স্থানীয় সরকারমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জমি দখলের অভিযোগের তদন্তের দাবি জানিয়েছে বিএনপি। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই আহ্বান জানান দলটির মুখপাত্র আসাদুজ্জামান রিপন।
আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন দলের তিন সাংসদের বিরুদ্ধে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতারা ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ঘরবাড়ি, সম্পত্তি দখল এবং ভয়-ভীতি দেখিয়ে, নির্যাতন চালিয়ে উচ্ছেদের অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বেয়াই স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে। এ ধরনের মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর বিরুদ্ধে যখন ব্যক্তিগত অভিযোগ আসে, তখন সরকারের অবশ্যই উচিত বিষয়টি খতিয়ে দেখা, তদন্ত করা। হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতাদের উদ্দেশ্যে বিএনপির মুখপাত্র বলেন, আপনারা একটু গলা ঝেড়ে কাশুন। আপনারা বলেছেন, সরকারি দলের নাম ভাঙিয়ে তাদের সম্পত্তি দখল হচ্ছে। আসলে নাম ভাঙিয়ে নয়, সরকারি দলের লোকজনই জমি দখল করছে। তাই এখন সময় এসেছে গলা ঝেড়ে কেশে সরাসরি কথা বলুন। কারণ আপনারাই সরকারি দলের দুইজন সংসদ সদস্য ও মন্ত্রীর নাম উল্লেখ করেছেন। তারা সরকারি দলের নাম ভাঙিয়ে নয়, তারা সরকারি দলের লোক।
নয়া দিলি্লতে সীমান্ত সম্মেলনে বিজিবি ও বিএসএফের মহাপরিচালক পর্যায়ের বৈঠক প্রসঙ্গে বিএনপির এ নেতা বলেন, গত কয়েকদিনে আগে দিলি্লতে দুই প্রতিষ্ঠানের ডিজি লেবেলের বৈঠকে যে ফলাফল প্রত্যাশা করেছিলাম তা আমরা পাইনি। তিনি বলেন, বিজিবি ডিজি বাংলাদেশকে সঠিকভাবে রিপ্রেজেন্ট করতে পেরেছেন কি না, তা নিয়ে আমাদের যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। কারণ ভারতীয় পত্র-পত্রিকায় ওই বৈঠক সম্পর্কে যে সংবাদ এসেছে, তাতে সীমান্ত হত্যা বন্ধের ব্যাপারে কোনো আশার সঞ্চার করতে পারেনি। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মাসুদ আহমেদ তালুকদারসহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান বলেছেন, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে
তিনি বলেন, আমাদের বাঁচতে হবে। কথা বলার এবং গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে। এই জন্য সংগ্রামের কোনো বিকল্প নেই। বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব আমানউল্লাহ আমান ও ছাত্রদল সভাপতি রাজিব আহসানসহ সব নেতাকর্মীর মুক্তির দাবিতে ঢাকা জেলা ছাত্রদলের প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি বলেন, দলের সব নেতাকর্মী ও দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সকল মামলা প্রত্যাহারের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করা হবে। তিনি বলেন, আমান উল্লাহ আমানের মুক্তির দাবিতে অনুষ্ঠিত এ প্রতিবাদ সমাবেশে অনেক লোক আসতে চেয়েছিল। কিন্তু তাদের আসতে দেওয়া হয়নি। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সবকটি গেটে তালা দেওয়া হয়। এটাতো কোনো গণতন্ত্র নয়, গণতন্ত্রের চর্চাও নয়। গণতন্ত্রের জন্য দেশে স্বাধীন হয়েছে। গণতন্ত্রহীনতার জন্য দেশে আজ অস্তিত্বের শূন্যতা। ঢাকা জেলা ছাত্রদলের প্রতিবাদ সমাবেশে যোগ দিতে এসে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে ছাত্রদলের ১২ জন নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। আটকরা হলেন, রঞ্জিত সরকার, মোর্শেদ, বিপ্লব ঘোষ, হোসেন আলী, রাজন, আলমাস, খোকন, জসিম, ফিরোজ, জুলহাস, রংপুর জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি কামরুল হাসান শাহিন ও যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক এমজে সৌরভ।