ঢাকা, এপ্রিল ১৯, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ০৮:০৯:২১

এ পাতার অন্যান্য সংবাদ

টেলিভিশন ও অনলাইন সাংবাদিকদের সুযোগ-সুবিধা প্রদানের দাবি বিএফইউজে’র পুনর্বাসন না করে বস্তিবাসীদের উচ্ছেদ করা হবে না: তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিস্ফোরণ: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫ প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারি হিসেবে ফের নিয়োগ পেলেন বিপ্লব বড়ুয়া সংসদ অধিবেশন উপলক্ষে সংসদ ভবন ও আশপাশের এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ আপিলে দ্বিতীয় দিনে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন ৫১ জন নির্বাচনে ২৯ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারি সেনাবাহিনী চায় ইসি : পিএসও আদালত আবমাননায় বিচারক সোহেল রানার সাজার বিরুদ্ধে আপিলের রায় ২৩ জানুয়ারি রাজধানীর ২১টি স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ-অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ৪ জন গ্রেফতার : ডিএমপি নির্বাচনে সেনা মোতায়েন হবে কিনা, জানালেন ইসি

বরগুনায় আবারও হিন্দু পরিবারে হামলা, লুটপাট গ্রেপ্তার ৫

| ২৯ চৈত্র ১৪২১ | Sunday, April 12, 2015

বরগুনার আমতলী উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের উত্তর টেপুরা গ্রামে আবারও নির্যাতনের শিকার হয়েছে একাধিক সনাতন ধর্মালম্বী পরিবার। গতকাল শুক্রবার  ও আজ শনিবার দুই দিনে স্থানীয় সন্ত্রাসীরা কয়েক দফা হামলা চালায় নিরীহ এসব পরিবারের ওপর। এ সময় তারা বাড়িঘর ও মন্দিরে ভাঙচুর ও লুটপাট করে। এ ছাড়া গভীর রাতে কুপিয়ে নষ্ট করে চার একর ক্ষেতের কয়েক হাজার তরমুজ। খবর পেয়ে আজ শনিবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান বরগুনার জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এ ঘটনায় অভিযুক্ত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য শংকর ব্যাপারী জানান, দীর্ঘদিন ধরে বহু শ্রম সাধনার মধ্য দিয়ে তিনি তিল তিল করে বড় করেছেন তাঁর তরমুজ ক্ষেত। গভীর রাতে তাঁর সর্বস্ব শেষ করে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। তিনি আরও জানান, শুক্রবার গভীর রাতে তাঁকে ধরতে এসে না পেয়ে তাঁদের বাড়ি-ঘরে হামলা চালিয়ে স্বর্ণালংকারসহ অর্থ লুট করে সন্ত্রাসীরা। এ সময় ভাঙচুর করা হয় তাঁদের রাধা গোবিন্দ মন্দিরও। ভুক্তভোগী পরিবারের অপর এক সদস্য স্বপন ব্যাপারী বলেন, এ ঘটনায় এখন ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছেন নারী ও শিশুসহ তাঁদের পরিবারের সদস্যরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উত্তর টেপুরা গ্রামের সালাম মৃধা (৫০), তার ছেলে রিয়াজ মৃধা (২২) এবং তার সহযোগীরা দীর্ঘদিন ধরে এসব হিন্দু পরিবারগুলোকে নীরবে নির্যাতন করে আসছিলেন। গতকাল শুক্রবার বিকেলে বাড়ির পাশের একটি মাঠে গরু আনতে গেলে শংকর বেপারীকে ধাওয়া করেন  রিয়াজ মৃধা ও তার সহযোগীরা। এ সময় শংকর বেপারী দৌড়ে রাধা-গোবিন্দ মন্দিরের ভেতর আশ্রয় নেন। এ সময় শংকর বেপারীর স্বজনরা তাঁকে রক্ষা  করতে এগিয়ে গেলে মন্দিরের ভেতরে সবাইকে অবরুদ্ধ করে রাখে হামলাকারীরা।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও গ্রাম পুলিশ পাঠিয়ে সালিশি বৈঠকে বসার নির্দেশ দেন সংশ্লিষ্ট হলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. শহিদুল ইসলাম। এ সময় ইউপি সদস্য, গ্রাম পুলিশ এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সহযোগিতায় অবরুদ্ধ হিন্দু পরিবারের সদস্যদের উদ্ধার করা হয়। পরে গভীর রাতে পুনরায় রিয়াজ মৃধা ওইসব পরিবারে হামলা চালায়। এ সময় শংকর বেপারীর চার একর ক্ষেতের প্রায় সাত হাজার তরমুজ কুপিয়ে নষ্ট করে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক স্থানীয় অধিবাসী জানান, সালাম মৃধার ছেলে রিয়াজ মৃধা দীর্ঘদিন ধরে এ ধরনের অপরাধ সংঘটিত করে আসছে। স্থানীয়ভাবে সালিশি বৈঠকে এর আগেও বিভিন্ন অপরাধের কারণে তার একাধিকবার জরিমানাও হয়েছে। তার পিতা সালাম মৃধার কাছে এসব বিষয়ে অভিযোগ করেও তাঁরা কোন প্রতিকার পাননি।

আজ শনিবার সকালে বরগুনার জেলা প্রশাসক মীর জহুরুল ইসলাম ও পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলামসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা  ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। বরগুনার পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম জানান, ঘটনার পেছনের মূল হোতা আ. সালাম মাস্টারসহ (৫২) মোট পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সালাম মাস্টারের ছেলে রিয়াজ মৃধাকে গ্র্রেপ্তারের জন্য পুলিশ সচেষ্ট রয়েছে। এ ছাড়া নির্যাতিত পরিবারগুলোর নিরাপত্তায় কড়া নজরদারি রাখা হয়েছে বলেও তিনি জানান।

জেলা প্রশাসক মীর জহুরুল ইসলাম বলেন, তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। হামলার ঘটনার সত্যতা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তরমুজ ক্ষেত নষ্ট করা হয়েছে, টিনের চালার মন্দিরেও কয়েকটি কোপের চিহ্ন দেখা গেছে। তিনি বলেন, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও স্থানীয় গ্রামবাসীর সহযোগিতায় ক্ষতিগ্রস্ত মন্দির ইতিমধ্যেই সংস্কার করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতায় সম্ভব সকল প্রকার সহযোগিতা অব্যাহত রাখা হবে বলে তিনি জানান।