বাদল অধিবেশন শুরুর দিনই ললিত মোদি বিতর্কে উত্তাল হয়ে ওঠে ভারতের পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ। বিরোধীদের তুমুল হইচইয়ের মুখে রাজ্যসভা অধিবেশন দুপুর পর্যন্ত মুলতবি হয়ে যায়। গতকাল মঙ্গলবার পার্লামেন্ট অধিবেশনের আগে এনডিএ জোটের নেতারা বৈঠকে বসেন। সূত্রের খবর, বৈঠকে কৃষকদের কাছে তার সরকারের ভাবমূর্তি খারাপ বলে স্বীকার করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। পাশাপাশি, ললিত মোদি বিতর্ক অথবা ব্যেপম দুর্নীতিতে বিজেপিকে সমর্থন জানিয়েছে এনডিএর শরিক দলগুলো। প্রধানমন্ত্রী মোদি সবার সহযোগিতা চেয়েছেন। বাদল অধিবেশন শুরুর দিনে শোকপ্রস্তাব গ্রহণের পর লোকসভা মুলতবি রাখা হয়।
<a href=’http://sparkitbd.com/adservice/www/delivery/ck.php?n=a4b214d5&amp;cb=INSERT_RANDOM_NUMBER_HERE’ target=’_blank’><img src=’http://sparkitbd.com/adservice/www/delivery/avw.php?zoneid=52&amp;cb=INSERT_RANDOM_NUMBER_HERE&amp;n=a4b214d5′ border=’0′ alt=” /></a>
মোদি বাদল অধিবেশনে কিছু বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বিরোধী দলগুলোর কাছ থেকে সমর্থন ও সহযোগিতা কামনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা একত্রে কাজ করতে চাই। আমাদের কাজ হবে জাতির উন্নতির জন্য। এ ব্যাপারে আমাদের মধ্যে মতপার্থক্য থাকা উচিত নয়।’ সংসদের বাইরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ আহ্বান জানান বিরোধী দলগুলোর প্রতি। মোদি বলেন, ‘আমি আশা করি, পার্লামেন্টই হবে আমাদের জাতীয় আশা-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে গঠনমূলক বিতর্কের কেন্দ্রস্থল।’ তবে বিরোধী দলগুলোর দাবি হলো মোদি সরকারের দুর্নীতিপরায়ণ মন্ত্রীদের পদত্যাগ। কংগ্রেস এ ব্যাপারে কড়া অবস্থান নিয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষক কেজি সুরেশ বলেন, ‘এ অধিবেশনটা হবে ঝড়ো অধিবেশন।’ সংসদবিষয়ক মন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নাইডু জানিয়েছেন, ললিত বিতর্কে সংসদে বক্তব্য রাখতে প্রস্তুত পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। দুর্নীতি ইস্যুতে অধিবেশনে তারা মোদি সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়াবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে তৃণমূল। ললিত-সুষমা স্বরাজ এবং ব্যাপমসহ বেশ কয়েকটি ইস্যুতে দফায় দফায় মুলতবি হয়ে যায় সংসদের বাদল অধিবেশন। মঙ্গলবার অধিবেশনের শুরুতেই ললিত-সুষমা ইস্যু নিয়ে রাজ্যসভায় ঝড় তোলে কংগ্রেস। এ দিন কংগ্রেস নেতা আনন্দ শর্মা ললিত মোদিকে দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি জানান। শর্মার আক্রমণের পাল্টা জবাব দেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। তিনি বলেন, ললিত মোদির বিষয়টি নিয়ে সরকার বিতর্কের জন্য তৈরি। তুমুল হই-হট্টগোলের মধ্যে দুপুর ১২টা পর্যন্ত মুলতবি হয়ে যায় রাজ্যসভার অধিবেশন। অন্যদিকে, প্রয়াত সাংসদদের সম্মান জানিয়ে বুধবার পর্যন্ত নিম্নকক্ষ লোকসভার অধিবেশন মুলতবি করা হয়। ১২টায় রাজ্যসভার অধিবেশন শুরু হতেই ফের আক্রমণে নামে বিরোধীরা। ফের আধঘণ্টার জন্য সভা মুলতবি হয়েছে। ২২ জুলাই ব্যেপম নিয়ে এবং ২৩ জুলাই ললিত কাণ্ড নিয়ে মুলতবি প্রস্তাব আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কংগ্রেস নেতৃত্ব। ২২ জুলাই কংগ্রেস সাংসদরা গান্ধী মূর্তির পাদদেশে নীরব অবস্থান করবে বলেও দলীয় সূত্রের খবর। বারবার সভা মুলতবি হয়ে যাওয়ায় অরুণ জেটলি বলেন, ‘সরকার আলোচনার জন্য প্রস্তুত, কিন্তু বিরোধীরা আলোচনায় রাজি নয়।’ তিনি বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট বুঝতে পেরেছি, বিরোধী দল গঠনমূলক আলোচনা-সমালোচনা না করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই সংসদে হৈচৈ করতে চায়। আমরা যে কোনো সময়, যে কোনো বিষয়ে মন খুলে আলোচনা করতে তৈরি।’ গতকাল সকালে বাদল অধিবেশন শুরুর আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানান, তিনি বিরোধী দলের সঙ্গে মন খুলে যে কোনো আলোচনায় অংশ নিতে চান। প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের সঙ্গে একটি ফলপ্রসূ আলোচনা করতে চান। তবে কংগ্রেস নেতারা তার আহ্বানে সাড়া না দিয়ে কংগ্রেস ভিন্নভাবে তাদের প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করে। তারা তাদের এমপিদের সংসদের বাইরে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড নিয়ে এবং হাতে কালো ব্যাজ পরে প্রতিবাদী স্লোগান দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। রাহুল গান্ধীসহ কংগ্রেসের বিভিন্ন নেতা পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজের পদত্যাগ দাবিতে মুখর হয়ে ওঠে। এ ছাড়াও তারা মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ চৌহানেরও পদত্যাগ দাবি করে।