ঢাকা, এপ্রিল ২৪, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ১০:১৫:৪৯

এ পাতার অন্যান্য সংবাদ

পূর্ব লেবাননে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল জিম্মি চুক্তিতে হামাসকে রাজি করাতে মিসর ও কাতারের দ্বারস্থ বাইডেন দক্ষিণ চীন সাগরে সামরিক মহড়া চীনের গাজা যুদ্ধে নিহতের সংখ্যা ৩০ হাজার ছাড়িয়েছে রমজানে মুসলমানদের আল আকসায় নামাজ পড়ার অনুমতি দিতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ গাজায় তুমুল যুদ্ধ ॥ চলছে যুদ্ধবিরতির বৈঠক জর্ডানে মার্কিন সৈন্য হত্যা ॥ দায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনার অঙ্গীকার যুক্তরাষ্ট্রের গাজা যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্তদের সাথে জাতিসংঘ দূতদের সাক্ষাত জি৭ নেতাদের ভিডিও শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী না হলে বাইডেন ও অনিশ্চিত

ফেসবুকে নিষিদ্ধ রোহিঙ্গা বিদ্রোহীরা

| ৫ আশ্বিন ১৪২৪ | Wednesday, September 20, 2017

রোহিঙ্গাদের ওপর ‘জাতিগত নিধন’ চালানোর অভিযোগে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যখন সারা বিশ্ব সোচ্চার, ঠিক তখন ‘বিপজ্জনক সংগঠন’ আখ্যা দিয়ে বিদ্রোহীদের সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মিকে (আরসা) নিষিদ্ধ করেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক।

একই সঙ্গে বিদ্রোহীদের সম্পর্কে ‘প্রশংসাসূচক’ যেকোনো বিষয়বস্তু মুছে ফেলারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

জাকারবার্গের কোম্পানি অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নের ভিত্তিতেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান। এর আগে কিছু অ্যাক্টিভিস্ট অভিযোগ করছিলেন, রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বর্বর নির্যাতনের তুলে ধরে দেওয়া পোস্ট ফেসবুক কর্তৃপক্ষ সেন্সর করছে। এর কিছু পরেই এ ধরনের সিদ্ধান্তের কথা জানাল ফেসবুক কর্তৃপক্ষ।

ফেসবুকের মুখপাত্র নিশ্চিত করেছেন, সাম্প্রতিক সময়ে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মিকে ফেসবুক ‘বিপজ্জনক সংগঠন’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। যেসব সংগঠন সন্ত্রাসের সঙ্গে যুক্ত, গণহত্যা, সহিংসতা, অপরাধ সংগঠিত করে কিংবা মানুষের মধ্যে ঘৃণা ছড়ায়; এবং তাদের যারা সমর্থন করে, ফেসবুক কর্তৃপক্ষ সেসব পোস্ট নিষিদ্ধ করে।

এই সহিংসতার পেছনে আরসা ছাড়া আরো কোনো পক্ষ কি রয়েছে, যাদের কারণে চার লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাস্তুচ্যুত হয়ে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে? যদি থাকে, তাহলে সেই গোষ্ঠীর কতগুলো পোস্ট বা অ্যাকাউন্ট মুছে দেওয়া হয়েছে? এমন সব প্রশ্নের কোনো উত্তর দিতে অস্বীকার করেন ফেসবুক মুখপাত্র।

এরই মধ্যে জাতিসংঘ বলেছে, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রাখাইন রাজ্যে যে ‘গণহত্যা’ চালাচ্ছে, তা ‘জাতিগত নিধনের ধ্রুপদি উদাহারণ’। সেই সেনাবাহিনীর একটি ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ রয়েছে, যার ফলোয়ার সংখ্যা ২৬ লাখ। মিয়ানমার সরকারে এমন আরো অনেক ফেসবুক পেজ আছে, যেখান থেকে দেশটির পরামর্শক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী অং সান সু চি নিয়মিতভাবেই রোহিঙ্গাবিরোধী পোস্ট দিচ্ছেন।

মিয়ানমার সরকারের দাবি, গত ২৫ আগস্ট রোহিঙ্গা বিদ্রোহীরা রাখাইন রাজ্যে দুই ডজনের বেশি পুলিশ ও সেনাক্যাম্পে হামলা চালায়। এ সময় ১২ নিরাপত্তাকর্মী নিহত হন। এর পরই আরসাকে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ঘোষণা করে মিয়ানমার সরকার।

ফেসবুক কর্তৃপক্ষ বলছে, মিয়ানমার সরকারের কোনো ধরনের অনুরোধে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। এ সিদ্ধান্ত কেবল সহিংসতামূলক কর্মকাণ্ডের কথা বিবেচনা করেই নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নেই।

ফেসবুক যদিও বলছে, এর সঙ্গে কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নেই, তবে ফেসবুকের এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন নোবেল বিজয়ী অং সান সু চির মুখপাত্র জা হতয়। তিনি গত ২৬ আগস্ট তাঁর নিজের ফেসবুক পেজে আরসা-সমর্থনসূচক যেকোনো পোস্ট নিয়ে রিপোর্ট করার জন্য অনুসারীদের প্রতি আহ্বান জানান। পোস্টটি সাত হাজারবার শেয়ার হয়।

গত অক্টোবরে প্রায় ১১ লাখ নির্যাতিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মুক্তির জন্য মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রকাশ্য যুদ্ধের ঘোষণা দেয় আরসা। রোহিঙ্গারা রাখাইনে উগ্র বৌদ্ধ জাতীয়তাবাদীদের নির্যাতনের শিকার, তাদের কোনো নাগরিকত্ব নেই, সরকার তাদের বাইরে থেকে আসা জনগোষ্ঠী হিসেবে দেখে। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দেশহীন জনগোষ্ঠী এই রোহিঙ্গারা।

আরসা সেনাবাহিনীর নির্যাতনের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলাকে ‘আত্মরক্ষার বৈধ পদক্ষেপ’ হিসেবে দেখে। কিন্তু এরপরই বিদ্রোহীদের ধরার নামে মিয়ানমার সরকার ‘জাতিগত নিধন’ শুরু করে, যার পরিপ্রেক্ষিতে শরণার্থী সংকটের শুরু হয়। রাখাইন থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীরাও অভিযোগ করেছেন, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী নির্বিচারে পুরুষদের হত্যা করছে, নারীদের ধর্ষণ করছে। গ্রামের পর গ্রাম আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিচ্ছে।