ঢাকা, এপ্রিল ২৫, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ০৮:২৯:৫০

এ পাতার অন্যান্য সংবাদ

টেলিভিশন ও অনলাইন সাংবাদিকদের সুযোগ-সুবিধা প্রদানের দাবি বিএফইউজে’র পুনর্বাসন না করে বস্তিবাসীদের উচ্ছেদ করা হবে না: তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিস্ফোরণ: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫ প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারি হিসেবে ফের নিয়োগ পেলেন বিপ্লব বড়ুয়া সংসদ অধিবেশন উপলক্ষে সংসদ ভবন ও আশপাশের এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ আপিলে দ্বিতীয় দিনে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন ৫১ জন নির্বাচনে ২৯ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারি সেনাবাহিনী চায় ইসি : পিএসও আদালত আবমাননায় বিচারক সোহেল রানার সাজার বিরুদ্ধে আপিলের রায় ২৩ জানুয়ারি রাজধানীর ২১টি স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ-অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ৪ জন গ্রেফতার : ডিএমপি নির্বাচনে সেনা মোতায়েন হবে কিনা, জানালেন ইসি

বাঙালি নারীর আইএস থেকে মুক্তির আকুতি

| ১০ ভাদ্র ১৪২২ | Tuesday, August 25, 2015

সুখী বেগম ও তাঁর সন্তানেরা। ছবি: সংগৃহীত

কথিত জিহাদের নামে সিরিয়ার জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসে (ইসলামিক স্টেট) যোগ দেওয়া বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এক নারী বাঁচার জন্য করুণ আকুতি জানিয়েছেন। যুক্তরাজ্যের নাগরিক সুখী বেগম নামের এই নারী পাঁচ সন্তানসহ আইএসের কবল থেকে পালিয়েছেন। সন্তানদের নিরাপত্তার কথা ভেবে তিনি যুক্তরাজ্যে ফিরতে চান। গতকাল রোববার যুক্তরাজ্যের সানডে টাইমস পত্রিকা এ খবর জানায়।
খবরে বলা হয়েছে, সুখী বেগম দীর্ঘ ১০ মাস আইএস নিয়ন্ত্রিত সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় শহর আল-বাব-এ বসবাস করছিলেন। তাঁর দাবি, আইএস প্রকৃত অর্থে কোনো ইসলামি সংগঠন নয়।
সুখী বেগম পরিবার নিয়ে ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টারে বসবাস করতেন। তাঁর তিন মেয়ে ও দুই ছেলে। পরিবারটির নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে অবগত রয়েছে জানিয়ে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তুরস্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাঁরা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছেন। মোবাইলে ধারণ করা একটি ভিডিওচিত্রের বরাত দিয়ে সানডে টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, সুখী বেগম ‘ফ্রি সিরিয়ান আর্মির’ (এফএসএ) সদস্যের কাছে আকুতি জানাচ্ছেন, যাতে তাঁকে যুক্তরাজ্যে ফেরার বন্দোবস্ত করে দেওয়া হয়। এফএসএ সিরিয়ার আসাদ সরকার বিরোধী একটি বিদ্রোহী দল। তারা আইএসের মতাদর্শেরও বিরোধী।
সুখী বেগম দাবি করেন, তাঁর স্বামী মুফতা আলদ্বীন গত বছরের শুরুর দিকে আইএসে যোগ দেন। এর চার মাস পর স্বামীকে ফিরিয়ে আনতে তিনি সন্তানদের নিয়ে তুরস্ক হয়ে সিরিয়ায় যান। গত দশ মাস স্বামীর সঙ্গে আল-বাব শহরে বসবাসের সময় তিনি বিদেশি যোদ্ধাদের সন্তানদের ইংরেজি শেখাতেন। সম্প্রতি আল বাব শহরটি মার্কিন জোটের বিমান হামলার শিকার হলে তিনি চূড়ান্তভাবে আইএস ছেড়ে আসতে মনস্থির করেন। আইএস ত্যাগের বিষয়ে স্বামীকে রাজি করাতে না পেরে তিনি এমন একজনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন, যিনি আইএস থেকে সুখী বেগমকে পালাতে সাহায্য করেন। একদিন তাঁর স্বামী নিকটবর্তী আলেপ্পো শহরে যুদ্ধ করতে গেলে তিনি সন্তানদের নিয়ে এলাকা ছাড়েন। সুখী বেগম বলেন, একদিন ভোর পাঁচটায় সন্তানদের বোরকা পরিয়ে তিনি বাসা থেকে বের হন। বোরকা পরিহিত আরও দুই নারীসহ তাঁদের ওই লোক ট্যাক্সিতে করে তুরস্ক সীমান্তবর্তী আজাজ শহরে পৌঁছে দেন। সীমান্ত পাড়ি দিয়ে তুরস্কে প্রবেশ করতে সেখানে এফএসএ সদস্যদের সাহায্য কামনা করেন সুখী বেগম।

