কোরবানির ঈদ সামনে রেখে বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে গরু আসছে। কিছু কিছু স্থানে কড়াকড়ি থাকলেও বেশ কয়েকটি করিডর দিয়ে গত বছরের তুলনায় বেশি গরু এসেছে বলে জানা গেছে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের হিসাবে, সারা দেশে খামারি ও সাধারণ মানুষের কাছে কোরবানির যোগ্য ৪০ লাখ হৃষ্টপুষ্ট গরু ও মহিষ আছে। এক হিসাবে দেখা গেছে, এ বছর ৫০ লাখের মতো কোরবানি হতে পারে।
এদিকে রাজধানী ঢাকার গরুর হাট এবং কোরবানি নিয়ে সিটি করপোরেশন ও পুলিশ গতকাল মঙ্গলবার তাদের পরিকল্পনা জানিয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) জানিয়েছে, আগামী শনিবারের (১৯ সেপ্টেম্বর) আগে ঢাকায় গরু ঢুকতে দেওয়া হবে না। আর গরুর হাটগুলোকে তাদের চৌহদ্দির বাইরেও ছড়াতে দেওয়া হবে না।
প্রথম আলোর প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, প্রতিবেশী দেশ ভারত তাদের সীমান্তে গরু ‘পাচারে’র ব্যাপারে কড়াকড়ি আরোপ করলেও দেশের উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে গত বছরের তুলনায় এবার বেশি ভারতীয় গরু এসেছে। গরু আসছে পূর্বের মিয়ানমার সীমান্ত দিয়েও। তবে সাতক্ষীরা, যশোর ও চুয়াডাঙ্গা সীমান্ত দিয়ে গরু কম আসছে বলে জানা গেছে।
রাজশাহী কাস্টমস কমিশনারের কার্যালয়ের অধীনে ভারত থেকে গবাদিপশু আমদানির মোট আটটি করিডর রয়েছে। কমিশনারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত আগস্টে উত্তরাঞ্চলের সাতটি করিডর দিয়ে ৩৬ হাজার ৩০৭টি গবাদিপশু বাংলাদেশে ঢুকেছে। এর মধ্যে গরু ২৭ হাজার। গত বছর এ সময়ে গবাদিপশু আসার সংখ্যা ছিল ১৫ হাজার ৩০৩। সুলতানগঞ্জ করিডর দিয়ে সেপ্টেম্বরের প্রথম ১২ দিনে ৩ হাজার ৪০০ গরু-মহিষ ঢুকেছে।
রাজশাহীর সবচেয়ে বড় গবাদিপশুর হাট হচ্ছে নগরের সিটি বাইপাস হাট। এই হাটের ইজারাদার আতিকুর রহমান বলেন, গত মাসেও ভারতীয় গরুর বড় চালান এসেছে শুনেছেন কিন্তু তাঁরা সেই গরু-মহিষ পাননি। ঢাকা ও চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা সরাসরি সুলতানগঞ্জ ও কানসাট থেকে নিয়ে চলে গেছেন।
লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার ইসলামপুর শুল্ক করিডর দিয়ে গরু আসছে। কাস্টম সূত্রে জানা গেছে, গত আগস্ট থেকে ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৪ হাজার ৬০৭টি গরু আসে। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৩৫৫। কুড়িগ্রামের কাস্টম অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছরের জুলাই থেকে ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত গরু এসেছে প্রায় ৬০ হাজার। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ১৪ হাজার ৬৭৫।
কক্সবাজারে মিয়ানমার সীমান্ত দিয়ে আগস্ট থেকে গতকাল পর্যন্ত গরু এসেছে সাড়ে পাঁচ হাজারের বেশি। গত বছর এ সংখ্যা ছিল সাড়ে চার হাজারের কম।
বগুড়ায় এবার দেশি খামারিদের কাছ থেকে বেশি গরু পাওয়ার আশা করা হচ্ছে। জেলার অতিরিক্ত প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা খন্দকার বজলুর রহমান বলেন, এবারের কোরবানির বাজার সামনে রেখে জেলার ১ হাজার ২৬১টি খামার ও কৃষকের বাড়িতে মোট ৭৬ হাজার ৮২২টি পশু হৃষ্টপুষ্ট করা হয়েছে। তিনি বলেন, গত বছর জেলায় ১ লাখ ৩৫ হাজার গরু এবং ৮৯ হাজার ছাগল ও ভেড়া কোরবানি হয়েছিল। এ ছাড়া সিরাজগঞ্জ, পাবনা, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, গাজীপুর, মুন্সিগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কোরবানির হাটে গরু আসবে।