ঢাকা, এপ্রিল ২৫, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ১৭:৩৫:০৩

এ পাতার অন্যান্য সংবাদ

একীভূত হতে চাওয়া ব্যাংকের সম্পদের দাম যেভাবে নির্ধারণ করা হবে টেলিভিশন ও অনলাইন সাংবাদিকদের সুযোগ-সুবিধা প্রদানের দাবি বিএফইউজে’র দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নিয়ে বিএনপির মাথাব্যথার কারণ নেই : ওবায়দুল কাদের বিএনপি একটি রাজনৈতিক দৈত্যের দল : পররাষ্ট্রমন্ত্রী শান্তি বজায় রাখার জন্য যা-যা করার আমরা করবো: বান্দরবানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবারের ঈদ যাত্রাও স্বস্তিদায়ক হচ্ছে: সেতুমন্ত্রী কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট শিশুদের নতুন করে বাঁচার পথ খুলে দেয় : সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিস্ফোরণ: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫ আসন্ন পবিত্র রমজানে সরকারিভাবে বড় ইফতার পার্টি না করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর পুলিশকে জনগণের বন্ধু হয়ে নিঃস্বার্থ সেবা দেয়ার নির্দেশ রাষ্ট্রপতির

মোদিজীর ঢাকা সফর ও আমরা নির্যাতিত হিন্দু

| ২৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪২২ | Friday, June 12, 2015

সিদ্ধার্থ সিধু :
আমার আদর্শিক গুরুভাই শ্রী নরেন্দ্র দামোদর দাস মোদি বাংলাদেশে আসছেন আজ। আসার পূর্বে দ্য টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, “বাংলাদেশ সফরে হিন্দুদের সঙ্গে ‘দূরত্ব’ বজায় রাখবেন মোদি”। এই খবরে আরো বলা হয়েছে, হিন্দু বিষয়ে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান খুবই সংবেদনশীল।

প্রথমে তেমনি ছিল, মোদির প্রতিটি বিদেশ সফরে নিজ জনগোষ্ঠীর লোকজনের সঙ্গে দেখা করার বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়া হলেও বাংলাদেশ সফরে ব্রাত্য থেকে যায় বিষয়টি। পরবর্তিতে একটি ৩০-৩৫ জন বিশিষ্ট দলের সাথে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে মোদিজী পূজা দেওয়ার সময় সৌজন্য সাক্ষাৎ করার সিদ্ধান্ত নেয়।

সেই দলের মধ্য আমাদের সংগঠনের ৮ জন দেখা করার সুযোগ পায়, বাংলাদেশ সরকার বা ঢাকার ভারতীয় দুতাবাসের ইচ্ছা না থাকলেও দিল্লী বিজেপি’র কারণে ৮ জনকে মোদিজীর সাথে দেখা করার অনুমতি দেয় ঢাকার ভারতীয় দুতাবাস। ৮ জনের মধ্য আমিও ছিলাম। পরে শুনলাম এখানে আমি, স্বাধীন ও পূজন ছাড়া আর বাকি অন্যরা আমাদের বাপ-বয়সী মানুষ। সিদ্ধান্ত নিলাম এখানে যাওয়া আমাদের তিন জনের খারাপ দেখাবে।

বাকি তালিকাতে প্রায় সব হিন্দু-বৌদ্ধ ঐক্য পরিষদ ও পূজা উদযাপন পরিষদের নেতারা। স্বাভাবিক ভাবে তাদের পাওয়ারই কথা কারণ তারা নামে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সংগঠন হলেও কামে আওয়ামীলীগের অঙ্গসংগঠন। বাহির থেকে শুধু গোবিন্দ প্রমানিক দার নাম দেখলাম। আমার মনে হয় গোবিন্দ দাও ওদের ভেতর গিয়ে কথা বলতে পারবে না।

কেন যাবো না: কারণ ওখানে আমাদের মানায় না, বয়সে অনেক ছোট, হয়ত কোন কথা বলার কারো সুযোগ দেবে না কিন্তু বেশি দালালী করতে দেখলে মুখ ফুসলে সত্য কথা জোরে বলে ফেলতে পারি। ব্যাস তাতেই হয়েছে, দেশের গোয়েন্দা সংস্থার নজরে এসে হুদায় ঝামেলা সৃষ্টি হবে। আর সেখানে এমন একটা পরিবেশ সৃষ্টি করবে সেখানে সরকারী দালালরা সাড়া আর কাউকে কথা বলতে দেবে না। সেই কারণে সংগঠনের উপদেষ্ঠা ২ জনকে ও সভাপতি-সম্পাদক মোট ৪ জন যাচ্ছেন দেখা করতে। সুযোগ পেলে তারাও কম বলবেন না।

