ঢাকা, এপ্রিল ২৫, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ১৭:৪৭:৩৭

এ পাতার অন্যান্য সংবাদ

একীভূত হতে চাওয়া ব্যাংকের সম্পদের দাম যেভাবে নির্ধারণ করা হবে টেলিভিশন ও অনলাইন সাংবাদিকদের সুযোগ-সুবিধা প্রদানের দাবি বিএফইউজে’র দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নিয়ে বিএনপির মাথাব্যথার কারণ নেই : ওবায়দুল কাদের বিএনপি একটি রাজনৈতিক দৈত্যের দল : পররাষ্ট্রমন্ত্রী শান্তি বজায় রাখার জন্য যা-যা করার আমরা করবো: বান্দরবানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবারের ঈদ যাত্রাও স্বস্তিদায়ক হচ্ছে: সেতুমন্ত্রী কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট শিশুদের নতুন করে বাঁচার পথ খুলে দেয় : সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিস্ফোরণ: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫ আসন্ন পবিত্র রমজানে সরকারিভাবে বড় ইফতার পার্টি না করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর পুলিশকে জনগণের বন্ধু হয়ে নিঃস্বার্থ সেবা দেয়ার নির্দেশ রাষ্ট্রপতির

রাজধানীতে হেলে পড়েছে ৯ ভবন ফাটল ৬টিতে

| ১৪ বৈশাখ ১৪২২ | Monday, April 27, 2015

রাজধানীতে হেলে পড়েছে ৯ ভবন ফাটল ৬টিতে
ভূমিককম্পে রাজধানীতে কমপক্ষে ১৫টি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আহত হয়েছেন একজন। ভূমিকম্পের সময় বাসিন্দাদের মধ্যে দেখা দেয় ভয়াবহ আতংক। লোকজন শংকিত হয়ে বাসাবাড়ি ও অফিস ছেড়ে রাস্তায় নেমে আসেন। গতকাল সন্ধ্যায় ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষ জানিয়েছে তারা ৯টি ভবন হেলে পড়া ও ফাটল দেখা দেয়ার বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছেন এবং সরেজমিন অনুসন্ধান করেছেন। এর বাইরে আরও অন্তত ৬টি ভবন হেলে পড়া ও ফাটল দেখা দেয়ার খবর স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে। তবে ফায়ার সার্ভিস সেগুলো নিশ্চিত করেনি। পুরান ঢাকার লালবাগের ইসলামবাগে বাসিন্দাদের নামিয়ে একটি ৫ তলা ভবন সিলগালা করে দেয়া হয়েছে। এছাড়া বংশালে বরিশাল প্লাজার পাশে একটি ৬ তলা ভবনে ফাটল দেখা দিয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সূর্যসেন হলে হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে আহত হয়েছেন এক ছাত্র।
ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষ জানায়, হেলেপড়া ৬টি ভবন হচ্ছে মোহাম্মদপুরের ২৩/৩, খিলজি রোডে আশাটাওয়ার, বনানীতে ইফাদ টাওয়ার, এফআর টাওয়ার, বনানীর ১৭ নম্বর সড়কের ২৭ নম্বর বাড়ি হোটেল (আবাসিক) সেরিনা টাওয়ার, মিরপুরের ডায়মন্ড গার্মেন্টস, নবাবপুর রোডের একটি ৬ তলা ভবন। এছাড়া তেজগাঁও, কুড়িল বিশ্বরোড ও গুলশান দুই নম্বরে আরও ৩টি ভবন হেলে পড়েছে। মগবাজারে একটি ভবনের দেয়ালে ফাটল ও শাঁখারী বাজারে আরও একটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। তবে ফায়ার সার্ভিস এসব ভবন ক্ষতিগ্রস্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেনি।
