্রহ সময় সাপেক্ষ।
এবিষয়ে মতামত জানতে শংকর সাহার সাথে কয়েক দফায় মুঠোফোনে(০১৭১১৫৪২৩..) যোগাযোগ করেও পাওয়া যায়নি। তথ্যসূত্র-লাইভ নারায়ণগঞ্জ