তবে সুখী বেগমের ওই ভিডিওটি কবে ধারণ করা হয় সে সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি। আবার সুখী বেগম সীমান্ত পাড়ি দিয়ে তুরস্কে পৌঁছেছেন কিনা তা নিয়েও রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য। সানডে টাইমের ওই খবরে দাবি করা হয়েছে, সীমান্তে কড়া নিরাপত্তার কারণে দীর্ঘ ১৭ দিন চেষ্টা করেও এফএসএ সদস্যরা সুখী বেগমকে তুরস্কে পৌঁছে দিতে পারেনি। অন্যদিকে আইএস বিরোধী তুরস্ক ভিত্তিক সংগঠন ‘আই অন দি হোমল্যান্ড’ এর এক কর্মী আহমেদ আব্দুল কাদের টেলিগ্রাফের কাছে দাবি করেছেন, তিনি নিজে সুখী বেগম ও তাঁর সন্তানদের সিরিয়া থেকে তুরস্কে আসতে সাহায্য করেছেন। সুখী বেগম তুরস্ককে নিজেকে নিরাপদ বোধ করছেন না। কারণ, আইসিসের গুপ্তচররা তাদের খুঁজে বের করে ফেলতে পারেন। এ জন্য তাঁরা দ্রুত যুক্তরাজ্যে ফিরতে চান।
যুক্তরাজ্যের সাত শতাধিক নাগরিক সিরিয়ায় গিয়ে আইএসে যোগ দিয়েছে বলে ধারণা করা হয়। এর মধ্যে কমপক্ষে ৭৫ জন নারী রয়েছেন বলে যুক্তরাজ্যের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো মনে করে। সিরিয়ায় পাড়ি দেওয়া যুক্তরাজ্যের নাগরিকদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূতও রয়েছেন। পোর্টসমাউথের পাঁচ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত তরুণ আইএসের পক্ষে লড়াই করতে গিয়ে ইতিমধ্যে সিরিয়ায় নিহত হয়েছেন বলে জানা যায়। সিরিয়ায় পাড়ি দেওয়া পূর্ব লন্ডনের বেথনাল গ্রিন একাডেমির চার ছাত্রীর তিনজনই বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত। এদের মধ্যে শারমিন আক্তার (১৫) গত ডিসেম্বরে সিরিয়ায় পাড়ি দেয়। আর শামীমা বেগম (১৫), খাদিজা সুলতানা (১৬) এবং আমিরা আবাসি (১৫) গত ফেব্রুয়ারি মাসে সিরিয়ায় পাড়ি জমায়। আমিরা আবাসি ছাড়া বাকি তিনজনই বাঙালি পরিবারের সন্তান। অতি সম্প্রতি ইংল্যান্ডের লুটনের একটি পরিবার বাংলাদেশে বেড়াতে গিয়ে আর যুক্তরাজ্যে ফিরে আসেনি। পরে জানা যায়, নারী-পুরুষ এবং শিশুসহ ওই পরিবারের মোট ১২ সদস্য বাংলাদেশ থেকে ফেরার পথে তুরস্ক হয়ে সিরিয়া গেছেন।