ঢাকা, মার্চ ২৯, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, স্থানীয় সময়: ০১:৩৮:১৭

এ পাতার অন্যান্য সংবাদ

ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিস্ফোরণ: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫ প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারি হিসেবে ফের নিয়োগ পেলেন বিপ্লব বড়ুয়া সংসদ অধিবেশন উপলক্ষে সংসদ ভবন ও আশপাশের এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ আপিলে দ্বিতীয় দিনে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন ৫১ জন নির্বাচনে ২৯ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারি সেনাবাহিনী চায় ইসি : পিএসও আদালত আবমাননায় বিচারক সোহেল রানার সাজার বিরুদ্ধে আপিলের রায় ২৩ জানুয়ারি রাজধানীর ২১টি স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ-অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ৪ জন গ্রেফতার : ডিএমপি নির্বাচনে সেনা মোতায়েন হবে কিনা, জানালেন ইসি ‘মাছ-মাংসের আশা করি না, শেষ ভরসা সবজিতেও আগুন’ দুর্গাপূজায় নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা

র‌্যাব-পুলিশের বিরুদ্ধে আরজুর ভাইয়ের মামলা

| ৯ ভাদ্র ১৪২২ | Monday, August 24, 2015

ছাত্রলীগের হাজারীবাগ থানা শাখার সভাপতি আরজু মিয়াকে ‘অপহরণের পর গুলি করে হত্যা’র অভিযোগে র‌্যাব ও পুলিশের তিন কর্মকর্তাসহ চারজনের বিরুদ্ধে একটি নালিশি মামলা হয়েছে। গতকাল রবিবার সকালে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে মামলাটি করেন নিহত আরজুর ভাই মাসুদ রানা। মামলাটি গ্রহণ করা হবে কি হবে না, সে বিষয়ে আদেশ দেওয়া হবে আগামীকাল মঙ্গলবার। গতকাল শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম শাহরিয়ার মাহমুদ আদনান এই দিন ধার্য করেছেন। নালিশি মামলায় আসামি করা হয়েছে র‌্যাব-২-এর পরিচালক মাসুদ রানা, ডিএডি শাহিদুর রহমান, পুলিশের পরিদর্শক ওয়াহিদ ও র‌্যাবের সোর্স রতনকে। মামলায় ছয়জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। আদালতে বাদীর পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট আজিম উদ্দিন। এদিকে দলীয় সূত্রে জানা যায়, সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর অবস্থান সমর্থন করে আওয়ামী লীগ। তবে হাজারীবাগ থানা ছাত্রলীগের সভাপতি আরজু মিয়ার ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মৃত্যুর ঘটনাটিকে সমর্থন করছেন না আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা। তাঁরা মনে করছেন, ভুল বোঝাবুঝির কারণে ওই ঘটনা ঘটেছে। তাঁদের মতে, আরজুর অপরাধের কোনো অতীত রেকর্ড নেই। থানায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা তো দূরের কথা কোনো জিডিও নেই। আরজুর পরিবারের অভিযোগ আমলে নিয়ে বিষয়টি তদন্ত করা প্রয়োজন বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের ওই নেতারা। আওয়ামী লীগের একজন সম্পাদক নাম প্রকাশ না করার শর্তে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বন্দুকযুদ্ধে গত কয়েক দিনে ছাত্রলীগ-যুবলীগের চারজন নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে তিনজন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল বলে এ নিয়ে আমরা প্রশ্ন তুলছি না। কিন্তু আরজুর মৃত্যুর বিষয়টিকে আমরা সমর্থন করছি না। কারণ তাকে আমরা ভালো ছেলে হিসেবেই জানি। আমরা মনে করছি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোথাও ভুল হয়েছে।’ হাজারীবাগ থেকে নির্বাচিত আওয়ামী লীগদলীয় সংসদ সদস্য ফজলে নূর তাপস গতকাল আরজুর কুলখানিতে অংশ নিয়ে বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত র‌্যাব সৃষ্টির মাধ্যমে বহু নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করেছিল। র‌্যাবকে ঢেলে সাজাতে হবে, জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। আমার আরজুকে কেন হত্যা করা হলো তার জবাব প্রত্যেকটা ব্যক্তিকে দিতে হবে।’ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত গতকাল বিকেলে জাতীয় সংসদের মিডিয়া সেন্টারে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেছেন, ‘কোনো সভ্য জগতেই বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড সমর্থন করে না। কিন্তু এটা কেন ঘটছে? আইনের শাসনের দুবর্লতার কারণে এটা হচ্ছে। আমাদের এক লাখ ৫০ হাজার জনের বিপরীতে বিচারক মাত্র একজন। এই দিয়ে আপনি কিভাবে বিচারব্যবস্থা আধুনিক করবেন? বিচারক নিয়োগ দেন, বিচার বিভাগকে আধুনিক করেন, দেখবেন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড অনেক কমে গেছে।’ নালিশি মামলার আরজিতে বলা হয়, মোবাইল ফোনসেট চুরির অভিযোগে ১৭ আগস্ট নিরীহ কিশোর রাজা মিয়াকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় আরজু মিয়াকে প্রধান আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। ওই দিন বিকেল ৫টার দিকে পূর্বপরিকল্পনামাফিক আরজুকে হাজারীবাগ পার্কের প্রধান ফটক থেকে ‘হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ করে’ অজ্ঞাত কোনো জায়গায় লুকিয়ে রাখা হয়। আরজুকে পরে ‘গুলি করে হত্যা’ করা হয়। এরপর সিকদার মেডিক্যালের পেছনে খোলা জায়গায় ফেলে রাখা হয় তার লাশ। বাদী অভিযোগ করে বলেন, ‘গত ১৯ আগস্ট র‌্যাব-২-এর সিও সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্বীকার করেছেন, আরজু মিয়া বন্দুকযুদ্ধে মারা গেছেন। এরপর আমি হাজারীবাগ থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে থানা মামলাটি গ্রহণ করেনি। তাই আদালতের শরণাপন্ন হয়েছি।’ গত ১৭ আগস্ট সকালে মোবাইল ফোনসেট চুরির অভিযোগে একই এলাকার রাজা নামের এক কিশোরকে বাসা থেকে ধরে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেন হাজারীবাগ ছাত্রলীগ নেতা আরজু। এ ঘটনায় রাজার বোন রেশমা আক্তার শাবানা বাদী হয়ে হাজারীবাগ থানায় আরজুকে প্রধান আসামি করে ১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। পরে র‌্যাব-২ বিষয়টি নিয়ে তদন্তে নামে। রাত সাড়ে ১১টায় হাজারীবাগ এলাকা থেকে আরজুকে আটক করে র‌্যাব। পরে তাকে সঙ্গে নিয়ে অন্য আসামিদের ধরতে হাজারীবাগের বারইখালী এলাকায় পৌঁছালে আগে থেকে ওত পেতে থাকা আরজুর সহযোগীরা র‌্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় এবং র‌্যাবও পাল্টা গুলি চালায় বলে র‌্যাবের দাবি। র‌্যাব আরো দাবি করে, একপর্যায়ে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে গেলেও আরজুকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়।