ঢাকা, এপ্রিল ১৮, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ১৮:১২:৩৯

পোকামাকড়ের কামড় ও হুল ফোটানো : কী করবেন?

| ২২ ভাদ্র ১৪২৪ | Wednesday, September 6, 2017

কামড়ের পর জ্বর হলে, গ্রন্থি ফুলে গেলে চিকিৎসকের কাছে যান। ছবি : সংগৃহীত

অধিকাংশ পোকামাকড়ের কামড় ও হুল বিপজ্জনক নয়। কয়েক ঘণ্টা বা কয়েক দিনের মধ্যে ভালো হয়ে যায়। কিন্তু কখনো কখনো এসব কামড় বা হুল ফোঁটা সংক্রমিত হতে পারে, মারাত্মক অ্যালার্জিজনিত প্রতিক্রিয়া ঘটাতে পারে। অথবা মারাত্মক অসুস্থতা ছড়াতে পারে। যেমন  : লাইম ডিজিস, ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া। সাধারণত যেসব পোকামাকড় কামড়ায় বা হুল ফোঁটায়, এদের মধ্যে রয়েছে মৌমাছি, বোলতা, ভিমরুল, ডাঁশমশা, মাছি, মশা, ছারপোকা, মাকড়সা ইত্যাদি।

সাধারণ উপসর্গ
• কামড়ের পরপরই তীব্র ব্যথা হওয়া
• কামড়ের স্থানে লাল হওয়া ও ফুলে যাওয়া
• কামড়ের স্থানে ছোট ছোট সাদা ফোস্কা পড়া
• ফুলে যাওয়া ও ব্যথা হওয়া
• র‍্যাশ ওঠা
• দুর্বল অনুভব করা
• প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যাওয়া
• কখনো কখনো মারাত্মক অ্যালার্জিজনিত প্রতিক্রিয়া হতে পারে
• এ ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্ট হয়, মাথা ঝিমঝিম করে এবং মুখ ফুলে যায়। এসব ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক চিকিৎসার প্রয়োজন হয়।

প্রাথমিকভাবে করণীয়
• হুল ও লেগে থাকা বিষগুলো খুব ধীরে অপসারণ করতে হবে। আপনার আঙুলের নখ কিংবা ছুরি দিয়ে হুল চেঁছে ফেলবেন।
• বিষের হুলে চাপ দেবেন না। কারণ, চাপ লাগলে বিষ রক্তে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
• হুল ফোঁটা জায়গাটি সাবানপানি দিয়ে ধুয়ে ফেলবেন। এতে বিষ অপসারিত হতে সাহায্য হবে।
• পোকার কামড়ে সামান্য ফোলা, চুলকানি, মৃদু ব্যথা হলে স্থানটিতে বরফ প্রয়োগ করুন।
• মৃদু ব্যথার জন্য ডিসড্রিন খাওয়া যেতে পারে এবং চুলকানি উপশমের জন্য ক্যালামিন লোশন ব্যবহার করবেন। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে।

কী করবেন না
• কামড়ানো স্থানটি চুলকাবেন না। এতে সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। ভিনেগার ও সোডা ব্যবহার করবেন না।
• কোনো ধরনের তেল মালিশ করবেন না।

কখন ডাক্তার দেখাবেন 
• কামড় ও হুলের ব্যাপারে ভীত থাকলে।
• দু-একদিনের মধ্যে অবস্থার উন্নতি না হলে কিংবা অবস্থা খারাপের দিকে গেলে।
• মুখের মধ্যে কিংবা গলায় কামড় লাগলে অথবা চোখের কাছে কামড় লাগলে।
• কামড়ের স্থানটি প্রায় ১০ সেন্টিমিটার বা তার বেশি জুড়ে লাল হলে এবং ফুলে গেলে।
• কামড়ের স্থানে ইনফেকশন হলে। অর্থাৎ পুঁজ হলে, তীব্র ব্যথা হলে, ফুলে গেলে বা লাল হলে।
• জ্বর হলে, গ্রন্থি ফুলে গেলে বা সর্দি-কাশি হলে।

কখন রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাবেন
• রোগী হাঁচি হলে ও শ্বাস নিতে কষ্ট হলে
• চোখ, মুখ ও গলা ফুলে গেলে
• বমি বমি ভাব কিংবা বমি হলে
• নাড়ির গতি বেড়ে গেলে
• মাথা ঝিমঝিম করলে বা মূর্ছা যাওয়ার অনুভূতি হলে
• ঢোক গিলতে কষ্ট হলে
• রোগী অজ্ঞান হয়ে গেলে

লেখক : ডা. মিজানুর রহমান কল্লোল সহকারী অধ্যাপক, ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল।