ঢাকা, এপ্রিল ২৬, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ০৫:১৮:৩৮

এ পাতার অন্যান্য সংবাদ

পূর্ব লেবাননে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল জিম্মি চুক্তিতে হামাসকে রাজি করাতে মিসর ও কাতারের দ্বারস্থ বাইডেন দক্ষিণ চীন সাগরে সামরিক মহড়া চীনের গাজা যুদ্ধে নিহতের সংখ্যা ৩০ হাজার ছাড়িয়েছে রমজানে মুসলমানদের আল আকসায় নামাজ পড়ার অনুমতি দিতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ গাজায় তুমুল যুদ্ধ ॥ চলছে যুদ্ধবিরতির বৈঠক জর্ডানে মার্কিন সৈন্য হত্যা ॥ দায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনার অঙ্গীকার যুক্তরাষ্ট্রের গাজা যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্তদের সাথে জাতিসংঘ দূতদের সাক্ষাত জি৭ নেতাদের ভিডিও শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী না হলে বাইডেন ও অনিশ্চিত

মমতার সফরসঙ্গী ইমরান, বিব্রত দিল্লি

| ৩ ফাল্গুন ১৪২১ | Sunday, February 15, 2015

  •  

 

 

 

 

 

 

 

ক্ষমতা থেকে নেমে যাওয়ার পর আত্মগোপনে থাকা অনেক জামায়াত নেতার জন্য সীমানার ওপারে অর্থ পাচারের সঙ্গে ইমরানের সম্পৃক্ততার বিষয়টিও ঘনিষ্ঠভাবে তদন্ত করছে সিবিআই।

বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও বলছে, তাদের কাছে ‘অবৈধ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে’ ইমরানের সম্পৃক্ততা ও দেশের ভেতরে জঙ্গি কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকার বিষয়ে প্রাথমিক প্রমাণ রয়েছে।

গত বছরের ২ অক্টোবর খাগড়াগড় বিস্ফোরণের পর বাংলাদেশের মৌলবাদী শক্তি জামায়াতসহ বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে ইমরানের যোগাযোগ থাকার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে পেয়েছে ভারতীয় গোয়েন্দারা।

এই ধরনের একজন মমতার সফরসঙ্গী হলে তা বাংলাদেশের পক্ষে মেনে নেওয়া কঠিন বলে এর মধ্যেই বাংলাদেশি কূটনীতিকদের পক্ষ থেকে ভারত সরকারকে জানানো হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভারতের পররাষ্ট্র দপ্তরের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সমস্যা হলো একজন সাংসদ হিসেবে ইমরানের ভিসার দরকার হবে। এখন মমতা যদি তাকে সফরসঙ্গী রাখেন, তাহলে বাংলাদেশের জন্য তার প্রবেশ ঠেকানো কঠিন হবে। বর্তমান সরকার তার বিরুদ্ধে সারদা কেলেঙ্কারি ও জঙ্গি সম্পৃক্ততার তদন্ত শুরু করার পর বিনা বিচারে তার প্রবেশ মেনে নেওয়া তাদের জন্য কঠিন।”

তিনি বলেন, স্থল সীমানা চুক্তি ও তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি স্বাক্ষরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ মোদীর উদ্যোগে সহায়তার জন্য মমতার বাংলাদেশ সফরকে শুভ সূচনা হিসেবে দেখছে পররাষ্ট্র দপ্তর।

“কিন্তু ঘনিষ্ট একটি সহযোগী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ সরকারের জন্য অস্বস্তির কারণ হয়- এমন কিছুও আমরা করতে পারি না।”

এখন পররাষ্ট্র দপ্তর পরেছে উভয় সংকটে- তারা যদি ইমরানকে সফর থেকে বাদ দেওয়ার পরামর্শ দেয় তাহলে জনসম্মুখে এটা নিয়ে বিক্ষোভ প্রকাশ করে সফর বাতিলের অজুহাত হিসেবে দাঁড় করাবেন মমতা। আর তারা যদি ইমরানকে না থামান তাহলে ঘনিষ্ট প্রতিবেশী বাংলাদেশকে অস্বস্তিতে ফেলা হবে।

তিনি বলেন, “আমরা আশা করি মমতার শুভ বুদ্ধির উদয় হবে এবং তিনি সঙ্গে এমন কাউকে নেবেন না যাকে অভ্যর্থনা জানানো শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরকার বিব্রত বোধ করবে।”

ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে প্রকাশ, সন্ত্রাসবাদী জঙ্গি গোষ্ঠী ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের অঙ্গ সংগঠন নিষিদ্ধ ঘোষিত স্টুডেন্টস ইসলামিক মুভমেন্ট অব ইন্ডিয়ার (সিমি) সাবেক নেতা ছিলেন।

ভারতের পূর্বাঞ্চলে মুসলিমদের জনপ্রিয় একটি পত্রিকার সম্পাদক হওয়ায় মুসলিমদের ভোট কাড়তে মমতার নজরে পরেন ইমরান। পরে তিনি নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষে ভোট জোগাড়ে নামেন।

কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সূত্রের বরাতে গণমাধ্যমের খবর, ২০০৬ ও ২০০৭ সালে বাংলাদেশের জামায়াত ও ভারতের সিমি নেতাদের মধ্যে কলকাতায় চারটি বৈঠক হয়। এর মধ্যে ২০০৭ সালের ১২ অগাস্ট একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার নামের আড়ালে একটি বৈঠক হয়। বৈঠকগুলিতে একাধিক জামায়াত ও সিমি নেতা উপস্থিত ছিলেন বলে গোয়েন্দাদের দাবি।

গোয়েন্দাদের তথ্য অনুযায়ী, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ইমরান একাধিক বার বাংলাদেশে গিয়ে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের ছত্রচ্ছায়ায় থাকতেন। তাদের থেকে মোটা অর্থ সংগ্রহ করে নিয়ে আসতেন বলে বাংলাদেশের গোয়েন্দারা জানিয়েছেন।

এছাড়া ইমরান সিমির প্রতিনিধি হিসেবে একাধিকবার বাংলাদেশে গিয়ে জামায়াত নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বলে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে।

গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, ২০০৫ সালের ২ এপ্রিল ইমরান দুদিনের জন্য বাংলাদেশে গিয়ে একাধিক জামায়াত নেতার সঙ্গে বৈঠক করেন, যাদের মধ্যে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলিও ছিলেন।

গোয়েন্দা প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতে সিমিকে ফের চাঙ্গা করতে বহু অর্থ দিয়েছেন এই জামায়াত নেতা। ইমরান তার সাপ্তাহিক ‘কলম’ পত্রিকাট শুরু করেছিলেন সিমির মুখপত্র হিসেবে। এই পত্রিকাকে দৈনিক করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মীর কাসেমের কাছ থেকে তিনি কয়েক লাখ টাকা নিয়েছিলেন বলেও গোয়েন্দারা দাবি করেছেন।

তারা জানিয়েছেন, সেই সময়ে মীর কাসেমকে কলকাতায় নিয়ে এসে সংবর্ধনাও দিয়েছিলেন ইমরান।

২১ ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ১৯ ফেব্রুয়ারি মমতার ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে। সফরে তিস্তার পানি বণ্টন, সীমান্ত সন্ত্রাস বন্ধ এবং ছিটমহল বিনিময়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তার সঙ্গে আলোচনা হতে পারে বলে জানিয়েছেন সংস্কৃতি বিষয়কমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর।