কলকাতা: আর কয়েক মাস বাকি। তার মধ্যেই ঠিক হয়ে যাবে কে হবেন দেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী। বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের প্রশাসনিক প্রধানের পদের দৌড়ে ফের একবার উঠে আসছে এক বাঙালির নাম। বিজেপি শিবির থেকেও তেমনই একটা ইঙ্গিত মিলেছে।
এরই মাঝে চাঞ্চল্যকর দাবি করলেন বিজেপির জাতীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য জয় বন্দ্যোপাধ্যায়। নরেন্দ্র মোদী বেঁচে থাকতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। জয়ের কথায়, “ভারতের প্রধানমন্ত্রীর পদ নরেন্দ্র মোদীর জন্য ফিক্সড হয়ে গিয়েছে। মোদী বেঁচে থাকতে ওই পদে অন্য আর কেউ বসতে পারবেন না।” এই অবস্থায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই বলে জানিয়েছেন জয়।
নিজের গুণেই নরেন্দ্র মোদী অজেয় হয়ে উঠেছেন বলে দাবি করেছেন জয়। তিনি বলেছেন, “প্রধানমন্ত্রী হয়ে নরেন্দ্র মোদী সাধারণ মানুষের জন্য ৯৭টি প্রকল্প চালু করেছেন। যার সুবিধা দেশের সব প্রান্তের লোক পাচ্ছে। বিশ্বের সকল শক্তিধর দেশগুলি এখন ভারতকে সমীহ করে চলছে।” এই প্রসঙ্গে আরও উদাহরণ দিতে গিয়ে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক এবং ডোকালাম পর্বের কথা বলেছেন জয়। তাঁর মতে, “ভারত জগৎসভায় শ্রেষ্ঠ আসন দখলের দিকে এগিয়ে চলেছে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে। এই ধারা বজায় রেখে শীর্ষে পৌঁছাতে দেশবাসী মোদীর উপরেই আস্থা রাখবেন।”
শনিবার পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মদিন ছিল। তাঁকে শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ জানিয়েছিলেন যে দেশের প্রথম বাঙালি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে এবং সেই পদের লড়াইয়ে এগিয়ে রয়েছেন মমতা। যা নিয়ে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল।
রবিবার এই প্রতিবেদককে বিজেপির জাতীয় নেতা জয় বলেন, “আমি আগে ভারতীয় তারপরে বাঙালি। ভারতের উন্নতি করাই আমার প্রধান লক্ষ্য। ভারতের উন্নতি হলে বাংলারও উন্নতি হবে।” একই সঙ্গে তিনি আরও বলেন, “ভারতের উন্নতি নরেন্দ্র মোদীর থেকে ভালো কেউ করতে পারবে না।”
রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতেই কী এই মন্তব্য করছেন? এই প্রশ্নের জবাবে জয় বলেছেন, “আমি নিজের মন্তব্য জানাচ্ছি। দিলীপবাবু তাঁর মন্তব্য জানিয়েছেন। আমি কারও মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া দিচ্ছি না।” পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, “তৃণমূল নেতারা যতোই দাবি করুক না কেন লোকসভায় ৪২টা আসন ওরা পাবে না। ২০১৪ সালের মতো ৩৪ টা আসন পেলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না। কারণ ৩৪ টা আসন নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হওয়া যায় না।” আগামী লোকসভা নির্বাচনে ৩৪টি আসন তৃণমূল পাবে না বলেও দাবি করেছেন জয়।
গত মাসেই পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে ভরাডুবি হয়েছে বিজেপির। যার মধ্যে তিন রাজ্যে ক্ষমতায় ছিল। এই তিন রাজ্যের মধ্যে আবার দুই রাজ্যে দীর্ঘ দেড় দশক ক্ষমতায় ছিল পদ্ম শিবির। এই ফল দেখে বিজেপি বিরোধীরা সবুজ সংকেত পেয়েছে। অবিজেপি জোট গঠন হচ্ছে বিভিন্ন রাজ্যে। এই বিষয়ে জয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, “তিন রাজ্যের হার একটা ধাক্কা অবশ্যই। তবে এই ধাক্কা সাময়িক। খুব শীঘ্রই আমরা সেই সকল পরিস্থিতি থেকে ঘুরে দাঁড়াব। আগামী লোকসভা নির্বাচনেই তা স্পষ্ট হয়ে যাবে।”