ঢাকা, এপ্রিল ২৫, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ০৭:০০:০৬

এ পাতার অন্যান্য সংবাদ

বিএনপি একটি রাজনৈতিক দৈত্যের দল : পররাষ্ট্রমন্ত্রী শান্তি বজায় রাখার জন্য যা-যা করার আমরা করবো: বান্দরবানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসন্ন পবিত্র রমজানে সরকারিভাবে বড় ইফতার পার্টি না করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর পুলিশকে জনগণের বন্ধু হয়ে নিঃস্বার্থ সেবা দেয়ার নির্দেশ রাষ্ট্রপতির রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বিশ্বব্যাপী প্রচেষ্টার ওপর গুরুত্বারোপ প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় আসার নিশ্চয়তা না পেয়ে বিএনপি নির্বাচন বর্জন করেছে : প্রধানমন্ত্রী মৌলবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মানুষের সাংস্কৃতিক সম্পৃক্ততার আহ্বান তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর সংসদে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে স্বতন্ত্র সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী প্রকল্প বাস্তবায়নে অসাধারণ সাফল্য দেখিয়েছে পিপিপি বিদেশি পর্যবেক্ষকদের আগমন স্বচ্ছ নির্বাচনে সহায়ক : তথ্যমন্ত্রী

যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যদিয়ে দেশব্যাপী জাতীয় শোক দিবস পালন

