ঢাকা, এপ্রিল ২০, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ০২:৫৪:১৩

এ পাতার অন্যান্য সংবাদ

পূর্ব লেবাননে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল জিম্মি চুক্তিতে হামাসকে রাজি করাতে মিসর ও কাতারের দ্বারস্থ বাইডেন দক্ষিণ চীন সাগরে সামরিক মহড়া চীনের গাজা যুদ্ধে নিহতের সংখ্যা ৩০ হাজার ছাড়িয়েছে রমজানে মুসলমানদের আল আকসায় নামাজ পড়ার অনুমতি দিতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ গাজায় তুমুল যুদ্ধ ॥ চলছে যুদ্ধবিরতির বৈঠক জর্ডানে মার্কিন সৈন্য হত্যা ॥ দায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনার অঙ্গীকার যুক্তরাষ্ট্রের গাজা যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্তদের সাথে জাতিসংঘ দূতদের সাক্ষাত জি৭ নেতাদের ভিডিও শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী না হলে বাইডেন ও অনিশ্চিত

যুক্তরাজ্যের ইহুদি সংগঠনকে মুসলিম সংগঠনের চ্যালেঞ্জ

| ১৮ চৈত্র ১৪২৪ | Sunday, April 1, 2018

গাজায় ভুমি দিবসে ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর গুলির ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্রিটিশ জিউশকে খোলা চিঠি দেওয়া হয়

গাজা উপত্যকার সাম্প্রতিক হতাহতের ঘটনায় বোর্ড অব ডেপুটিজ অব ব্রিটিশ জিউশের টুইটকে চ্যালেঞ্জ করেছে মুসলিম অ্যাসোসিয়েশন অব ব্রিটেন। ওই মুসলিম সংগঠনের দাবি, বিদ্বেষ ইস্যুতে একদিনের ব্যবধানে দুই ধরনের অবস্থান নিয়েছে ব্রিটিশ জিউশ সংগঠন। ওই ইহুদি সংগঠনের উদ্দেশে লেখা এক খোলা চিঠিতে তাদের এই অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে। ডাক দেওয়া হয়েছে সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে পড়া বর্ণবাদ ও ধর্মীয় বিদ্বেষের ব্যাধিকে ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলার।

গাজায় ভুমি দিবসে ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর গুলির ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্রিটিশ জিউশকে খোলা চিঠি দেওয়া হয়

উল্লেখ্য, ৩০ মার্চ ছিল ভূমি দিবস উপলক্ষে টানা ছয় সপ্তাহের বিক্ষোভের প্রথমদিন। এদিন গাজার ইসরায়েল সীমান্তের ছয়টি স্থানে এই বিক্ষোভ হয়। বিক্ষোভে ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর গুলিতে ১৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়। ‘গ্রেট মার্চ অব রিটার্ন’ নামের এই বিক্ষোভ চলাকালে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় আরও ১৫০০ মানুষ আহত হন। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে ৩০ মার্চ একটি টুইটার বার্তা দেয় ব্রিটিশ জিউশ সংগঠন। টুইটে বলা হয়, ‘হামাস কর্তৃক আবারও শিশুসহ বেসামরিক লোকজনকে দাবার গুটির মতো ব্যবহারে গাজা সীমান্তে ‘বিপদজনক অবস্থা’র সৃষ্টি হয়েছে। আমরা তাদের শান্ত হওয়ার জন্য এবং আলোচনার টেবিলে ফেরার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি, যেন এর মধ্য দিয়ে টেকসই ও কর্মশক্তিপূর্ণ ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি একটি নিরাপদ, ইহুদিভিত্তিক এবং গণতান্ত্রিক ইসরায়েল গড়ে তোলা যায়।’