এবার বলতে পারেন, দাদা তাহলে তো এদেশের হিন্দুদের নির্যাতন ও বর্তমান অবস্থার কথা মোদিজী জানবেন না।

কিছুদিন আগে দিল্লীতে গিয়েছিলাম, ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথজীসহ কয়েকজন বর্ষিয়ান বিজেপি নেতার আর্শিবাদ নেওয়ার সুযোগ হয়েছিল। তখন তাদের কাছে বাংলাদেশের হিন্দুদের নির্যাতনের কথা বলতে গিয়ে দেখলাম, আমার বলার আগে তারাই বেশি বলছে কোথায়, কতগুলো, কারা কারা, কিভাবে হিন্দুদের উপর নির্যাতন করেছে। ড. স্বামীতো হেসে বলেই দিলেন গত একবছরে বড় বড় বাংলাদেশের হিন্দু নির্যাতনের কথা।

তাই ঢাকা সফরে মোদিজী আসছেন দু’দেশের সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য। সেখানে হিন্দুদের নির্যাতনের কথা তুলে না ধরলেও মোদিজী খুব ভালো করেই জানেন বাংলাদেশের হিন্দুদের অবস্থার কথা। মোদিজীর কাছে নতুন কিছু আমাদের দেওয়ার কোন প্রয়োজন নেই। তার কাছে বাংলাদেশের হিন্দু নির্যাতনের সব তথ্য ও ইতিহাস প্রতিনিয়ত পৌঁছায়।

খাস বাংলায় বলতে গেলে, ভারতের আন্তর্জাতিক গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ বিভিন্ন দেশের ন্যায়ে বাংলাদেশেও তাদের নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করেছে কঠিন ভাবে। তাদের মাধ্যমে ও তথ্য-প্রযুক্তির এই সময়ে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রতিনিয়তই ভারতের উপর মহলে বাংলাদেশের হিন্দুদের কথা যাচ্ছে।

প্রশ্ন করতে পারেন, তাহলে কিছু করছে না কেন? আমার তার উত্তর জানা নেই, সেটা ভারতই ভালো জানে। তবে নয়াদিল্লি অনেক নেতারাই আমাদের ভূল ধরিয়ে বলেছে, বাঙালী হিন্দুরা বাংলাদেশে ও পশ্চিমবঙ্গে সংগঠিত না। কিন্তু তামিল হিন্দুরা তামিলনাড়ু ও শ্রীলঙ্কায় সংগঠিত একারণে মোদিজী শ্রীলঙ্কা সফরে গিয়ে তামিল হিন্দুদের জন্য সরাসরি সায়ত্বশাসনের কথা বলেছেন।

বাস্তবাটাই তাই, আমরা সংগঠিত না, আমরা প্রচন্ড আত্মলোভী একটা জাত, আমরা নিজেরাই আমাদের নিজেদের ভাগ্যকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছি। হয়ত ঢাকেশ্বরী মন্দিরে হিন্দু সমাজের নেতা হিসেবে ঐক্য পরিষদ ও পূজা উদযাপন পরিষদের দু’একজন নেতারা বক্তব্যে মোদিজীর সামনে দাঁড়িয়ে, দেশের হিন্দুরা ভালো আছে, সুখে আছে, শান্তিতে আছে বলে বর্তমান সরকারকে মোদিজীর সামনে তুলে ধরতে চেষ্টা করবেন আর মোদিজী মায়ের মন্দিরে বসে বসে হাসবেন আর বুঝেও যাবেন এ্ই দালালরা যদি হয় এই সমাজের নেতা তবে বাংলাদেশের হিন্দুগুলো ১৭% থেকে ৮.৫% পরিণত হবে ছাড়া অন্যরা হবে!

যাইহোক যারা বাংলাদেশের হিন্দুদের নিয়ে ভাবেন ও চিন্তা করেন তাদের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি, বাংলাদেশের হিন্দু নির্যাতনের কথা ভারত সরকার ও মোদিজীর খুব ভালো ভাবে জানা আছে। মোদিজী এই সফরে হিন্দুদের জন্য কিছু না বলে বা না করে গেলেও আমার দীর্ঘবিশ্বাস আমার আদর্শিক গুরু মোদিজী তার শাসনামলে বাংলাদেশের হিন্দুদের জন্য ভাল কিছু করে যাবেন। কারণ মোদিজী স্বামী বিবেকানন্দের আদর্শে আদর্শিত তবে রামকৃষ্ণ মিশন নয়! উনি প্রকৃত স্বামীজির অনুসারী।