ঢাকা, এপ্রিল ২৫, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ২১:৩৩:৫১

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠার ৬৬ বছর

| ৯ আষাঢ় ১৪২২ | Tuesday, June 23, 2015

 বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৬৬তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী। দেশের সকল স্থানেই বিগত ৬৬ বছর যাবৎ আওয়ামী লীগ সুষ্ঠ ভাবে রাজনীতি করে আসছে। কিন্তু নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগ এখন দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে বিভিন্ন ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে এবং অন্যান্যদেরও ক্ষতি করছে।

অথচ এই নারায়ণগঞ্জেই বাংলাদেশের আওয়ামীলীগের প্রথম প্রতিষ্ঠা হয়েছিল।

বর্তমানে নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপের দ্বন্দের কারণে বন্ধ রয়েছে ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ। ক্ষমতাসীন দলের দু’গ্রুপের রাজনৈতিক দ্বন্দের মধ্যে প্রয়োজন হচ্ছেনা কোন বিরোধী দল। তারা নিজেদের রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের জন্য নারায়ণগঞ্জকে ধ্বংসের মুখে ধাবিত করতে দ্বিধা বোধ করছেনা। জনসাধারণের লাভের নামে নিজেদের লাভের চেষ্টায় আধিপত্ত বিস্তারের জন্য লিপ্ত হয়ে কঠোর ভোগান্তিতে ফেলছে সাধারণ জনগণকে বলে ধারণা জেলার গণ্যমান্য ব্যাক্তিদের।

তাদের অভিমত, দু’গ্রুপের নেতারা নিজেরাই দ্বন্দ সৃষ্টি করে জনসাধারণের মন জয় করতে গিয়ে নিজেদের মান-সম্মান হারাতে বসেছে। তাই বিরোধী দলের নেতারা তাদের এসকল কর্মকান্ড দেখে আনন্দে মাতোয়ারা। কারণ, নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগকে ধ্বংসের জন্য আওয়ামী লীগই যথেষ্ট।

নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব একেএম শামীম ওসমান ও সিটি কর্পোরেশন মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের বলিষ্ঠ নেতা। তারা দু’জনেই চাইছেন নিজেদের আধিপত্ত বিস্তার, পরে নারায়ণগঞ্জের উন্নয়ন। তাই বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে একে অপরকে অপরাধী বলে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চাইছেন তারা। ক্ষমতার জন্য একজন আরেকজনকে কুকুর ও প্রতিবন্ধী বলে আখ্যা করে বেড়াচ্ছে। ফলে নারায়ণগঞ্জবাসীর কাছে তারা দু’জনেই কুকুর ও প্রতিবন্ধীর খেতাব পেয়ে সম্মান হারাতে বসেছেন।

তাদের এ দ্বন্দ না থাকলে হয়তো নারায়ণগঞ্জে সিটি কর্পোরেশন ও সংসদ সদস্যদের দ্বারা ব্যাপক উন্নয়নের জোয়ারে এতো দিনে বাংলাদেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ শহর হিসেবে পরিণত হতো। তাদের এ দ্বন্দ কবে বন্ধ হবে এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে নারায়ণগঞ্জের সাধারণ জনগণের মনে।

এ ব্যাপারে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. খোকন সাহা লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগ কখনোই দুই ভাগে বিভক্ত হয়নি এবং হবেও না। আর নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র কখনোই আওয়ামী লীগের কর্মী বা সমর্থক ছিলনা। তিনি বিএনপি ও জামায়াত শিবিরের নেত্রী, জামায়াত শিবিরের অর্থ যোগানদাতা। তিনি যদি আওয়ামী লীগ করতেন তবে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগকে কুকুর বলতেন না এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে কটুক্তি করতেন না।

জেলা যুবলীগের সভাপতি মো. আব্দুল কাদের লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, নারায়ণগঞ্জে একটি পরিবার (ওসমান পরিবার) চাচ্ছেনা আওয়ামী লীগের নতুন নেতৃত্ব। তারা বিভিন্ন নেতাকর্মীদের মামলা হামলায় জড়িয়ে সরিয়ে রেখেছে। যেন সেই পরিবারের লোকেরাই নারায়ণগঞ্জে রাজত্ব করতে পারে। আর নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের কেউ যদি দুর্নীতি করে থাকে তবে, এর জন্য আইন রয়েছে, তারাই এর বিচার করবে। দ্ ুপরিবারের কর্মকান্ডে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি হচ্ছে। তাই এর সমাধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই করবে। এসকল সমস্যার ব্যাপারে তিনি অবগত আছেন।

জেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ্ নিজাম লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, সিটি মেয়র আইভীর বাবা, ভাই ও আতœীয় স্বজনের কেউ যদি আওয়ামী লীগের সদস্য হয়েও থাকে তাই বলে মেয়র আইভীকে আওয়ামী লীগের নেত্রী হিসেবে মানা যাবেনা। কারণ, তিনি আওয়ামী লীগের কোন সদস্য না। তাই তিনি আওয়ামী লীগের কেউ না। অনেকে আছে আওয়ামী লীগের স্লোগান দেয়। এতে আমরা তাকে আওয়ামী লীগের কর্মী হিসেবে মেনে নিতে পারবো না। আর নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব একেএম শামীম ওসমান আওয়ামী লীগ সরকার মনোনীত প্রার্থী হিসেবে সাংসদ হয়েছেন। তাই তার নেতৃত্বেই নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগ চলছে। তবে ক্ষমতায় থাকার জন্য অনেকেই বিভিন্ন ভাবে যুদ্ধ করে থাকে। আর সেই যুদ্ধে আলহাজ্ব একেএম শামীম ওসমান এর উন্নয়ন কাজ বাঁধাগ্রস্থ হচ্ছে। একজন সংসদ সদস্য সিটি কর্পোরেশনের আওতায় কোন প্রকল্পের কাজ করতে চাইলে মেয়রের যে সহযোগীতা প্রয়োজন তা পাওয়া যাচ্ছেনা।

বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগ দুই ভাগে বিভক্ত হওয়ায় আওয়ামী লীগেরই বড় ধরনের ক্ষতি হচ্ছে বলে মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলী রেজা উজ্জল লাইভ নারায়ণগঞ্জকে জানান। কিন্তু এ ক্ষতি থেকে উত্তোলনের উপায় কি, জানতে চাইলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের নেতা জিএম আরাফাত লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, মূলত নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব একেএম শামীম ওসমান ও সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর সাথে সিটি নির্বাচন নিয়ে দ্বন্দ সৃষ্টি হয়েছিল। এটি তাদের ব্যাক্তিগত দ্বন্দ। আর তাদের এ ব্যাক্তিগত দ্বন্দ এখন দলের উপরে প্রভাব পরছে। এ কারণে অনেক নেতাকর্মীদের মনে কষ্ট। কারণ, অনেক নেতাকর্মী মিলেই এ দলটিকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। সেই দলকে তারা ব্যাক্তিগত দ্বন্দ দিয়ে বিভক্ত করেছে। দ্বন্দ থেকে বের হবার উপায় খোঁজতে হবে। যেন আগামী দিনের আওয়ামী লীগ আরো বলিষ্ঠ হিসেবে গড়ে উঠতে পারে।