আশার কর্মকর্তা ওয়াহিদ জানান, আশা টাওয়ারে আশা ইউনিভার্সিটি, বেসরকারি সংস্থা আশার কেন্দ্রীয় কার্যালয়, সাউথইস্ট ব্যাংকসহ বেশ কিছু অফিস রয়েছে। ভবনের লোকজনকে সাময়িকভাবে সরিয়ে নেয়া হয়। আশা ইউনিভার্সিটির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো, আশরাফুল হক চৌধুরী এক বিজ্ঞপ্তিতে জানান, ফায়ার সার্ভিসের বিশেষজ্ঞদের একটি দল আশা টাওয়ার পরিদর্শন করে জানিয়েছে, ভবনটির তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। তিনি বিষয়টিকে গুজব দাবি করে বলেন, একটি মহল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে বিভ্রান্তিমূলকভাবে ওই সংবাদ ছড়িয়েছে।
বনানীর হোটেল সেরিনা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন, তাদের ভবনের কোনো ক্ষতি হয়নি। কোনো স্টাফও আহত হয়নি। বেসকিছু অক্ষত রয়েছে। হোটেলের বর্ডাররাও সবাই নিজ নিজ কক্ষে আছেন। ভূমিকম্পের সময় অন্যান্য বহুতল ভবনের মতো সেখানে কিছুটা আতংক দেখা দিয়েছিল। ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে জানানো হয়, ফাটল দেখা দেয়া ও হেলে পড়া ভবনগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ঝুঁকিমুক্ত ঘোষণা না করা পর্যন্ত বাসিন্দাদের সরিয়ে রাখা হয়েছে। কিছু ভবনের বিদ্যুৎ ও গ্যাসের লাইন সাময়িক বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন জায়গা থেকে ভবন হেলে পড়া ও ফাটলের খবর আসছে। কোনো এলাকা থেকে খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ফায়ার সার্ভিসের লোকজন সেখানে গিয়ে যাচাই করছে।
ভূমিকম্পের সময় আতংকে নামতে গিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সূর্যসেন হলের এক ছাত্র গুরুতর আহত হয়েছেন। তার সহপাঠীরা জানান, ওই ছাত্রের নাম নাসির হোসেন (২৭)। তিনি ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র। ভূমিকম্পের সময় তিনি ঘুমিয়ে ছিলেন। বন্ধুদের ডাকে দ্রুত উঠে সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় পড়ে মাথায় আঘাত পেয়েছেন নাসির। ভূমিকম্পের সময় রাজধানীর উঁচু ভবনগুলোর বাসিন্দারা দ্রুত নিচে নেমে যান। আতংকে হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে অনেকেই আহত হন।
গতকাল দুপুর সোয়া ১২টার সময় এশিয়ার সর্ববৃহৎ শপিংমল যমুনা ফিউচার পার্কে ভূমিকম্পের সময় কর্তৃপক্ষ তড়িৎ ব্যবস্থা নেন। কোনো ক্ষয়ক্ষতি না হলেও কর্তৃপক্ষ সব ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের নিরাপদে সরিয়ে নেন। কিছু সময় পর তারা আবার ফিউচার পার্কে প্রবেশ করেন। পুরানা পল্টনের বহুতল ভবন ঠিকানার বাসিন্দা নাসির জানান, ভয়ে বাসিন্দারা নিচে নেমে যান। শান্তিনগর টুইন টাওয়ারের ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন জানান, তাৎক্ষণিকভাবে ভবনের ব্যবসায়ীরা দ্রুত নেমে যান। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর নিজ নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যান।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরে মহাপরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আলী আহম্মেদ খান বলেন, ভূমিকম্পটির কেন্দ্র বাংলাদেশের কাছাকাছি হলে ক্ষয়ক্ষতি আরও অনেক বেশি হতো। এর কেন্দ্র ঢাকা থেকে অনেক দূরে হওয়ায় রক্ষা পাওয়া গেছে। ভূমিকম্পের মতো ভয়াবহ দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি প্রতিরোধে ইমারত নির্মাণ আইন সঠিকভাবে প্রয়োগের মাধ্যমে ঝুঁকি অনেকটা কমানো সম্ভব। ভূমিকম্পের পর আগুন লেগে যেতে পারে এবং গ্যাস লাইনে বিস্ফোরণ হতে পারে। এগুলোর বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।- যুগান্তর