কলকাতা: বর্ধমান বিস্ফোরণে জঙ্গি সংগঠন জামাত উল মুজাহিদিন, বাংলাদেশ (জেএমবি)-এর জড়িত থাকার বিষয়টি স্পষ্ট করে জানিয়ে দিল ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ)।আজ এক বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে, জেএমবি-র কার্যকলাপ তারা তদন্ত করে দেখছে। পাশাপাশি, রাজ্যের সীমান্তবর্তী ৬টি জেলায় জঙ্গি নেটওয়ার্ক ছড়িয়ে রয়েছে, এমন তথ্যও এনআইএ-র ডিজি’র রিপোর্টে উঠে আসতে চলেছে বলে সূত্রের খবর।
বর্ধমান বিস্ফোরণকাণ্ড নিয়ে এখনও পর্যন্ত একবারই মুখ খুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধীদের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রী এনআইএ নিয়ে একাধিক শব্দ খরচ করলেও বর্ধমান বিস্ফোরণ কতটা বিপজ্জনক তা বোঝা যায়নি! মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি সাংবাদিক বৈঠক করছেন স্বরাষ্ট্রসচিবও। তাঁর বক্তব্য শুনেও অবশ্য ঘটনার ধার বা ভার, কোনওটাই বোঝা সম্ভব হয়নি! এমনকি জেলা পুলিশ কিংবা সিআইডি-র তদন্তে বর্ধমান বিস্ফোরণের নেপথ্যে কারা, সে বিষয়ে কী উঠে এসেছে, তাও নিয়েও মুখে কুলুপ রাজ্য প্রশাসনের। রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজেপি নেতা সিদ্ধার্থনাথ সিংহের দাবি, রাজনৈতিক স্বার্থেই জামাত যোগের বিষয়টি সামনে আনছে না তৃণমূল সরকার।
যদিও, এনআইএ-র ডিজি-র রাজ্য সফর শেষ হতে না হতেই তারা কিন্তু প্রেস বিবৃতি দিয়ে স্পষ্ট জানিয়ে দিল, এখনও পর্যন্ত তদন্তে যা উঠে এসেছে তা হল, বর্ধমান বিস্ফোরণে অভিযুক্তরা বাংলাদেশের জঙ্গি গোষ্ঠী জেএমবি-র সঙ্গে যুক্ত। বাংলাদেশে পাচারের জন্য তারা আইইডি তৈরি করছিল। জঙ্গি কার্যকলাপের জন্য টাকা কোথা থেকে আসছিল, তা খতিয়ে দেখার পাশাপাশি জেএমবি-র নেটওয়ার্কের খোঁজও এনআইএ করছে বলে জানানো হয়েছে।
এনআইএ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, বর্ধমান এবং মুর্শিদাবাদ সফরের পর এনআইএ-র ডিজি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে যে রিপোর্ট দিতে চলেছেন, তাতে খাগড়াগড়ের ঘটনাকে অত্যন্ত গুরুতর হিসেবেই দেখানো হচ্ছে। রিপোর্টে স্পষ্ট করে দেওয়া হবে, খাগড়াগড়ে যে ঘটনা ঘটেছে, তা হিমশৈলের চূড়ামাত্র! আসলে এর শিকড় অনেক গভীরে।
সূত্রের খবর, তদন্তে নেমে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন বর্ধমান বিস্ফোরণকাণ্ডের জাল ছড়িয়ে রাজ্যের সীমান্তবর্তী ৬টি জেলায়! জেলাগুলি হল, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, মালদা, উত্তর দিনাজপুর, জলপাইগুড়ি।
গোয়েন্দাদের বক্তব্য, একটা বিস্ফোরণ, দু’জনের মৃত্যু…এসবের চেয়েও বর্ধমান বিস্ফোরণের গুরুত্ব বেশি। তার কারণ, খাগড়াগড়ে রীতমতো বিস্ফোরক নিয়ে গবেষণা চালানো হচ্ছিল। কীভাবে প্রশাসনের নজর এড়িয়ে জঙ্গিরা নির্বিঘ্নে কাজ করে যাচ্ছিল, তাতে হতবাক অনেকেই। তাদের প্রশ্ন, খাগড়াগড়ে বিস্ফোরণ না হলে তো আদৌ প্রকাশ্যে আসত না জঙ্গি-জালের এই ছবি। তখন কী হত?