| ১ ভাদ্র ১৪২৩ | Tuesday, August 16, 2016

ঢাকা: যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যদিয়ে শোকার্ত বাঙালি আজ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪১তম শাহাদাৎবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন করছে।
শোকাবহ এ দিনটি স্মরণে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত এবং কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনগুলো দলীয় পতাকা অর্ধনমিত রেখেছে।
জাতির এ শ্রেষ্ঠ সন্তান ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে দেশের সর্বস্তরের মানুষ বিভাগীয় শহর, জেলা, উপজেলা ও থানা পর্যায়ে কাঙ্গালী ভোজ, দোয়া, মিলাদ মাহফিল, পূজা ও প্রার্থনার মাধ্যমে দিবসটি পালন করছেন।
বাসসের বিভাগীয় প্রতিনিধি, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সংবাদদাতাগণ জানান, বাংলাদেশের অগ্রগতিকে স্তব্ধ করে দিতে কুচক্রী মহলের ষড়যন্ত্রে নিহত হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি ও বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধুর অকাল প্রয়াণের এই শোককে শক্তিতে পরিণত এবং দেশকে তাঁর দেখানো পথে পরিচালিত করতে তাঁরই সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তাঁর আদর্শের সৈনিকেরা আজ কালো ব্যাজ ধারণ করে শোক র‌্যালি, তাঁর প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ এবং তাঁর জীবন ও কর্ম নিয়ে আলোচনা করেন।
জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে দিবসটি স্মরণে সরকারের বিভিন্ন অধিদপ্তর এবং বিভিন্ন সংগঠন শোক র‌্যালি, জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ, আলোচনা সভা, স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি, ফ্রি মেডিকেল চেকআপ, জাতির পিতাকে নিয়ে লেখা ছড়া, কবিতা ও রচনা এবং চিত্রাংঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন ছাড়াও বঙ্গবন্ধুর জীবনী নিয়ে নির্মিত প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়েছে।
পাবনা সংবাদদাতা জানান, জেলার সর্বত্র যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪১তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন করা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে পাবনা জেলা প্রশাসন, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ, হাজী জসীম উদ্দিন ডিগ্রি কলেজ, পাবনা জেলা আওয়ামী লীগ, সকল উপজেলা প্রশাসন, ড্রামা সার্কেলসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন বঙ্গবন্ধুর প্রকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা, শোক র‌্যালি, আলোচনা সভা, চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, রচনা প্রতিযোগিতা, কবিতা আবৃত্তি, রক্তদান কর্মসূচি, প্রামান্যচিত্র প্রদর্শনী, দোয়া মাহফিল ও খাবার বিতরণসহ ব্যাপক কর্মসূচি পালন করে। এসব কর্মসূচিতে সর্বস্তরের মানুষের ব্যাপক অংশগ্রহণ ছিল লক্ষণীয়।
জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সকালে দুর্জয় পাবনায় বঙ্গবন্ধুর প্রকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, জেলা প্রশাসনের কার্যালয় থেকে শোক র‌্যালি বের হয়ে তা মুক্তমঞ্চে গিয়ে শেষ হয়। রফিকুল ইসলাম বকুল পৌর মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসক রেখা রানী বালোর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন পাবনা জেলা পরিষদ প্রশাসক এম সাইদুল হক চুন্নু, পুলিশ সুপার আলমগীর কবির, জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি রেজাউল রহিম লাল, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হাবিবুর রহমান হাবিব, মুক্তিযোদ্ধা আ স ম আব্দুর রহিম পাকন, সাংবাদিক আব্দুল মতিন খান প্রমুখ।
খুলনা সংবাদদাতা জানান, বিভিন্ন কর্মসূচি মধ্যদিয়ে আজ খুলনায় স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪১তম শাহাদাৎ বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস-২০১৬ যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে ছিল জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা, শোকর‌্যালি, জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ, আলোচনা সভা, শিক্ষার্থীদের কবিতা পাঠ ও চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, ফ্রি-মেডিকেল ক্যাম্প, বিশেষ দোয়া-মোনাজাতসহ অন্যান্য অনুষ্ঠান।
জেলা প্রশাসনের আয়োজনে অফিসার্স ক্লাব মিলনায়তনে সকাল সাড়ে নয়টায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ। বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুস সামাদ, জেলা পরিষদ প্রশাসক শেখ হারুনুর রশীদ, খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি একরামুল হাবিব, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মাহবুব হাকিম এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এস এম শফিউল¬াহ।
জেলা প্রশাসক নাজমূল আহসানের সভাপতিত্বে এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ মহানগর ইউনিট কমান্ডার অধ্যাপক আলমগীর কবির। অনুষ্ঠান শেষে যুবকদের মাঝে যুবঋণ এবং শিশুদের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় সেরাদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। এর আগে সকাল সাড়ে আটটায় নিউমার্কেট চত্বর হতে দিবসটি পালন উপলক্ষে শোক র‌্যালি বের করা হয়। র‌্যালিতে খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য মুহাম্মদ মিজানুর রহমান, বাগেরহাট-৩ আসনের সংসদ সদস্য তালুকদার আবদুল খালেক, খুলনা বিভাগীয় কমিশনার, পুলিশ কমিশনার, বীর মুক্তিযোদ্ধা, সরকারী-বেসরকারী কর্মকর্তাসহ সর্বস্তরের জনগণ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। র‌্যালিটি বাংলাদেশ বেতার খুলনায় গিয়ে শেষ হয়। পরে খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য এস এম মোস্তফা রশিদী সুজাসহ সকলে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন। জেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিশু একাডেমী আলোচনা, কবিতাপাঠ, রচনা ও চিত্রাংকন প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। সকাল ১০টায় ইসলামিক ফাউন্ডেশন আলোচনা, হামদ, নাত ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে। খুলনা জেলা তথ্য অফিস সন্ধ্যায় শহীদ হাদিস পার্কে বঙ্গবন্ধুর কর্মময় জীবনের ওপর নির্মিত ‘চিরঞ্জীব বঙ্গবন্ধু’ প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করে।
চট্টগ্রাম সংবাদদাতা জানান, বন্দনগরী চট্টগ্রামে যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে জেলা প্রশাসক আলোচনা সভার আয়োজন করেন। সেখানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি বলেন, বাংলাদেশের অস্তিত্ব ও সামগ্রিক অগ্রযাত্রার মূলে রয়েছেন একজন অসীম সাহসী দেশপ্রেমিক ও সর্বকালের সেরা বাঙালি, আর তিনি হলেন আমাদের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। অথচ পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি, আন্তর্জাতিক ও দেশীয় ষড়যন্ত্রকারীরা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করে। এতে দেশের অগ্রগতি থেমে যায়। কিন্তু ‘সময়ের আবর্তনে তাঁরই সুযোগ্য কন্যা আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ একটি সমৃদ্ধশালী দেশে পরিণত হয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন ৩০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, অর্থনীতি ও অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে ২০৪১ সালের মধ্যেই এদেশ উন্নত রাষ্ট্রের মর্যাদায় অধিষ্ঠিত হওয়ার স্বপ্ন দেখছে।’
এমনই নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে পিরোজপুর, নড়াইল, লক্ষ্মীপুর, সিলেট, দিনাজপুর, জয়পুরহাট, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, জামালপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্জগড়, কেরানীগঞ্জ, ঝিনাইদহ, নারায়ণগঞ্জ, খাগড়াছড়ি, যশোর, টাঙ্গাইল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, বগুড়া, রাজশাহী, গাইবান্ধা, চাঁদপুর, লালমনিরহাট, মাগুড়া, মেহেরপুর, পীরগঞ্জ, মৌলভীবাজার, কুষ্টিয়া, মুন্সীগঞ্জ, বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প যাদুঘর, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বিসিএমসি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি মহাবিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনির্ভাসিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলজি এ্যান্ড সায়েন্সেস, মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু অধ্যায়ন কেন্দ্র, বঙ্গবন্ধু সাংবাদিক পরিষদসহ আরো বিভিন্ন সংগঠন দেশের বিভিন্ন স্থানে যথাযথ ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যদিয়ে বঙ্গবন্ধুর ৪১তম শাহাদাৎবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবসের নানা কর্মসূচি পালিত হয়েছে।