ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদির দায়িত্ব নেওয়ার ১০০ দিন পূর্ণ হলো আজ। বলা হচ্ছে, গত ইউপিএ সরকারের আমলে ভারতের পররাষ্ট্রনীতিতে যে স্থবিরতা দেখা দিয়েছিল তা ক্রমে কেটে গিয়ে নতুন গতিশীলতা সৃষ্টি হয়েছে। গতি এসেছে অর্থনীতিতেও।
ক্ষমতা গ্রহণের সময়েই নরেন্দ্র মোদি সার্কের প্রতিটি দেশের নেতাদের আমন্ত্রণ জানিয়ে ছিলেন। প্রতিটি দেশের নেতার সঙ্গে আলাদা বৈঠক করেছেন। অথচ সে সময় তিনি বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলোকে এড়িয়ে গেছেন। এমনকি কৌশলগত অংশীদার ইসরায়েল ও জাপানকেও এড়িয়ে গেছেন মোদি। প্রথম চালেই ভারতকে এশিয়ামুখী করেছেন তিনি। ভারতের সঙ্গে দোটানায় থাকা পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফও ভারতকে মোস্ট ফেভার্ড ন্যাশনের (এমএফএন) মর্যাদা দিয়েছেন। তবে পাকিস্তানি হাইকমিশনার জম্মু-কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতার সঙ্গে সাক্ষাতের জেরে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে আবারও অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়।
এদিকে সার্ককে শক্তিশালী করতে মোদি প্রথম সফরেই ভুটান, এরপরই নেপাল যান। পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ বাংলাদেশ সফর করেন। এ সবের ভেতর দিয়ে ভারতীয়দের সঙ্গে সহযোগিতামূলক চুক্তি, যৌথভাবে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন, ১৯৫০ সালের ভারত-নেপাল ফ্রেন্ডশিপ ট্রিটির নানা অসন্তোষ নিয়ে আলোচনা সম্ভব হয়েছে।
ব্রাজিলে ব্রিকস সম্মেলনে অংশ নেওয়ার মাধ্যমে মোদি সরকার বিদেশ নীতিতে বেশ বড়সড়ো পদক্ষেপ নিয়েছে। ভারতকে সভাপতি করে সাংহাইকে প্রধান কার্যালয় করে দ্য নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়েছে। এই ব্যাংক ভারতকে নিজের সফ্ট পাওয়ার উন্নয়নের পথ খুলে দিয়েছে। এদিকে ভারতে শিল্প স্থাপন ও বিশেষ অর্থনৈতিক জোন প্রতিষ্ঠায় বেইজিংয়ের বিনিয়োগ পেতে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছে ভারত। চীনও সাংহাই কোঅপারেশন অর্গনাইজেশনের (এসসিও) পরিপূর্ণ সদস্য করতে ভারতের আহ্বানে সাড়া দিয়েছে।
ইসলামিক স্টেটের বিদ্রোহীদের হাতে অপহৃত ভারতীয় নাগরিকদেরও দেশে ফিরিয়ে আনতে সফল হন মোদি। গাজা সংকটে ভারত তার কৌশলগত অংশীদার ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সংসদে আলোচনায় সম্মত না হলেও জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের বৈঠকে ঠিকই দেশটির বিরুদ্ধে ভোট দেয়।
পূর্বেকার প্রশাসনিক স্থবিরতাও আগের তুলনায় হ্রাস পেয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। শত দিনের মধ্যে মোদির সবচেয়ে বড় সফলতা হলো ভারতকে দেশের ভেতরে ও বাইরে সবখানে সবচেয়ে সম্ভাবনাময় দেশ হিসেবে তুলে ধরা। ডিএনএ ইন্ডিয়া।