বগুড়া: মেয়ের প্রেমিক অন্য ধর্মের হওয়ায় তাদের প্রেম মেনে নিতে পারেনি বাবা। তাই হাত পা কেটে প্রেমিক কলেজছাত্রকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। প্রেমিকা ও তার বাবাকে গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিকভাবে এমন ধারনা করছে পুলিশ।
রোববার গভীর রাতে বগুড়ার শেরপুর উপজেলা থেকে মেয়ে মারুফা আকতার (২০) ও তার বাবা আবু বক্কর সিদ্দিককে (৪৮) গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
মারুফা বগুড়া সরকারি আজিজুল হক বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ও ও তার বাবা আবু বক্কর সিদ্দিক শেরপুর উপজেলার কাশিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
মারুফার প্রেমিকের নাম সঞ্জিত কুমার (২৪)। তিনি নাটোরের সিংড়া উপজেলার নিশ্চিন্তপুর গ্রামের সুভাষ চন্দ্রের ছেলে ও বগুড়া সরকারি আজিজুল হক বিশ্ববিদ্যালয়ে কলেজে মনোবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র। বগুড়া শহরের কামারগাড়ি এলাকার একটি ছাত্রাবাসে থেকে তিনি পড়ালেখা করতেন।
গত ৯ আগস্ট সকালে বগুড়া রেল স্টেশনের অদূরে পালশা এলাকায় রেল লাইনের পাশে হাত-পা কাটা এবং মাথা থেতলানো অবস্থায় পুলিশ সঞ্জিতের লাশ উদ্ধার করে।
পুলিশ জানায়, রেল লাইনে ট্রেনে কেটে মারা যাওয়ার মতো কোনো আলামত না থাকায় সঞ্জিতের মৃত্যু নিয়ে পুলিশের সন্দেহ হয়। এ কারণে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে একই কলেজের মারুফা নামের এক ছাত্রীর সঙ্গে সঞ্জিতের প্রেমের সর্ম্পক ছিল।
সঞ্জিতের সহপাঠিরা পুলিশকে জানায়, ৮ আগস্ট বিকেল পর্যন্ত সঞ্জিত এবং মারুফা কলেজ ক্যাম্পাসে ঘোরাফেরা করেছে। এরপর রাতে সঞ্জিত ছাত্রাবাসে ফিরে আসেনি।
লাশ উদ্ধারের পরই নিহতের বাবা সুভাষ চন্দ্র বাদী হয়ে মারুফা এবং তার বাবা আবু বক্কর সিদ্দিককে আসামি করে রেলওয়ে বোনারপাড়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার পর রোববার রাতে শেরপুর শহরের কলেজ রোডে এক আত্মীয়ের বাড়িতে আত্মগোপন করে থাকা নিহতের প্রেমিকা মারুফা আকতার ও কাশিপাড়া গ্রাম থেকে তার বাবা আবু বক্কর সিদ্দিককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বগুড়া রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) হারুনার রশিদ জানান, গ্রেপ্তারকৃত বাবা ও মেয়েকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের রিমান্ডে নেয়া হবে।
এসআই হারুন আরো জানান, প্রাথমিক ভাবে জানা গেছে মুসলামান ও হিন্দু হওয়ায় মারুফা ও সঞ্জিতের প্রেমের সম্পর্ক মেনে নিতে পারেনি মারুফার বাবা।