ওই টুইটার বার্তার প্রতিক্রিয়ায় বোর্ড অব ডেপুটিজ অব ব্রিটিশ জিউশ-এর প্রেসিডেন্ট জোনাথন আরকুশ বরাবর খোলা চিঠি লিখেছেন মুসলিম অ্যাসোসিয়েশন অব ব্রিটেনের প্রেসিডেন্ট আনাস আলতিকরিতি। চিঠির শুরুতে ২৯ মার্চ লিভ.ইইউ ক্যাম্পেইনের বিদ্বেষমূলক একটি টুইট প্রত্যাখ্যান করার কারণে ব্রিটিশ জিউশের প্রশংসা করা হয়। বলা হয়, ওই টুইটে এক ধরনের বৈষম্য ও বিদ্বেষের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর কথা বলতে গিয়ে অন্য একটি বিদ্বেষকে উসকে দেওয়া হচ্ছিলো। লিভ.ইইউ-এর টুইটে দাবি করা হয়েছিল, ব্রিটিশ লেবার পার্টি ভোটের জন্য মুসলিমদের ওপর নির্ভরশীল এবং তারা ইহুদিবিদ্বেষ মোকাবিলায় তৎপর নয়। ওই টুইটে বলা হয়, ‘লেবার পার্টি যখন ব্রিটেনে ক্রমবর্ধমান মুসলিম জনগোষ্ঠীর ভোটের ওপর এতো বেশি নির্ভরশীল তখন তারা যদি তাদের দলের মধ্যে ন্যাক্কারজনক ইহুদিবিদ্বেষকে মোকাবিলায় তৎপর না হয় তখন তা নিয়ে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই।’

লিভ.ইইউ-এর বিদ্বেষমূলক টুইটের প্রত্যাখ্যান করার একদিন পরেই অর্থাৎ ৩০ মার্চের টুইটে হামাসকে বিক্ষোভের আয়োজক এবং নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের হামলাকারী হিসেবে ইঙ্গিত করায় ব্রিটিশ জিউশের প্রতি ক্ষোভ জানানো হয়েছে খোলাচিঠিতে।

ব্রিটিশ জিউসের টুইটে বিক্ষুব্ধদের সন্ত্রাসী তকমা দেওয়া হলেও খোলা চিঠিতে বলা হয়েছে, ওই বিক্ষোভে অংশ নেওয়া লাখো বিক্ষোভকারীর কেউই সশস্ত্র ছিল না। গাজা সীমান্ত পেরিয়ে কোনও সহিংসতা হওয়ার হুমকিও ছিল না। সেনা সদস্য কিংবা বেসামরিক নাগরিক যার কথাই বলি না কেন কোনও ইসরায়েলিই কখনও হুমকিতে ছিল না, ক্ষতি হওয়া তো দূরের কথা। সকল টেলিভিশন সম্প্রচার, ছবি এবং ভিডিও ক্লিপের মধ্য দিয়ে স্পষ্টভাবে বোঝা যায়, শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভরত বেসামরিকদের ওপর স্নাইপার ছুড়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।

ব্রিটিশ জিউশের টুইটে হামাসকে বিক্ষোভের আয়োজক বলা হলেও খোলা চিঠিতে এই দাবিকে মিথ্যা আখ্যা দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, তারা অবস্থান নিয়েছেন তা ফিলিস্তিনি জনগণ এবং ওই বিক্ষোভের আয়োজকদের প্রতি ভীষণ অন্যায়।

ফিলিস্তিনিদের আলোচনার টেবিলে ফিরতে বলার বিপরীতে ওই চিঠিতে বলা হয়, ‘আপনারা বলে আসছেন ফিলিস্তিনিদের আলোচনার টেবিলে ফেরা উচিত, তারপরও আপনারা লাখ লাখ ফিলিস্তিনির মনে জমে থাকা হতাশাকে এড়িয়ে যান। ইসরায়েলি দখলদারিত্ব, সেপারেশন ওয়াল, অবৈধ বসতি, ফিলিস্তিনিদের কাঠামোগত বহিষ্কার, অবৈধভাবে জেরুজালেমকে সংযুক্তিকরণ এবং আরও অনেক কিছুর নিন্দা জানিয়ে জাতিসংঘের সমাধান প্রস্তাব ৫০ বছর ধরে পূরণ না হওয়া নিয়ে হতাশা ছিল তাদের মধ্যে। আর সে হতাশার মধ্যেই জেরুজালেম প্রশ্নে মার্কিন প্রেসিডেন্টের নেওয়া নির্মম সিদ্ধান্তের মুখোমুখি হতে হয় তাদের। প্রমাণ হয়, ওইসব আলোচনা প্রকৃতপক্ষে নিষ্ফল এবং নিরর্থক।

ক্ষোভ জানিয়ে চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘উন্মুক্ত কারাবাসী হিসেবে দিন যাপনকারী ২০ লাখ গাজা উপত্যকাবাসীর অবস্থার কথা চিন্তা করে দেখুন। [জাতিরাষ্ট্রের] স্বীকৃতি ছাড়া, এমনকী এ সংক্রান্ত কোনও প্রস্তাবের আশা ছাড়াই বিগত ১১টি বছর ধরে তারা সার্বিক অর্থে শ্বাসরুদ্ধকর এক পরিস্থিতির মধ্যে আছে।’